দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চিত্রনায়িকা আরিফা পারভিন জামান মৌসুমীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তার বিরুদ্ধে আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড হতে ঋণ নিয়ে ১ লাখ ৬ হাজার ২১১ টাকা পরিশোধ করার সময় চেক ডিজঅনারের মামলায় দুইবার সমন জারি করা হয়েছিলো। তবে আদালতে হাজির না হওয়ার কারণে গত ২৪ জুলাই এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার একটি আদালত।
শনিবার (৩ আগস্ট) আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের আইনজীবী আবু আল নাহিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানিয়েছেন, চেক ডিজঅনার হওয়ায় চিত্রনায়িকা মৌসুমীর বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ৩ ডিসেম্বর ঢাকার একটি আদালতে আইপিডিসির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এম মুশফিকুর রশীদ এই মামলা দায়ের করেছিলেন।
এই মামলায় উপস্থিত না হওয়ায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। আগামী ১৬ অক্টোবর গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। তবে মৌসুমী বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।
এদিকে মামলার অভিযোগে বলা হয় যে, আইপিডিসি একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যেটি সারাদেশে অর্থ জমা, ঋণ, বিনিয়োগ, মুদ্রা বিনিময়ের মতো আর্থিক লেনদেন করে থাকে। মামলার বিবাদী আরিফা পারভিন জামান মৌসুমীকে অভিযোগকারী ঋণ দিয়েছিলেন। তবে মৌসুমি ঋণের শর্ত না মেনে অনিয়মিত পদ্ধতিতে কিস্তি দিতেন।
এরপর মৌসুমীকে একাধিকবার সঠিক সময়ে ঋণ পরিশোধ করতেও বলা হয়। বকেয়া ঋণের আংশিক দায় মেটাতে ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মৌসুমী নিজের অ্যাকাউন্ট হতে বাদীর অ্যাকাউন্টে ১ লাখ ৬ হাজার ২১১ টাকা হস্তান্তর করেন। সিটি ব্যাংকে সংরক্ষিত চেকটির নম্বর ৮৩৭৮৮৩২। তবে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর গুলশানের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে চেকটি দেখানো হলে ব্যাংক জানায় যে, চেকের অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নেই।
মামলায় আরও বলা হয়েছে, তারপর মৌসুমীকে আইন অনসুারে ৩০ দিনের মধ্যে চেকের অর্থ দিতে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। তবে তিনি ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বরের মধ্যে চেকের ওই অর্থ দিতে ব্যর্থ হন। সেজন্য তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার পর হাজির হওয়ার জন্য মৌসুমীর গুলশান-১ এবং বসুন্ধরা আবাসিকের বাসায় আদালত থেকে দুইবার সমনও পাঠানো হয়। তবুও হাজির না হওয়ায় এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org