দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ (বুধবার) সারাদেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্যের মধ্যদিয়ে দিনটি উদযাপিত হচ্ছে। করোনার কারণে সারাদেশে বিরাজ করছে মলিন এক পরিবেশ।
শান্তি, সৌহার্দ্য ও আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে ঈদের উৎসব। আজ সব ভেদাভেদ ভুলে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে মিলিত হওয়ার দিন। করোনার কারণে আমাদের দেশের বর্তমান অবস্থা খুবই খারাপ। যে কারণে ঈদের আনন্দ ঠিক সেভাবে হচ্ছে না। চারিদিকে যেনো মৃত্যুর মিছিল। তারপরও ধর্মীয় অনুভূমির কোনো কমতি নেই বাঙালিদের মধ্যে।
পবিত্র ঈদুল আজহার মূল উদ্দেশ্য হলো মহান আল্লাহর উদ্দেশে নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানী করা। মহান রাব্বুল আলামিন তাঁর প্রিয় নবী হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আনুগত্য পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে তাঁকে নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁর সবচেয়ে প্রিয় বস্তুকে কোরবানী করতে। স্নেহের পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.) ছিলেন তাঁর সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তি। স্নেহ-মমতায় ভরা জগৎ-সংসারে পিতার পক্ষে আপন পুত্রকে কোরবানী দেওয়া অসম্ভব এক অগ্নিপরীক্ষা ছিলো। তবে আল্লাহর নির্দেশ পেয়ে হজরত ইব্রাহিম (আ.) বিনা দ্বিধায় আপন পুত্রকে কোরবানী দিতে উদ্যত হয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। মহান আল্লাহর নির্দেশে ছুরির নিচে প্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-এর স্থলে কোরবানী হয়ে যায় একটি দুম্বা। এই প্রতীকী ঘটনার অন্তর্নিহিত বাণী স্রষ্টার প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্য এবং ত্যাগ স্বীকার।
পবিত্র ঈদুল আজহার উদ্দেশ্য স্রষ্টার সন্তুষ্টির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করার জন্য প্রস্তুত থাকা। পশু কোরবানী করা হয় প্রতীকী অর্থে। আসলে কোরবানী দিতে হয় মানুষের ভেতরের রিপুকে: কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, পরনিন্দা, পরশ্রীকাতরতা। সৎ পন্থায় উপার্জিত অর্থের বিনিময়ে কেনা পশু কোরবানীর মাধ্যমেই তা সম্পন্ন করতে হয়।
পবিত্র ঈদুল আজহায় সারা দেশে একই দিনে বিপুলসংখ্যক পশু কোরবানীর কারণে পরিবেশের পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে। তাই সবার উচিত যেখানে-সেখানে পশু জবাই করার প্রবণতা পরিহার করা।
কোরবানীর পর পশুর রক্ত, মলমূত্র, হাড় ইত্যাদি ধুয়েমুছে পরিষ্কার রাখা, নিজ নিজ লোকালয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব নগরবাসীর সকলের। সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভাগুলোকে এই সময় বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হবে। তাদেরকে সহযোগিতা করা উচিত সবার। কোরবানীর পশুর চামড়া কেনাবেচার ক্ষেত্রেও সততা-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা দরকার, যাতে করে কোনো ধরনের অসদুপায় বা কারসাজির সুযোগ কেও না পান।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।