দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মাদারীপুরে জাগো’র স্বেচ্ছাসেবী স্কুল স্থানীয় রাজনৈতিক নেত্রীর তোপের মুখে পড়েছে, সাধারণ শিশুদের শিক্ষার সুযোগ করে দিতে প্রতিষ্ঠা করা জাগো’র ব্যানারের এই স্কুল দ্রুত ওই স্থান থেকে উঠিয়ে নিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় কিছু যুবকের মাধ্যমে।
মাদারীপুরের জাগো’র স্কুল কেন তুলে দেয়া হবে কিংবা কেন সেখানে এই স্কুলের কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবেনা এমন বিষয়টি উঠে এসেছে জাগো’র প্রতিষ্ঠাতা করভি রাখ্শান্দ এর ফেসবুক স্ট্যাটাসে। তিনি তার ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে জানান, স্থানীয় আওয়ামীলীগ এর নেত্রী এবং মাদারীপুর অঞ্চলের মহিলা বিষয়ক সাধারণ সম্পাদক রেহানা পারভিন এর ভাগ্নে সবুজ এবং তার আরও কিছু সহযোগী মিলে মাদারীপুর জাগো প্রোজেক্ট অফিসারকে সেখান থেকে জাগো’র সকল সমাজ কল্যাণ মূলক কাজ বন্ধ ঘোষণা করে চলে যেতে বলে।
এর আগেও সবুজ এবং তার সহযোগীরা মিলে বিভিন্ন ভাবে জাগো’র কর্মকর্তাদের স্কুলের কাজ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এ বিষয়ে করভি রাখ্শান্দ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, “স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেত্রী রেহানা পারভিন তার ভাগ্নে সবুজকে জাগো’র মাদারীপুর প্রোজেক্টের প্রোজেক্ট অফিসার হিসেবে নিয়োগ দিতে বলে আমাদের, তবে আমাদের পক্ষে কোন অযোগ্য কিংবা এই কাজের জন্য নির্দিষ্ট যোগ্যতা না থাকলে কাউকেই নিয়োগ দেয়া সম্ভব হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা বিষয়টি তাদের নিশ্চিত করলে, তারা জানান সবুজকে যদি জাগো’র মাদারীপুর প্রোজেক্টের প্রোজেক্ট অফিসার হিসেবে নিয়োগ না দেয়া হয় তবে এখানে জাগো’র কোন কার্যক্রম চলতে পারবেনা! বিষয়টি সত্যি জাগো’র সকল কর্মকর্তাকে এবং আমাকে অবাক করেছে।”
এর মাঝে রবিবার সবুজ এবং তার আরও পাঁচ সহযোগী জাগো অফিসে এসে হুমকি দিয়ে গেছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মাদারীপুর থেকে জাগো’র সকল কার্যক্রম গুটিয়ে নিতে।
এমন অবস্থায় জাগো’র প্রতিষ্ঠাতা করভি রাখ্শান্দ ব্যক্তিগত ভাবে সবুজের সাথে কথা বলেন এবং তাকে বুঝানোর চেষ্টা করেন এটি গরীব শিশুদের জন্য গড়া স্কুল এবং এখানে শিশুরা শিক্ষার সুযোগ পাবে। সবুজ Korvi Rakshand জানান, যা কিছু হচ্ছে সব কিছুই রেহানা পারভিন এর নির্দেশেই হচ্ছে, সে রেহানা পারভিন এর নির্দেশ অনুসরণ করছে কেবল। Korvi Rakshand বলেন, বর্তমানে এটি কেবল চাকরি দেয়ার পর্যায়ে নেই, ক্ষমতাবানরা চাচ্ছেন জাগো’র এই স্কুল মাদারীপুর থেকে উঠিয়ে দিতে।
জাগো’র পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে স্থানীয় মেয়র ও নেতাদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও কোনো কাজ হয় নি, পর পর চার দিন সবুজ দল-বল নিয়ে এসে স্কুল বন্ধ করে দিয়ে গেছে, এক্ষেত্রে স্থানীয় পুলিশও কোনো সহযোগিতা করে নি। এমন অবস্থায় জাগো দুঃস্থ বাচ্চাদের স্কুল চালাতে পারবে কিনা তাই প্রশ্নের সম্মুখীন।
উল্লেখ্য, মাদারীপুরের জাগো’র এই স্কুল তৈরির জন্য ভূমী দিয়েছেন স্থানীয় এক ব্যক্তি এবং তার পরিবার, তারা একই সাথে এই স্কুলের সকল স্থাপনা নির্মাণের খরচও বহন করেছেন।
জাগো একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান, এটি ২০০৭ সালের এপ্রিল মাস থেকে এর কার্যক্রম শুরু করে। জাগো’র প্রধান কাজ হচ্ছে দুঃস্থ সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করা, তাদের বিনামূল্যে শিক্ষা এবং শিক্ষা গ্রহণের বিনিময়ে খাবার এবং চিকিৎসা সুবিধা দেয়া।