দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা অনেকেই গান পছন্দ করি। কিন্তু গানের উপকারীতা সম্পর্কে তেমন কিছুই আমাদের জানা নেই। এবার জানা গেলো গান শুনলেই নাকি বশে থাকবে রক্তচাপ!
গান শোনার উপকারিতা যে কতো, তা একবাক্যে মানেন চিকিৎসকরাও। গান শুনলে অনিদ্রার রোগীর চোখেও নেমে আসতে পারে শান্তির ঘুম। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় আক্রান্ত মানুষ খুঁজে পেতে পারেন তার সমাধান!
গান শুনলেই শান্ত হয়ে ওঠে মন। পছন্দের সুরে কাটবে হতাশাও। ব্যথা–বেদনায় ভারাক্রান্ত মানুষ সাময়িকভাবে হলেও চনমনে হয়ে উঠবে। গান শোনার উপকারিতা যে কতো, তা একবাক্যে মানেন চিকিৎসকরাও। গান শুনলে অনিদ্রার রোগীর চোখে নেমে আসতে পারে শান্তির ঘুম। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় আক্রান্ত মানুষ খুঁজে পেতে পারেন তার সমাধান!
গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত গান শুনলে মন ও মস্তিষ্কের ভিতরে ‘সুখী’ হরমোনের ক্ষরণ আরও বেড়ে যায়। যে কারণে শরীরের তো বটেই, মনের অসুখবিসুখও কাছে ঘেঁষতে পারে না। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার চাবিকাঠিও রয়েছে গানের মধ্যেই।
নিয়মিত গান শোনার উপকারিতাগুলো:
রক্তচাপ কমে
হৃদস্পন্দন, নাড়ির গতি এবং রক্তচাপ যদি বেড়ে যায়, তাহলে তা কমতে পারে এই গানের সুরে। এক–আধ বারেই কষ্ট একেবারে কমে যায় এমন নয়, তবে দীর্ঘমেয়াদি অসুখের প্রকোপ থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। কারণ হলো মন যতো ভালো থাকবে, সুখী হরমোনের ক্ষরণও ততো বাড়বে, ততোই শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো স্বাভাবিকভাবে কাজ করবে। শরীরে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রাও তখন ঠিক থাকবে।
উদ্বেগ কমবে
মূলত গানের সুর মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অবধি পৌঁছায়। এটিই হলো সব আবেগের কেন্দ্রবিন্দু। গানের সুরে মানুষের হাইপোথ্যালামাস উদ্দীপিত হয়, কর্টিসল নামে ‘স্ট্রেস হরমোন’-এর ক্ষরণ তখন কমে যায়। অতিরিক্ত উৎকণ্ঠাও তখন বশে আসে। যে কারণে মনের যতোত রোগব্যধি তা ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে।
অনিদ্রা দূর হবে
পছন্দের গান কিংবা সুর স্রেফ শুনে যেতে হবে। দিনে বার চারেক মিনিট ১৫ করে শুনলেই কাজ হবে। একটানা শুনতে পারলেও ভালো। না হলে খাওয়ার সময়, কাজের ফাঁকে, ঘুমানোর পূর্বে শুনতে পারেন। এই ক্ষেত্রে হালকা সুর শুনতে হবে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গানের সুরে ঘুম ভালো হয়। ঘুমের সময় মাথায় হাবিজাবি চিন্তা-উদ্বেগও আসে না।
বাতের ব্যথাতেও আরাম
বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গেছে, রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের মতো কষ্টকর অসুখেও বিশেষ ভূমিকা রয়েছে এই গানের। সে কারণে এখন মিউজিক থেরাপির দিকে এতোটা জোর দেওয়া হচ্ছে হাসপাতালগুলোতে। কেবল মনের চাপ কমানোই নয়, বাতের ব্যথা-বেদনায় কাতর রোগীকেও আরাম দিতে পারে এই গান।
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে
গান শুনলে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অঞ্চলও সক্রিয় হয়। স্নায়ুর চাপও তখন কমে। স্মৃতিশক্তিও প্রখর হয়। মনোযোগ এবং একাগ্রতাও বাড়ে। সব কাজেই উৎসাহ পাওয়া যায়।
একাকীত্বের সঙ্গী গান
এই গান আপনার একাকীত্বের সঙ্গী হতে পারে। একা কোনও সফরে থাকলে বা দীর্ঘ পথযাত্রায় মন ভালো রাখতে পারে এই গান। কোনও কারণে অবসাদ হলে বা অনেকের মাঝেও একা বোধ হলে গান শুনতে পারেন। নিমেষে মনের মেঘ কেটে যাবে- মন ভালো হয়ে যাবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org