দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সত্যিই মাঝ-মধ্যে কিছু ঘটনা আমাদের বিস্মিত করে। এবার এমন এক গ্রামের সন্ধান পাওয়া গেছে যেখানে কবর থেকে তুলে প্রিয়জনকে শ্রদ্ধা জানানো হয়!
আর্থিক অনটন যতোই থাক না কেনো, প্রিয়জনের অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ার কাজে কোনও ত্রুটি হওয়া চলবে না। মৃত্যুর সপ্তাহ খানেক পর কবর হতে মৃতদেহ তুলে এনে তার অন্ত্যেষ্টির কাজ করা হয়! তাও আবার একবার নয়, এমনটা করা হয় প্রতি তিন বছর পর পর! এমন কথা শুনে হয়তো আপনি অবাক হচ্ছেন! কিন্তু বাস্তবে ঠিক তাই ঘটে এমন একটি গ্রাম রয়েছে।
বিগত কয়েক শতাব্দি ধরেই এমনই সামাজিক রেওয়াজ পালিত হয়ে আসছে ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি পর্বতের বিচ্ছিন্ন একটি গ্রামে বসবাসকারী তোরাজান নামক একটি উপজাতির মধ্যে। তোরাজান উপজাতির শতাব্দি প্রাচীন এই রীতির নাম হলো ‘মানিন’।
বিভিন্ন সময় শোনা যায়, তোরাজান উপজাতির মানুষরা বিশ্বাস করেন যে, মৃত্যুই জীবনের শেষ কথা নয়। কারণ তাদের ধারণা মতে, মৃত্যু আসলে আধ্যাত্মিক জীবনে প্রবেশের একটি পর্যায় মাত্র। তাছাড়াও তাদের বিশ্বাস, মৃত্যুর পর তাদের প্রিয়জনের আত্মা আবারও ঘরে ফিরে আসে। তাই প্রতি ৩ বছর পর পর কবর হতে দেহগুলো তুলে এনে দেখে নেওয়া হয়, কী পরিস্থিতিতে রয়েছে মৃতদেহ। তাছাড়াও মেরামত করা হয় কফিনগুলোকে!
তোরাজান উপজাতির এই প্রাচীন রীতি মেনে, ৩ বছর অন্তর অন্তর কবর হতে প্রিয়জনের দেহগুলো তুলে, সাজিয়ে গুজিয়ে রীতিমতো হাঁটিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়ে থাকে। দেহগুলো হতে পুরনো মলিন জামা কাপড় বদলে ফেলে পরানো হয় নতুন নতুন জামা কাপড়। তোরাজান উপজাতির মানুষরা অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গেই, যে যার সাধ্য মতো খরচ করে এই রীতি পালন করে থাকেন। ৩ বছর ধরেই এর প্রস্তুতি চলে একটু একটু করে।
তবে ১৯৭৯ সালের পর ডাচ মিশনারিদের হাত ধরে সভ্যতার আলো কিছুটা হলেও পৌঁছেছে সুলাওয়েসির এই গ্রামে। বহির্জগতের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে তোরাজান উপজাতির মানুষদের মধ্যে। তবে এখনও ‘মানিন’-এর রীতি একইভাবে পালিত হয় আসছে এখানে।