দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঘুম থেকে উঠেই সকাল বেলা দুধ চা খেতে বারণ করেছেন চিকিৎসকরা। তাই ঘুম হতে উঠেই হয়তো লিকার চায়ে চুমুক দেন। অনেকেই আবার দ্রুত ওজন কমাতে কালো কফিও খেয়ে থাকেন। তাহলে লিকার চা ভালো নাকি কালো কফি? কোনটির বেশি উপকারী?
কারা কোনটি খাবেন?
‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ এপিডেমোলজি’তে বলা হয়েছে যে, এক কাপ কালো কফি খেলেই শরীরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ঢোকে। কালো কফিতে থাকে ম্যাগনেশিয়াম এবং পটাশিয়াম। তাই যারা খুব দ্রুত ওজন কমাতে চাইছেন, তারা সকাল বেলায় কালো কফি খেতে পারেন। ভারি ব্যায়াম যেমন- ওয়েট ট্রেনিং কিংবা কার্ডিও করলে শরীরচর্চার পূর্বে কালো কফি খাওয়া যেতে পারে। তবে যারা সারাদিন বসে কাজ করেন, তারা কালো কফি মেপে তবেই খাবেন। এতে ক্যাফিনও থাকে ভরপুর মাত্রায় যা হজম নাও হতে পারে। বিকেলের দিকে কালো কফি না খাওয়াই শ্রেয়। গ্যাসের সমস্যা কিংবা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা যাদের বেশি, তারা কালো কফি কম খাবেন। সারাদিনে এক কাপ খেলেই ভাল। আবার যাঁরা অনিদ্রার সমস্যায় ভোগেন তাঁরা রাতের দিকে একেবারেই কালো কফি কখনও খাবেন না। এতে করে ঘুমের বারোটা বেজে যাবে। আবার যারা রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন, বা কোলেস্টেরল বেশি তারাও কালো কফি এড়িয়ে চলায় ভালো।
লিকার চা
আর চিনি ছাড়া লিকার চা সকালের জন্য আদর্শ সময়। দুধ চা, কফির পরিবর্তে লিকার ভালো বিকল্প। ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় লিকার চা। চিনি ছাড়া কালো চা নিয়মিত খেলে ফুসফুস, স্তন, প্যানক্রিয়াসে টিউমারের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখাও সম্ভব। নিয়মিত এই কালো চা খেলে রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকে। সাধারণ যারা কায়িক পরিশ্রম কম করেন, তারা কফির পরিবর্তে লিকার চা খেলেই উপকার পাবেন বেশি। লিকার চা’য়ে আদা, দারচিনি, গোলমরিচ এবং মধু মিশিয়ে খেলে সর্দি-কাশির সমস্যা থেকেও রেহাই পাওয়া যায়। যাদের ঠাণ্ডা লাগার ধাত, তারা সকালে লিকার চা খেলে সারাদিনই শরীর তরতাজা থাকবে।
একটি বিষয় হলো লিকার চা খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে। দিনে প্রায় ৬ হতে ১২ কাপ চা খাচ্ছেন মানেই প্রতিদিন ৪০০-৫০০ মিলিগ্রাম ক্যাফিন প্রবেশ করছে আপনার শরীরে। এর ফলও কিন্তু হবে উল্টো। দিনে ২ কাপ লিকার চা’ই যথেষ্ট। তবে এর বেশি খেতে হলে চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org