দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নিউ ইয়র্ক টাইমস বলেছে, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা জাতি-গোষ্ঠীর সকল প্রকার নিদর্শন, চিহ্ন, ইতিহাস এবং ঐতিহ্য মুছে ফেলার চেষ্টা চালাচ্ছে।
শনিবার প্রকাশিত নিউ ইয়র্ক টাইমস- এর প্রতিবেদনটিতে ১৯৯০ সালে মিয়ানমারের সংসদ নির্বাচনে একটি আসন হতে নির্বাচন করে বিজয়ী হওয়া একজন রোহিঙ্গা নেতার সাক্ষাৎকার তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কেউ মিন নামে ওই ব্যক্তি কলেজে রোহিঙ্গাদের এক ছাত্রসংগঠনের সদস্য ছিলেন। তিনি সরকারি স্কুলে পড়ালেখাও করেছেন। এমনকি ১৯৯০ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে একটি সংসদীয় আসন হতে নির্বাচন করে জয়ী হন। তবে মিয়ানমার সরকারের তথ্য মতে, এখন কেউ মিনের কোনো রোহিঙ্গা সঙ্গী বাকি নেই।
মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইনে দীর্ঘদিন ধরে সংখ্যালঘু মুসিলমদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। তারা এখন প্রতিবেশী বাংলাদেশের জন্যও সমস্যা। আজ তারা রাষ্ট্রহীন মানুষ। মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ট বৌদ্ধরা তাদের পরিচয়কে অস্বীকার করে আসছে।
রাখাইনে মিয়ানমার সরকারের নিরাপত্তা কর্মকর্তা ইউ কেউ সান হালা বলেছেন, এখানে রোহিঙ্গাদের কোনো কিছুই নেই। তবে তার এই বক্তব্যকে ভুয়া সংবাদ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
মিয়ানমারে ৭২ বছর ধরে বসবাসকারী কেউ মিন বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে মিয়ানমার এমনভাবে অস্বীকার করায় আমরা সত্যিই হতভম্ব। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের সকল ইতিহাস সেনাবাহিনীর মাধ্যমে নির্মূলের বিপদজনক চেষ্টা করা হচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচও এই্বি ষয়ে সতর্ক করেছে আগেই।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, রাখাইনে মিয়ানমার বাহিনীর গণহত্যা, ধর্ষণ এবং অগ্নিসংযোগের শিকার হয়ে ২০১৬ সাল হতে মিয়ানমারে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের দুই-তৃতীয়াংশ গত আগস্ট হতে বাংলাদেশে পালিয়ে যায়। যাদের সংখ্যা ৬ লাখ ২০ হাজারের মতো।
মিয়ানমারের বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়ংগনে বসবাসবারী কেউ মিন এই প্রতিবেদককে আরও বলেন যে, আমাদের দেশে রোহিঙ্গা শেষ হয়ে গেছে। খুব শীঘ্রই আমরা সবাই মরে যাবো, নয়তো চলে যাবো।
জাতিসংঘের এক রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মিয়ানমার বাহিনীর টার্গেট ছিল সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের মধ্যে শিক্ষক, সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় নেতা, যারা রোহিঙ্গা সংস্কৃতিকে বহন করে তাদেরকে একেবারে শেষ করে দেওয়া।