দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ খাওয়া কমালেই যে ইউরিক অ্যাসিড কমে যাবে তা কিন্তু নয়। বরং প্রতিদিনের কিছু অভ্যাসে বদল আনলেই এই রোগটিকে জব্দ করা সম্ভব হতে পারে।
থাইরয়েড ও ইউরিক অ্যাসিড— বাঙালিদের ঘরে ঘরে দেখা যায়। থাইরয়েড শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি গ্রন্থি। সময় মতো চিকিৎসা নাহলে ইউরিক অ্যাসিডও ভোগাতে পারে। ইউরিক অ্যাসিড ধরা পড়া মানেই হলো, আজ এটা খাওয়া যাবে না, তো কাল সেটা খাওয়া যাবে না। তবে জানেন তো, খাওয়া কমালেই যে ইউরিক অ্যাসিড কমবে তা কিন্তু নয়। বরং প্রতিদিনের কিছু অভ্যাসে বদল আনলেই এই রোগটিকে জব্দ করা সম্ভব হতে পারে।
মেডিসিনের চিকিৎসক সোনালি ঘোষের বক্তব্য হলো, খাবার হজমের সময় ইউরিক অ্যাসিড সৃষ্টি হয়। এটি মূলত মূত্রের স্বাভাবিক উপাদান। মাত্রাতিরিক্ত প্রোটিন খেলে কিংবা ওজন বাড়লে কখনও কখনও ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। বাড়তি ইউরিক অ্যাসিড শরীরের অস্থিসন্ধি এবং মূত্রনালিতে জমাও হয়। তখন গাঁটে ব্যথা এবং প্রস্রাবের সংক্রমণও হতে পারে। কিডনিতে পাথরও জমে যেতে পারে। তাই ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রোটিন খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে। পরিমিত পরিমাণ খেতে হবে। বেশি ঝালমশলা দেওয়া মাংস, রেড মিট, প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়া মোটেও চলবে না। এই অভ্যাস ছাড়লে অনেকটা সুরাহা হতে পারে।
দ্বিতীয়ত: বেশি চিনি খাওয়ার অভ্যাস অবশ্যই ছাড়তে হবে। শরীরে ইনসুলিনের ভারসাম্য যাতে করে বজায় থাকে, সেটি দেখতে হবে। রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়লে সেটি শুধু ডায়াবেটিসের কারণই হয় না, ইউরিক অ্যাসিডকেও এটি নিমন্ত্রণ করে আনতে পারে।
তাই রক্তচাপ মোটেও বাড়তে দেওয়া যাবে না। এরজন্য সুষম খাবার খেতেই হবে। নিয়মিত শরীরচর্চা করাটাও জরুরি। ভারি ব্যায়াম করতে না পারলেও হাঁটাহাঁটি, স্পট জগিং করার চেষ্টা করতে হবে।
বেশি করে পানি খেতে হবে। পানি কম খাওয়ার অভ্যাস অনেকের থাকে। দিনে ৩ থেকে ৪ লিটার পানি খাওয়া জরুরি। তবে হার্ট কিংবা কিডনির রোগ থাকলে দিনে কতোটা পানি খাবেন, সেটি চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org