দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই ঘটনাটি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন ইউনিয়নের। সেখানকার রেহান আলী মাতব্বরের বাড়িতে ঘটে গেছে এক আজবকাণ্ড। মৃত্যুর ৩৬ বছর পর এনআইডি কার্ড নিয়ে হাজির হলেন সিরাজ উল্লাহ নামে এক ব্যাক্তি!
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন ইউনিয়নের জমির উল্লাহ চিশতির দুই পুত্র মো. মহিউদ্দিন ও সিরাজ উল্লাহ। সিরাজ উল্লাহ মৃত্যুবরণ করেন ১৯৮৮ সালের ৫ই জুন। পরে ১৯৯২ সালের ২৮ মার্চ তার পিতা জমির উল্লাহ মৃত্যুবরণ করেন।
তবে সম্পত্তির লোভে বরুমচড়া এলাকার মৃত কালা মিয়ার পুত্র মো. সিরাজ ওরফে বুইরগা সিরাজ উল্লাহ সেজে তথ্য গোপন করে নকল এনআইডি কার্ড তৈরি করেছিলেন। পরে এনআইডি কার্ড নিয়ে জমির উল্লাহর পুত্র সিরাজ উল্লাহ দাবি করে সম্পদ দখলের চেষ্টা করেন।
গত ২৮ জুন সকালে উপজেলার টানেল সংযোগ সড়কের একটি রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে মরহুম জমির উল্লাহ চিশতির ভাই মো. নাছির উদ্দিন এই দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো. নাছির উদ্দিন বলেছেন, প্রতারক সিরাজ আমার মরহুম বড় ভাই জমির উল্লাহর শ্যালিকাকে বিবাহ করেন। সেই হিসেবে সিরাজ আমার বড় ভাইয়ের ভাইরা ভাই হন। তবে সম্পত্তি দখলে নিতে তিনি সব তথ্য গোপন করে আমার মৃত ভাতিজা সিরাজ উল্লাহ সেজে ২০১৭ সালে এনআইডি কার্ড তৈরি করেছিলেন। তার এনআইডি কার্ডে জন্ম তারিখ দেন ১৯৬৫ সালের ১১ মে, অথচ আমার বড় ভাই মরহুম জমির উল্লাহর জন্ম ১৯৬১ সালের ২২ জুলাই। সেই হিসেবে তারা পিতা-পুত্রের বয়সের পার্থক্য হয় মাত্র ৩ বছর ৯ মাস, যা সত্যিই হাস্যকর।
এইসব তথ্য নকল করার পর প্রতারক মো. সিরাজ বিভিন্ন নকল দলিল-কাগজপত্র তৈরি করেন। এখন তিনি আমাদের সম্পদ দখলের চেষ্টা করে আসছেন। কোনো উপায়ন্তর না দেখে আমরা আদালতের আশ্রয় গ্রহণ করেছি।
তবে বিষয়টি স্বীকার করে মো. সিরাজ বলেন যে, জমির উল্লাহ চিশতি আমার পীর তাই তিনি আমার আধ্যাত্মিক পিতাও। আমাকে খেলাফত দিয়েছেন উনিই। সেজন্য আমি আমার পূর্বের নাম ঠিকানা পরিবর্তন করে নতুন এনআইডি কার্ড তৈরি করেছিলাম।
এই সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মরহুম সিরাজ উল্লাহর ওয়ারিশ মো. হেফাজ উদ্দিন, মো. হাশেম উদ্দিন, মো. জালাল উদ্দিন, মো. ফরিদ এবং মো. নুরুল্লাহ।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org