দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মৌরির গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মৌরি শরীরের প্রদাহ কমাতেও পারে। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ। মৌরিতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান, যা পেটের সমস্যা কমাতেও সহায়তা করে। আর কী কী উপকার করে?
খাওয়ার পর কেবলমাত্র মুখশুদ্ধি হিসেবেই নয়, মৌরির গুণও রয়েছে অনেক। ভরপুর ভূরিভোজের পর খানিকটা মৌরি মুখে ফেললে দেখবেন গা গোলানো ভাবটাও কমে যাবে। মৌরি খেলে হজমও ভালো হয়। ফাইবার সমৃদ্ধ মৌরি অন্ত্রের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। মৌরির গুণের শেষ কিন্তু এখানেই নয়।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মৌরি শরীরের প্রদাহ কমাতেও পারে। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ। মৌরিতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান, যা পেটের সমস্যা কমাতেও সহায়তা করে। এমনকি পেটে কোনও সংক্রমণ দেখা দিলে তা কমাতেও পারে এই মৌরি।
মৌরি কেবল পানিতে ভিজিয়ে খেলেই যে উপকার হবে তা কিন্তু নয়, আরও অনেক রকমভাবেই খাওয়া যায়। সঠিক নিয়ম মানলে মৌরি হজমশক্তিও উন্নত করবে, শরীর হতে টক্সিন কিংবা দূষিত পদার্থ দূর করবে।
মৌরি কী কী পদ্ধতিতে খাবেন?
কাঁচা চিবিয়ে খাওয়া
খাওয়া-দাওয়ার পর কাঁচা মৌরি চিবিয়ে খেলে তার রস হজমে সহায়তা করতে পারে। মৌরির রসে এমন উৎসেচক থাকে যা শরীরের জন্যও ভালো। তবে এক চামচের মতো মৌরি খেতে হবে, এর বেশি কিন্তু নয়।
মৌরি ভেজানো পানি
এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ মৌরি সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে তার পানি খেলে পেট ভালো থাকবে, শরীরও ঠাণ্ডা হবে। মৌরি ভেজানো পানি ডিটক্স পানীয়ের কাজ করে যা শরীরের প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে।
মৌরির চা খেতে পারেন
মৌরি দেওয়া চা’য়ে রয়েছে প্রাকৃতিক উপাদান যা ওজন কমাতেও ভীষণভাবে সাহায্য করে। চায়ের পানি ফোটানোর সময় এক চা চামচ মৌরি তাতে ফেলে দিতে হবে। দুধ ও চিনি দিলে চলবে না। এই চা নিয়মিত খেলে ওজন যেমন কমবে, তেমনি কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমতে থাকবে।
মধু দিয়ে মৌরি খাওয়া
মধুর সঙ্গে মৌরি খেলে উপকার হয় সেটি হয়তো অনেকেই জানেন না। মৌরি এবং মধু দুইয়েরই অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল গুণ রয়েছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। এক চামচ মৌরি থেঁতো করে তার রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে হজম সংক্রান্ত যে কোনও রকম সমস্যায় কমবে। পেটের গোলমাল, পেট ফাঁপা, গ্যাস-অম্বলের সমস্যা থেকে রেহাই দেবে।
রান্নায় মৌরি
রান্নার স্বাদ বাড়ানোর জন্য অনেকেই মৌরি ফোড়ন দেন। রান্নায় মৌরি দেওয়া স্বাস্থ্যকর বলে মনে করছেন পুষ্টিবিদরা।
জিরা-মৌরির পাউডার
ভরপেট খাওয়ার পর যদি কখনও হজমে সমস্যা হয়, তাহলে ডাইজিন জাতীয় ওষুধ না খেয়ে মৌরি এবং জিরার চূর্ণ খেতে পারেন। এক চামচ মৌরি এবং এক চামচ জিরা ভালো করে পিষে নিতে হবে। মিহি চূর্ণ তৈরি হয়ে গেলে সেটি কৌটাতে ভরে রেখে দেবেন। প্রতিদিন খাবার খাওয়ার পর উষ্ণ পানিতে এক চামচ ওই পাউডার মিশিয়ে খেলে হজমের সমস্যাও দূর হতে পারে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org