দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পেঁপেতে উপস্থিত ‘পেপসিন’ ও ‘প্যাপাইন’ নামক উৎসেচকগুলো পরিপাকে বিশেষ সহায়ক। তাই খালি পেটে পেঁপে খেলে তা পেটের মধ্যে নানা রকম জটিলতাৗ তৈরি করতে পারে।
খালি পেটে কোনো ফল খাওয়ার অভ্যাস মোটেও ভালো নয়। তাই পুষ্টিবিদরা সাধারণত ঘুম থেকে উঠেই ফল খেতে বারণ করেন। এর কারণ হলো, ফলের মধ্যে থাকে নানা রকম অ্যাসিড। যেগুলো আসলে খাবার হজম করতে সাহায্য করে। তা সত্ত্বেও অনেকেই উপকারের আশায় সকালে খালি পেটেই পাকা পেঁপে খেয়ে ফেলেন। তাতে কী সত্যিই কোনও উপকার হয়? এই বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, খালি পেটে পাকা পেঁপে খাওয়া কোনও পরিস্থিতিতেই ভালো নয়। কারণ হলো, পেঁপেতে উপস্থিত ‘পেপসিন’ ও ‘প্যাপাইন’ নামক উৎসেচকগুলো পরিপাকে সহায়ক। তাই খালি পেটে পেঁপে খেলে তা পেটের মধ্যে নানা রকম জটিলতাও তৈরি করতে পারে।
খালি পেটে পাকা পেঁপে খেলে কী কী সমস্যা হতে পারে?
ক্যারোটেনেমিয়া
যেমন অতিরিক্ত পরিমাণে পেঁপে খেলে রক্তে বিটা-ক্যারোটিনের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। যে কারণে ত্বকের রঙে পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় এটিকে বলা হয়, ‘ক্যারোটেনেমিয়া’।
পেটের সমস্যা
এই পেঁপে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় দারুণ কাজ করে। তবে বেশি পরিমাণে পেঁপে খেলে আবার ডায়েরিয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে।
কিডনিতে পাথর
সাধারণ পেঁপেতে ভিটামিন সি’র পরিমাণ বেশি থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলার জন্য ভিটামিন সি গুরুত্বপূর্ণ। তবে, এটি খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে। অতিরিক্ত পরিমাণে পেঁপে খেলে কিডনিতে পাথর জমার আশঙ্কাও বেড়ে যেতে পারে।
নেটপ্রভাবী ও পুষ্টিবিদ চৈতালি রানে বলেছেন, যাদের বিশেষ কোনও রকম শারীরিক সমস্যা নেই, তারা সকালে পাকা পেঁপে খেতে পারেন। কারণ হলো, পেঁপের মধ্যে থাকা বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতেও সহায়তা করে। শরীরে জমা দূষিত পদার্থ বের করতে পেঁপে ‘ডিটক্সিফায়ার’ হিসেবেও কাজ করে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাতেও দারুণ কাজ করে এই পেঁপে। রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও মেদ ঝরাতেও সাহায্য করে এই ফলটি। শুধু কী তাই? নিয়মিত পেঁপে খেলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমে যাবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org