দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কম সময়ে মহাকাশ স্টেশন সফর করার স্বপ্ন অবশেষে সফল হলো। এখন দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আসা যাবে মহাকাশ স্টেশন থেকে! সম্প্রতি ৬ ঘণ্টারও কম সময়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন রাশিয়ার নভোচারীরা। আগে মহাকাশ স্টেশনে যেতে সময় লাগত দুই দিন।
অনেক দিন ধরেই মহাকাশ গবেষকদের চেষ্টা ছিল, কীভাবে পৃথিবী আর মহাকাশের দূরত্ব কমানো যায়। সেই স্বপ্ন সফল করে রাশিয়ার মহাকাশযান সয়ুজ টিএমএ-০৮এমে করে মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছেছেন দু’জন রাশিয়ান ও একজন নাসার নভোচারী। সয়ুজ টিএমএ-০৮এম মহাকাশযানটি ২৯ মার্চ কাজাখস্তানের বৈকানুর মহাকাশকেন্দ্র থেকে আন্তর্জাতিক মান সময় ২৮ মার্চ ৮টা ৪৩ মিনিটে যাত্রা শুরু করে। ৬ ঘণ্টা পর ২টা ২৮ মিনিটে এটি সফলভাবে মহাকাশ স্টেশনে অবতরণ করে। নির্ধারিত সময়ের চার মিনিট আগেই এই সফল অবতরণ নিশ্চিত করে নাসা। এটাই সবচেয়ে কম সময়ে মহাকাশে পৌঁছানোর রেকর্ড। আগে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছতে প্রায় ৪৫ ঘণ্টা ব্যয় হতো। দু’দিন সময় লাগার কারণ, মহাকাশ স্টেশন ২৫০ মাইল দূরে থেকে পৃথিবীর চারপাশে অনবরত ঘুরছে, তাই এর সঠিক পয়েন্টে পৌঁছানো খুব সহজ নয়। এর জন্য অবতরণের আগে মহাকাশযানগুলোকে ১৬ বার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে হয়। প্রতিবার প্রদক্ষিণ করতে ৯০ মিনিটের মতো সময় লাগে। কিন্তু সয়ুজ যানটি মাত্র চারবার প্রদক্ষিণ করেই সফলভাবে অবতরণ করেছে মহাকাশ স্টেশনে। নাসার মুখপাত্র কেলি হামফ্রিজ এ ব্যাপারে জানান, যন্ত্রপাতি ও কম্পিউটার সফটওয়্যারের উন্নয়নের ফলে এ ঐতিহাসিক ফ্লাইটটি সম্ভব হয়েছে।
মহাকাশযানের ত্রুক্র হিসেবে রয়েছেন রাশিয়ান মহাকাশ সংস্থার পাভেল ভিনোগ্রাদোভ ও আলেক্সান্দ্রে মিসুরকিন ও নাসার ক্রিস ক্যাসিডি। প্রায় ৬ মাস মহাকাশ স্টেশনে থাকবেন তারা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাত্র ৬ ঘণ্টায় মহাকাশে যাওয়ায় মহাকাশ গবেষণায় অনেক সুবিধা হবে। মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছানোর পর এক ভিডিওবার্তায় পাভেল ভিনোগ্রাদোভ বলেন, স্বল্পতম সময়ে মহাকাশে গিয়ে নভোচারীরা একদমই স্বাভাবিক রয়েছে। তিনি বলেন, এর সুবিধা হলো মহাকাশযাত্রীরা তাৎক্ষণিকভাবে ভরহীনতা অনুভব করতে পারে না। দ্বিতীয় সুবিধাটা হচ্ছে, মহাকাশ স্টেশনে দ্রুত পাঠানো জিনিসপত্র খুব তাড়াতাড়ি পচে যায়। এখন দূরত্ব কমে যাওয়ায় সে সমস্যাটা আর থাকবে না। এর আগেও ১৯৭ দিন মহাকাশে ছিলেন পাভেল ভিনোগ্রাদোভ। খবর :এএফপি সিএনএন অনলাইন।