দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মাছের এতো বুদ্ধি থাকতে পারে? সেকথা বিজ্ঞানীরাও জানতেন না। তাই মাছের বুদ্ধিমত্তা দেখে অবাক হলেন বিজ্ঞানীরা! মাছের আচরণ বিজ্ঞানীদের নতুন আশার আলো দেখিয়েছে।
আমরা সকলেই জানি সংঘবদ্ধ কাজে সফলতা আসবেই। এটি মানবসমাজে যেমন সত্য, ঠিক প্রকৃতিতেও মিথ্যে নয়। এমনটিই প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষ প্রজাতি মাছের ঐক্য এবং বুদ্ধিমত্তা বিজ্ঞানীদের অবাক করে দিয়েছে। তাদের আচরণ বিজ্ঞানীদের নতুন আশার আলো দেখিয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, জার্মানির গবেষক ড. ইয়ান কুজিন বড় একটি পুল তৈরি করেন। তারমধ্যে স্টিকলব্যাক মাছের বহু চারাপোনা কিলবিল করছে। পুলের কিছু অংশে আলো রয়েছে, আবার কিছু অংশে ছায়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাছেরা রোদের তাপ এড়িয়ে যতোটা সম্ভব ছায়ার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। এই প্রজাতির মাছের জন্য এমন আচরণই নাকি অত্যাবশ্যক। কারণ হলো রোদের আলোতে তাদের ত্বক জ্বলজ্বল করে। শত্রুরা তাদের খুব সহজেই শনাক্ত করতে পারে। গবেষক ড. ইয়ান কুজিন যখন একটিমাত্র মাছ পানিতে ছেড়ে দেন, তখন সেটি ছায়া খুঁজে পায় না। সম্ভবত শুধু ঝাঁকের মধ্যেই তাদের এই ক্ষমতা প্রকাশ পায়। তিনি বলেছেন, ঝাঁক হিসেবে তারা যে সম্মিলিত বুদ্ধিমত্তা দেখিয়ে থাকে, তা সত্যিই বিস্ময়কর। এককভাবে কোনো সমস্যা সমাধান করতে না পারলেও গোষ্ঠীবদ্ধভাবে প্রায়ই তা সম্ভব।
এই সম্মিলিত বুদ্ধিমত্তা কীভাবে সম্ভব? ঝাঁকের মধ্যে মাছেরা কীভাবে এমন ক্ষমতা আয়ত্ত করেছে, এককভাবে যা সম্ভব নয়? গবেষকরা বহুকাল ধরে এই প্রশ্নের জবাব খুঁজছেন এবং মাছদের পর্যবেক্ষণ করছেন। তারা প্রাচীন এক রুশ বইয়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিতও নাকি খুঁজে পেয়েছেন। বিজ্ঞানী দিমিত্রি রাডাকভ বুঝতে পেরেছেন, মাছের এক এক গোষ্ঠীর নিজস্ব চরিত্র গড়ে ওঠে। ইয়ান কুজিন এবং তার সহকর্মীরা আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করে সে চিন্তাকে আরও সূক্ষ্ণতর করে তুলেছেন। গবেষকরা প্রতিটি মাছের পিঠেই বারকোড লাগিয়েছেন। যে কারণে প্রতিটি মাছকে পৃথকভাবে চেনা এবং সবসময় শনাক্ত করা সম্ভব হয়। তারপর তিনি বড় পুকুরের মাছের ঝাঁক ছেড়ে দেন সেগুলো। প্রত্যাশা অনুযায়ী মাছগুলো ছায়ার মধ্যে ঘুরে বেড়ায়। একটি ক্যামেরার মাধ্যমে সর্বক্ষণই তাদের ছবি তোলা হয়। পরে একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রতিটি মাছের গতিপথও দেখা হয়। পর্যবেক্ষণের সময় বিজ্ঞানীদের আপাতদৃষ্টিতে তুচ্ছ বা সামান্য একটি বিষয় চোখে পড়ে। দেখা যায় যে, ছায়ার মধ্যে এলে মাছদের সাঁতারের গতি বেশ কমে যায়। এভাবে মাছদের বিষয়ে গবেষণা চালানো হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো আরও নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসবে।