দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেই বলেন, তাদের নাকি মিষ্টি দেখলেই টপাটপ খেতে ইচ্ছে করে। মিষ্টি খেতে কেনো এতো মন চায়, তার কারণ কী আপনি জানেন? তবে এই মিষ্টির প্রতি আসক্তি কমানোর কিছু উপায় রয়েছে।
দিনকে দিন মিষ্টির প্রতি আসক্তি যেনো বেড়েই যাচ্ছে। অনেকেরই শেষপাতে একটু মিষ্টিমুখ না করলে মোটেও তৃপ্তি হয় না। অথচ ইদানীং মিষ্টি খাওয়ার আগে হাজারও চিন্তা মাথায় ঘোরে। তবে কিছুতেই লোভ সামলানো যায় না। যদি মিষ্টিপ্রেমীরা মনের জোরে মিষ্টি-চকোলেট-আইসক্রিম ছেড়ে দেন, তবুও চায়ে চিনি দেওয়া কিংবা সকাল-বিকেল রকমারি কেক-বিস্কুট খেয়ে ফেলা একেবারেই বন্ধ করে দেওয়া বেশ কঠিন কাজ। মিষ্টি খেতে কেনো এতো মন চায়, তার কারণ কী আপনি জানেন? তবে এই মিষ্টির প্রতি আসক্তি কমানোর কিছু উপায় রয়েছে।
মিষ্টি দেখলেই কেনো লোভ হয়? শরীরে বিশেষ কিছু পরিবর্তন এলেই মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতাও বাড়ে। সেগুলো আসলে কী কী?
# পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, প্রতিদিনের ডায়েটে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাটের ভারসাম্য বজায় রাখা ভীষণ জরুরি একটি কাজ। বেশি মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট শরীরে প্রবেশ করলে ইনসুলিনের ক্ষরণও বাড়ে। যে কারণে আরও কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার ইচ্ছা হয়। যতোক্ষণ না পর্যন্ত মিষ্টি খাচ্ছেন, স্বস্তি কিন্তু হবে না।
# পর্যাপ্ত পরিমাণ না ঘুমোলেই শরীরে লেপটিন হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে। যে কারনে বেশি ভাজাভুজি, মিষ্টি খাওয়ার ঝোঁকও তখন বাড়ে।
# উদ্বেগ কিংবা মানসিক চাপ বেড়ে গেলে কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণও তখন বেড়ে যায়, যা ইনসুলিনের ভারসাম্যও নষ্ট করে। আর তখন মিষ্টি খেতে মন চায়।
কীভাবে মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা কমাবেন?
# মিষ্টি খেতে ইচ্ছে হলে এক গ্লাস পানি খেয়ে নিতে পারেন। বেশি মিষ্টি খেলে অনেক সময় শরীরে পানির পরিমাণ কমে যায়, তাই সুস্থ থাকতে প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি আপনাকে খেতে হবে।
# বেশি করে সবুজ শাকসব্জি খান। এতে করে শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ঢুকবে ও খনিজ-ভিটামিনের ঘাটতিও পূরণ হবে। যে কারণে মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছেও কমে আসবে।
# আবার মাল্টিভিটামিন খেলে শরীরে জরুরি পুষ্টিগুণের ঘাটতিও হবে না। আর তাহলে মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতাও তখন কমে আসবে।
# পরিমাপ মতো প্রোটিন খেতে হবে। মাছ, মাংস কিংবা ডিম খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। আর তখন খিদেও কম পায়। খিদের মুখে বয়েল ডিম খেতে পারেন। তাহলে মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতাও দূর হবে।
# আর মিষ্টি খেতে সাধ জাগলেই স্ট্রবেরি, কমলালেবু, আঙুর কিংবা মুসাম্বির মতো ফল খেতে পারেন। তাহলে চিনি খাওয়ার ইচ্ছাও তখন কমে আসবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org