দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুধুমাত্র বয়সী ব্যক্তিই নয়, অনেক সময় অল্পবয়সিদের মধ্যেও ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। সময় থাকতে সজাগ না হলে হাল এই সমস্যা বেশি বয়সে বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে। তবে নিয়মিত যোগাসন করলে এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
আমাদের মধ্যে অনেকের স্মৃতিশক্তি কমে যেতে পারে। যেমন অফিসে কোন দিন কার সঙ্গে মিটিং রয়েছে, বাড়িতে ফেরার সময় বাজার থেকে কোন জিনিসগুলো নিয়ে যেতে হবে বা আলমারির চাবিটা কোন জায়গায় রেখেছিলেন- এই ছোট ছোট জিনিসগুলো মাঝেমধ্যেই ভুলে যান অনেকেই। একটা সময় ধারণা ছিল যে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই কমে যেতে পারে স্মৃতির দৌড়। তবে আধুনিক জীবনধারার চাপ সেই তথ্যকে কেবল বইয়ের পাতাতেই আটকে রেখেছে। এখন অল্পবয়সিদের মধ্যেও ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিচ্ছে। এর কারণ হতে পারে অত্যাধিক মানসিক চাপ। তবে অল্প বয়স থেকেই এই সমস্যা সম্পর্কে সচেতন না হলে বেশি বয়সে বাড়াবাড়ি পর্যায় যেতে পারে। নিয়মিত যোগাসন করলে এই ধরনের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। কোন কোন যোগাসন করলে উপকার পেতে পারে সেটি আজ জেনে নিন।
হলাসন
প্রথমে যোগ করার ম্যাটের উপর চিত হয়ে টানটান করে শুয়ে পড়ুন। পা দু’টি একসঙ্গে জোড়া করে উপরের দিকে তুলে ধরে হাত দু’টি দিয়ে কোমর ধরে রাখুন। এখন শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে দুই পা কোমর থেকে ভাঁজ করে হাঁটু ভেঙে পায়ের আঙুল মাটি স্পর্শ করান। এই ভঙ্গিতে শ্বাস-প্রশ্বাস অল্প অল্প করে নিতে থাকুন ও ছাড়ুন। স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার সময় পা দু’টি টান টান করে একেবারে উপরের দিকে রাখুন। হাত কোমর থেকে সরিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন এবং ছাড়ুন। এবার কোমর থেকে হাত সরিয়ে নিতম্ব মাটিতে ছোঁয়ান। শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে আপনার পা মাটিতে রাখুন। এই আসনটি দিনে ২ হতে ৩ মিনিট করুন। তবে কারও যদি ঘাড় ও কোমরে ব্যথা থাকে, তাহলে এই আসন এড়িয়ে যাওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
চক্রাসন
দুই পায়ের মাঝখানে কাঁধের থেকে দূরত্ব রেখে তারপর শুয়ে পড়ুন। পায়ে ভাঁজ করে এমন অবস্থানে রাখুন, যাতে নিতম্বের সঙ্গে গোড়ালির স্পর্শও লাগে। দুই হাত উপরে তুলে মাথার দু’পাশে হাতের তালু দু’টি এখন মাটিতে রাখুন। দীর্ঘশ্বাস নিয়ে প্রথমে নিতম্ব এবং কোমর উপরে তুলুন। হাতে ভর রেখে পিঠ এবং মাথা উপরের দিকে তুলে ফেলুন। আসন থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার সময় শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পিঠ এবং তারপর কোমর নামিয়ে নিন। দৈনিক ২ হতে ৫ বার এটি করুন। তবে যেসব ব্যক্তি উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন, তাদের এই আসনটি না করাই উত্তম।
পশ্চিমোত্তনাসন
প্রথমেই আপনাকে দুই পা টানটান করে সোজা হয়ে বসতে হবে। এরপর শ্বাস নিতে নিতে দুই হাত মাথার উপরে তুলুন। তারপর শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে হাতসহ কোমর থেকে সামনের দিকে বেশ খানিকটা ঝুঁকে মুখ হাঁটুতে স্পর্শ করাতে হবে। আসন করার সময় পেট ভিড়ের দিকে হালকা টেনে রাখুন। আগের অবস্থায় ফেরার সময় শ্বাস নিতে নিতে হাত ওঠান ও শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে হাত আবার নামিয়ে নিন। দিনে ৩ হতে ৫ বার এটি করুন। পিঠে ব্যথা থাকলে চক্রাসন না করাই উচিত হবে।
তাছাড়াও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে ও মনোযোগ বৃদ্ধি করতে নিয়ম করে আধা ঘণ্টা সময় করে ধ্যান ও প্রাণায়াম করতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org