দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন অভিনেত্রী তানজিন তিশার ব্যক্তিগত সহকারী আলামিন। গণমাধ্যমে অভিনেত্রী নিজে এই খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দেন তানজিন তিশা। মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) নিজের ফেসবুকে আলামিনকে নিয়ে তিশা লিখেছেন,‘কিভাবে শুরু করবো জানি না। আপনারা হয়তো সবাই ওকে আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবেই চিনেন। তবে ও কিন্তু আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট না, আমার ছোট ভাই’ও। গত চার বছর ধরে এবং আমার সাথেই থাকে আমার ফ্যামিলিতেই থাকে। আপু কি লাগবে, আপু কি খাবে বা আপু কখন ঘুমাবে, আবার কখন মনটা খারাপ, মনটা ভালো সবকিছু এই ছেলেটাই জানতো ও দেখতো।’
তিশা আরও লিখেছেন যে, ‘আলামিন, সারাদিন আমার বড় একটা ছায়ার মতো আমার পাশে বসে থাকতো। আমার কতো প্ল্যান ওকে নিয়ে। ওকে ড্রাইভিং শেখাবো, জোর করে বলতাম পড়াশোনাটা কন্টিনিউ করতে- পরীক্ষাটা দিতে। অনেকেই অনেক কিছু বলতো কিন্তু দুনিয়ার সাথে যুদ্ধ করে এবং আপুর কাছে এসে বসে থাকতো। ঈদের দিনগুলোর আগে আমার সাথেই থাকতো, এরপর ওর ফ্যামিলির সঙ্গে। কতো বকা দিয়েছি, মন খারাপও করে থাকতো আবার একটু পরই ঠিক বুঝাতাম। একটা না দুই দুইটা গুলি কিভাবে নিয়েছে এই বাচ্চা ছেলেটা?’
সবশেষে তিশা লিখেছেন যে, ‘আলামিন কোনো দল বা কোনো কিছুর সঙ্গে জড়িত ছিল না। ওর বিগত ৪ বছর জীবনটা আমার সাথেই, আমার কাজের ও আমার পরিবারের সঙ্গেই কেটেছে। ওর জীবনে কোন পাপ নাই, খুব ছোট একটা মানুষ এই চার বছর আমার কাছে বড় হতে দেখলাম। দোয়া করবেন সবাই আল্লাহর কাছে, যেনো সুন্দর জীবনে থাকে।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেলে উত্তরা হাউস বিল্ডিং এলাকায় আল আমিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org