দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশ ও পশ্চিম ইউরোপসহ প্রায় গোটা বিশ্বে মেটার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, মেসেঞ্জার ও থ্রেড মঙ্গলবার রাত ৯টার পর হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায়। ‘সেশন এক্সপায়ার্ড’ বলে বার্তা দিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই আপনা থেকেই লগ আউট হয়ে যায়। পরে অবশ্য এক ঘণ্টা পর আবার চালু হয়।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ মেসেঞ্জারে প্রবেশ এবং ব্যবহার করতে না পেরে অনেকেই অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে কি-না, তা নিয়ে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। তারপর রাত ১০টা ২৩ মিনিটে আবারও সচল হয় ফেসবুক। যদিও তখন ইনস্টাগ্রাম সচল হতে আরও সময় নেয়। কী কারণে এই বিপত্তি ঘটেছে তা মেটা প্রধান মার্ক জাকারবার্গ না জানালেও সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সার্ভারের সমস্যা থেকেই এই বিভ্রাটটি হয়তো ঘটেছে। এই সময়ের মধ্যে বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়ে গেছে এই প্রতিষ্ঠানটির।
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, মেসেঞ্জার ও থ্রেড বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে আচমকা মেটার শেয়ার দরেও পতন ঘটে। আর্থিক মূল্যে ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ আনুষ্ঠানিকভাবে অবশ্য জানায়নি মেটা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসভিত্তিক অর্থনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড্যান আইভস ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলকে বলেছেন যে, এই বিভ্রাটের কারণে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে মেটা। এই ঘটনায় মেটার শেয়ারের দাম ১.৫ শতাংশ কমে গেছে। জাকারবাগের্র অন্ততপক্ষে ১০০ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ৯৮ কোটি টাকারও বেশি হবে!
ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম যখন মেটার প্ল্যাটফরমগুলোর লগ-আউট এবং লগ-ইন বিপত্তি দেখা দেওয়ার পরপরই মেটার শেয়ার দর পড়ে গিয়েছিলো ১ দশমিক ৫ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর ১ দশমিক ৬ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। প্রায় দেড় ঘণ্টার ওই বিভ্রাটে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে মেটা। সবমিলিয়ে ৩ বিলিয়ন অর্থাৎ প্রায় ৩০০ কোটি ডলার মতো ক্ষতি হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৪ অক্টোবর ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় বন্ধ ছিল ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রাম। সেই সময় ৬ ঘণ্টার ওই বিভ্রাটে ৭০০ কোটি ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় জাকারবার্গ। এর প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতি ১০০ কোটি ডলারের বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছিল সেই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org