দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রজেজ দুদা ফেব্রুয়ারির গোড়াতে শীতকালীন অলিম্পিক উপলক্ষ্যে বেইজিং সফর করেছিলেন। চীন যে পোল্যান্ডকে ইউরোপের প্রবেশপথ গণ্য করে সফরকালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তার কাছে সে কথার পুনরুল্লেখও করেন।
লাক্সেমবার্গের গ্র্যান্ড ডিউক ছাড়াও দুদাই ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধান যিনি চলতি বছরের শীতকালীন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিলেন। চীনের মানবাধিকারের রেকর্ড তুলে অনেক পশ্চিমা দেশ এবারের শীতকালীন অলিম্পিক বয়কট করেছিলো।
দুদার সঙ্গে বৈঠককালে শি জানিয়েছিলেন, চীন পোল্যান্ডকে মূলত ইইউ সাপ্লাই চেইনের একটি হাব হিসেবে গণ্য করে। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্ভবত চীনের উচ্চাভিলাষের রাশ টেনে ধরতেও চলেছেন। নিউ ইউরেশিয়ান ল্যান্ড ব্রিজ চীন থেকে ইউরোপে ট্রেন চলাচলের নতুন একটি প্রকল্প। কাজাখস্তান, রাশিয়া এবং বেলারুশের মধ্যদিয়ে ট্রেনটির করিডরটি প্রসারিত।
এটি চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কথা। বিআরআইকে বলা হয়, আধুনিককালের সিল্ক রোড। রাশিয়া আঞ্চলিক বৃহৎ দেশ হওয়ায় বিআরআই’র বেশির ভাগ সংযোগ পথ গেছে দেশটির ভেতর দিয়েই। ইউক্রেনে হামলার জেরে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার খড়গ নেমে আসায় পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে চীন।
২০১৭ সালে চীন ইউরোপের সঙ্গে ৪০টির মতো ফ্রেইট রুট যুক্ত করে। এই সংখ্যা বর্তমানে ৭৮ বা প্রায় দ্বিগুণে পৌঁছেছে। এর মাধ্যমে ইউরোপের ২৩টি দেশের ১৮০টি শহর সংযুক্ত হয়েছে। ফ্রেইট রুট কিংবা রেলপথে মাল পরিবহনের পরিমাণও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে মহামারিকালে তা বেড়েছে বেশ নাটকীয়ভাবে।
২০১৬ সালে ৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যে পরিবহন করা হয়েছিলো, এর পরিমাণ গত বছর প্রায় ৭৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেচে।
তবে ২০২০ সালের পর ইউরোপের সঙ্গে চীনের কূটনৈতিক এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে দূরত্ব তৈরি হয়। যার জের বাণিজ্যের ওপরও পড়েছিলো। ইইউর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক কর্মকর্তা জোসেফ বোরেল কিছুদিন আগে বলেছেন যে, ‘এশিয়া বিশেষ করে চীনের ওপর তাদের বাণিজ্য নির্ভরশীরতা কমিয়ে পূর্ব ইউরোপ, বলকান এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। পূর্ব ইউরোপের অন্যতম ইউক্রেন এখন যুদ্ধকবলিত হয়ে পড়ায় ওই অঞ্চলটির সঙ্গে এখন বাণিজ্য বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।
পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে তা প্রায় অনিশ্চিত। আগে যেমন ধারণা করা হয়েছিল রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালালেও তা খুব সীমিত পরিসরেই হবে। এখন মনে হচ্ছে যে, এটি দীর্ঘায়িত করে পশ্চিমা দেশগুলোকে চাপে রাখার কৌশল অবলম্বন করেছে রাশিয়া। চীন নিয়ে ইউরোপের প্রত্যাশা ছিল দেশটি গণতন্ত্রের পথেই অগ্রসর হবে। মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নের দিকেই নজর দিবে। তবে বাস্তবে সেটি হয়নি বরং দেশটি দিনে দিনে আরও কতৃর্ত্ববাদী হয়েছে। ইউক্রেন সংকট চীনকে কূটনীতির মাঠেও একটি অবস্থান তৈরি করেছে। এছাড়াও চীন নিয়ে ইইউর একটি আশঙ্কা ছিল তথ্যপ্রযুক্তির নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে তারা।
বিআরআইকে বর্তমানে চীনের পররাষ্ট্রনীতির ফোকাল পয়েন্ট। এর মাধ্যমে এশিয়া, ইউরোপ এবং আফ্রিকাকে একটি বাণিজ্য রুটের মাধ্যমে সংযুক্ত করতে চাইছে বেইজিং। প্রকল্পের অংশ হিসেবে বিভিন্ন দেশে অনেক অবকাঠামোও নির্মাণ করা হচ্ছে। যাকে অনেক দেশ আবার ঋণ ফাঁদ কিংবা ঋণ আগ্রাসন হিসেবেও দেখছে। পশ্চিমা দেশগুলোর উপযুক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীর পর্যায়ে যেতে চীনের জন্য এই প্রকল্পের গুরুত্ব সত্যিই অপরিসীম। তবে ইউক্রেন সংকট দীর্ঘায়িত হলে প্রকল্প বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে তাতে সন্দেহ নেই। পরিকল্পনাতেও অনেক কাটছাঁট করতে হতে পারে সেক্ষেত্রে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।