দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মুসলিম আইন নিয়ে আগেকার আমলে তিন তালাকের একটি রীতি প্রচলন ছিলো। কিন্তু দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে সেই নিয়ম এখন সেকেলে। এখন উল্টো তিন ‘তালাক’ বললেই সেই স্বামীর তিন বছরের জেল হবে বলে আইন প্রণীত হতে চলেছে!
মুসলিম আইন নিয়ে আগেকার আমলে তিন তালাকের একটি রীতি প্রচলন ছিলো। তখন হুজুররা ফতোয়া দিতেন যে, স্বামী তার স্ত্রীকে একবার দুইবার করে তিন বার অর্থাৎ তিন তালাক উচ্চারণ করলেই তালাক হয়ে যায়। কিন্তু দিন পাল্টেছে। মান্দাত্যা আমলের সেইসব রীতি এখন অচল। এখন আইনগতভাবে যে তালাক হবে সেটিই সিদ্ধ। তবে এবার আরও কঠোরভাবে এই তিন তালাকের বিরুদ্ধে আইন প্রণীত হতে চলেছে। এখন উল্টো তিন ‘তালাক’ বললেই সেই স্বামীর তিন বছরের জেল হবে!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা গেছে, তিন তালাকের মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদের চেষ্টার জন্য স্বামীকে তিন বছরের সাজার প্রস্তাব করে ভারতে একটি নতুন আইনের খসড়া ইতিমধ্যেই তৈরি করা হয়েছে। বিবিসি এই খবর দিয়েছে।
মতামতের জন্য ‘মুসলিম উইমেন প্রটেকশন অব রাইটস অন ম্যারেজ বিল’ নামে এই বিলটি বর্তমানে আঞ্চলিক সরকারগুলোর কাছে পাঠানো হচ্ছে বলে সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়।
মুসলিমদের তাৎক্ষণিক তালাকের এই প্রথায় রয়েছে স্বামী স্বশরীরে মুখে তিনবার ‘তালাক’ শব্দটি উচ্চারণ করে বা ইমেল কিংবা টেক্সট মেসেজে লিখে পাঠিয়েও স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে ফেলতে পারে।
বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গত আগস্টে তিন তালাকপ্রথাকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। তবে কর্মকর্তারা বলছেন, তা সত্ত্বেও ‘তিন’ তালাক’ এখনও বন্ধ হয়নি।
সে কারণে ভারতে বর্তমানে এমন এক আইনের প্রস্তাব করা হচ্ছে, যাতে করে তিন তালাকের জন্য স্বামীর তিন বছরের সাজা, জরিমানা ও এই কারণে ক্ষতিগ্রস্ত স্ত্রীর জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থাও থাকবে।
নতুন ওই আইনে সুস্পষ্টভাবে তিন তালাক নিষিদ্ধ করার বিধানও থাকবে। তাছাড়া স্ত্রীর ভরণপোষণ এবং সন্তানদের লালনপালনের দায়িত্বের বিষয়েও সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকবে ওই আইনে।
স্বামী যদি কখনও স্ত্রীকে ঘর ছেড়ে চলে যেতে বলেন, তখন যেনো স্ত্রীর আইনি সুরক্ষা থাকে, সেই জন্য এসব বিধান রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির এক কর্মকর্তা। যে খসড়া আইনটি তৈরি করা হয়েছে, তাতে স্বামীর জামিনের কোনো বিধানই রাখা হয়নি।
ভারতীয় পার্লামেন্টের আগামী শীতকালীন অধিবেশনে এই বিলটি পর্যালোচনা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই মাসের মাঝামাঝিতে শীতকালীন অধিবেশন শুরু হবে।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে ৫ জন মুসলিম মহিলা তিন তালাকপ্রথাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন আদালতে। তাদের মামলাতেই ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাক প্রথাকে অবৈধ বলে রায় দেন।