দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ লবণের অনেক স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে। শরীরের ব্যথা দূর করতেই হোক বা ক্লান্তি দূর করতেই হোক, লবণের কোনও জবাবই নেই। স্বাস্থ্যরক্ষায় কীভাবে কাজে লাগানো যায় লবণ, সেই বিষয়টি দেখে নিন আজ।
আমরা জানি লবণ ছাড়া রান্না হয় না। তবে রান্না ছাড়াও বাড়ির অনেক কাজে লাগে লবণ। শুধু তাই নয়, লবণের অনেক স্বাস্থ্যগুণও রয়েছে।
সৈন্ধব লবণ মেশানো পানিতে গোসল করলে শরীর চাঙ্গা থাকে, অনেক রোগের প্রকোপও ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব। এতে আপনি কী কী উপকার পাবেন?
বাতের ব্যথায় আরাম
বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শরীরে ক্যালশিয়ামেরও ঘাটতি হয়। বিশেষত: মহিলাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যায় বেশি হয়। অল্পবয়সিদের ক্ষেত্রেও এই সমস্যাটি দেখা দিতেই পারে। যে কারণে হাড়ের ক্ষয় হয়, আর্থ্রাইটিসও বাসা বাঁধে শরীরে। লবণ পানিতে নিয়মিত গোসল করলে বাত কিংবা আর্থ্রাইটিসের ব্যথাও দূর হয়।
রক্ত সঞ্চালনও বাড়ে
রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে গোসলের পানিতে মিশিয়ে নিন এক চামচ লবণ। সারাদিন পরিশ্রম শেষে বাড়ি ফিরে সকলের শরীরেই ক্লান্তিভাব চলে আসে। লবণ পানিতে গোসল করলে শারীরিক এবং মানসিক ক্লান্তি দূর হবে নিমেষেই।
পেশি সচল রাখে
শীতকালে পানি কম খান অনেকেই। যে কারণে ঘন ঘন পেশিতে টান পড়ে। এই সমস্যা দূর করতে শীতের সময় লবণ পানিতে গোসল করতে পারেন। লবণ পানি দিয়ে গোসল করলে মাথা যন্ত্রণা থেকেও আরাম পাওয়া যাবে।
বয়স ধরে রাখতে সাহায্য করে
কালের নিয়মে বার্ধক্য আসবে সেটিই স্বাভাবিক। তবে প্রতিদিনের নানা অনিয়মের কারণে সময়ের পূর্বেই অনেকের ত্বকেই বয়সের ছাপ পড়তে শুরু করে। অকালে ত্বকে বলিরেখাও দেখা যায়। নিয়ম করে লবণ পানিতে গোসল করলে ত্বকের জেল্লা ফেরে, আবার ত্বকও টানটান হয়। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে লবণ পানি বেশ উপকারী।
অনিদ্রার সমস্যা দূর
মানসিক চাপের কারণে অনেকেই অনিদ্রার সমস্যাতে ভোগেন। অনেক সময় রাতের পর রাত জেগে থাকেন। এমনটি হলে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার পূর্বে লবণ পানিতে গোসল করে দেখতে পারেন, এতে করে দেখবেন ভালো ঘুম হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org