দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেক সময় দেখা যায় বাড়িয়ে যারা বয়োজ্যণ্ঠ রয়েছেন তাদের ওজন কমে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি হলে দেরি না করে প্রথমেই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। সেইসঙ্গে মেনে চলুন কিছু নিয়ম।
অনেক সময় দেখা যায় আপনার বাড়িতে যে বয়স্ক ব্যক্তি অর্থাৎ আপনার মা কিংবা বাবার জন ক্রমাগতভাবে কমে আসছে। খেয়াল করে দেখলেন যে, গত কয়েক মাস ধরেই ওজন কমছে। দিন দিন রোগা হয়ে যাচ্ছেন। ৬০ বছরের বেশি মানুষদের ক্ষেত্রে এই ধরনের সমস্যা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। অপ্রত্যাশিতভাবে ওজন কমানো রুখতে চিকিৎসকের পরামর্শ যেমনিভাবে প্রয়োজন, তেমনি দরকার যত্নও। তারও আগে জানতে হবে ওজন হ্রাসের কারণগুলো আসলে কী?
কী কী কারণে বয়স্কদের ওজন কমে যেতে পারে
# খুব কম খাবার খাওয়া।
# খাবার কেনার মতো অর্থের অভাব।
# দোকান থেকে কেনাকাটা বা নিজে রান্না না করতে পারা।
# বিষণ্ণ মন, একাকিত্ব, অবসন্নতা, বিচ্ছিন্ন বোধ করা ও বেশিরভাগ সময় একা একা খাবার খাওয়া।
# খাবার গিলতে অসুবিধা, মুখ কিংবা দাঁতের সমস্যা।
# খাবারের গন্ধ কিংবা স্বাদ অপছন্দ, চিবিয়ে খাবার হজম করতে না পারা।
# ক্যান্সার, হার্টের অসুখ ও আলসার কিংবা পিত্তথলির রোগের মতো কোনও অসুস্থতা থাকা।
# ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে অনেক সময় বমি বমি ভাব ও বমি, গিলতে অসুবিধা, স্বাদ ও খিদে কমে যাওয়া।
বয়স্কদের ওজন হ্রাস কখন উদ্বেগের কারণ হতে পারে
# কোনও প্রচেষ্টা ছাড়াই কেও যদি গত ১২ মাসে শরীরের মোট ওজনের ৪% হতে ৫% ওজন কমে যায়।
# কোনও প্রচেষ্টা ছাড়াই ৫ হতে ১০ বছর কিংবা তার বেশি সময়ের মধ্যে ১০% কিংবা তার বেশি ওজন কমে যাওয়া।
# অপ্রত্যাশিত ওজন হ্রাস শরীরের উপর গুরুতর কোনো প্রভাবও ফেলতে পারে। তাই দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
অপ্রত্যাশিত ওজন হ্রাস এড়ানোর কিছু উপায়সমূহ
সারাদিনের খাদ্যাভাসে ছোটোখাটো কিছু পরিবর্তন আনলে অপ্রত্যাশিত ওজন কমানো যেতে পারে।
# পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার খেতে হবে। অনেক বয়স্ক ব্যক্তি পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার খান না। ফলে ওজন হ্রাস এবং ভিটামিন ও খনিজ ঘাটতি দেখা দেয়
# ক্যালোরি ও প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া জরুরি। খাদ্যতালিকায় ডিম, দুধ, মুরগির মাংস, মাছ, বাদাম, ছানা ইত্যাদি থাকাটা জরুরি।
# খাবারে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকাটা ভীষণ প্রয়োজন।
# দাঁতের শক্তি বুঝে বয়স্কদের খাবার বাছাই করা প্রয়োজন। যাতে খাবার চিবোনোয় অনীহা না থাকে।
# মাংস, শাকসবজি, দানা শস্য খেতে হলে তা ভালো করে সেদ্ধ করে খাওয়ােনো জরুরি।
# খিদে বাড়াতে হলে শারীরিক কার্যকলাপও জরুরি। ঘরের হালকা কাজ, বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো শরীরচর্চা করলে কিংবা হাঁটলে খিদে বাড়তে পারে।
এরপরও শরীরে ওজন কমার পিছনে নানা কারণ থাকতেই পারে। তাই চিকিৎসকের নির্দেশ ও ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org