দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে গেলে তৎক্ষণাৎ একটি টোটকায় অনেকেই আরাম পেয়েছিলেন। তবে নিয়মিত এই ভঙ্গিতে শোয়ার খারাপ দিকও রয়েছে।
উপুড় হয়ে উপন্যাস পড়তে পড়তে অন্য এক জগতে হারিয়ে যাওয়া বেশ মজার। তবে অনেকেই বলে থাকেন, পেটের উপর চাপ দিয়ে শোয়ার অভ্যাস না কি আদতেও ভালো নয়। এটি কোমর ও ঘাড়ের ক্ষতিও করে। অবশ্য শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা হলে কিংবা নাক ডাকার সমস্যা থেকে রেহাই পেতে অনেকেই এই ভঙ্গিতে শুতে বেশি পছন্দ করেন। তাহলে কোন বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দেবেন?
চিকিৎসকরা বলেছেন, অতিমারি অর্থাৎ করোনার সময় অনেকেই হয়তো খেয়াল করেছেন যে, শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় আরাম পেতে বহু রোগীকে উপুড় করিয়ে শুইয়ে রাখা হতো। অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে গেলে তৎক্ষণাৎ এই টোটকায় অনেকেই আরাম পান। তবে নিয়মিত এই ভঙ্গিতে শোয়ার খারাপ দিক রয়েছে। তাদের মতে, প্রশ্বাস নেওয়ার সময় ফুসফুস যতোটা ফুলে ওঠার কথা, উপুড় হয়ে শুলে ততোটা জায়গা পাওয়া যায় না। যে কারণে শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে। চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে ‘হাইপোপ্লাসিয়া’ বলা হয়ে থাকে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এই হাইপোপ্লাসিয়া মারাত্মক আকারও ধারণ করতে পারে। যা থেকে মৃত্যুও ঘটতে পারে।
হাড়ের চিকিৎসকরা বলছেন, যদি কেও বালিশে মাথা রেখে উপুড় হয়ে শোয়ার অভ্যাস করেন, সেই ক্ষেত্রে ঘাড়ে চোট লাগার সম্ভাবনাও থেকে যায়। দেহের গোটা কাঠামো ধরে রাখে যে সুষুম্নাকাণ্ড, তার শুরুটা হয় মস্তিষ্কের খানিকটা পর হতেই এবং তারসঙ্গে যোগ থাকে কোমরের। তাই বালিশের উপর ঘাড় রেখে সেটি এদিক-ওদিক ঘোরালে লাম্বার স্পাইন অর্থাৎ মেরুদণ্ডের একেবারে শেষপ্রান্তের ডিস্কে আঘাত লাগার সম্ভাবনাও থাকে। ভারি কাজ না করা সত্ত্বেও ঘাড় বা কোমরের ব্যথায় ভুগতে পারেন। তাছাড়া ভরপেট খেয়ে যদি কেও পাকস্থলীর উপর চাপ দিয়ে যদি উপুড় হয়ে ঘুমোতে যান, সেই ক্ষেত্রে তার হজমের গন্ডগোলও হতে পারে। তাই এই বিষয়টি সকলকেই খেয়াল রাখতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org