দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমানে এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যে, ফেসবুক ছাড়া আমাদের দিন যায় না। সকল ক্ষেত্রেই আমরা ফেসবুক ব্যবহার করি। আমাদের দেশে ফেসবুক ব্যবহারে নিষিদ্ধের কোনো আইন না থাকলেও বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে এমন আইন রয়েছে।
ফেসবুক ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিতে বিনামূল্যেই সদস্য হওয়া যায়। ব্যবহারকারীরা বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ ও তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলি হালনাগাদ এবং আদান প্রদান করতে পারেন। সেইসঙ্গে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় ও অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কের সঙ্গেও যুক্ত হতে পারেন।
তাছাড়াও অনেকেই ফেসবুকে পেজ খুলে ব্যবসা করে মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন ঘরে বসেই। তবে কিছুক্ষণ ফেসবুক থেকে দূরে থাকলেই কেমন যেনো হাঁসফাঁস লাগে অনেকের। সেখানে গত ১০ দিনের বেশি সময় ফেসবুক থেকে দূরে রয়েছেন দেশের মানুষ। অনেকেই আবার হাঁপিয়ে উঠেছেন ফেসবুক স্ক্রল করতে না পেরে।
তবে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে ফেসবুক নিষিদ্ধ। এইসব দেশে লুকিয়ে ব্যবহার করতে গেলেও কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হয়। সে দেশের কেউ ব্যবহার করেন না এই প্ল্যাটফর্মটি।
চীন
জিনজিয়াং প্রদেশে মারাত্মক দাঙ্গার পর কর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারি ক্র্যাকডাউনের অংশ হিসেবে ২০০৯ সাল হতে চীনে ফেসবুক নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। মেটার মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ এবং এর ফটো ও ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ ইনস্টাগ্রামও নিষিদ্ধ পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে।
ইরান
২০০৯ সালে দেশটির নির্বাচনে বিতর্ক উঠলে গণবিক্ষোভের মুখে ইরানে ফেসবুক নিষিদ্ধ করা হয়। যদিও কিছু ব্যবহারকারী ভিপিএন ব্যবহার করে এখনও ফেসবুক অ্যাক্সেস করে থাকেন। তবে দেশটির সরকার ভিপিএন-এর ব্যবহারও আইনত অপরাধ ঘোষণা করেছে। লুকিয়ে কেও পশ্চিমা এই সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার করে ধরা পড়লে তাকে কঠিন এক শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়।
উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৬ সালে ফেসবুক ব্লক করে দেয় ও ঘোষণা করে যে, কেও ‘অনুপযুক্ত’ উপায়ে ফেসবুক অ্যাক্সেস করার চেষ্টা করলে কিংবা এর থেকে ‘প্রজাতন্ত্রবিরোধী ডেটা’ বিতরণ করলে তাকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
কিউবা
কিউবায় আনুষ্ঠানিকভাবে ফেসবুক নিষিদ্ধ নয়। তবে এটি অ্যাক্সেস করা খুবই কঠিন। শুধুমাত্র রাজনীতিবিদ, কিছু সাংবাদিক ও মেডিকেল স্টুডেন্টরা তাদের বাড়ি থেকে আইনগতভাবে ওয়েব অ্যাক্সেস করতে পারেন। অন্য সবার জন্য অনলাইন জগতের সঙ্গে আইনিভাবে সংযোগ করার একমাত্র উপায়ই হলো ইন্টারনেট ক্যাফে।
তুর্কমেনিস্তান
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের স্বাধীন রাষ্ট্র মধ্য এশিয়ার তুর্কমেনিস্তান সরকার ফেসবুক নিষিদ্ধ করেছে। ফেসবুক ব্লক করার পাশাপাশি তুর্কমেনিস্তানে হোম ইন্টারনেট সংযোগের ক্ষেত্রে সাইন আপ করার সময় পবিত্র কোরআনের শপথ নিতে বলা হয়। শপথ করানো হয় যে, তারা কখনও ভিপিএন অ্যাক্সেস করবে না। এই সময় শিক্ষার্থীদের নিষিদ্ধ সাইটগুলোতে অ্যাক্সেস করার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারপর বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে হয়। তথ্যসূত্র: আরটিভি অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org