দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এমন একটি খবর পড়ে অনেকেই আশ্চর্য হবেন। তবে খবরটি সত্য। একটি চীনা প্রতিষ্ঠান এবার মশা উৎপাদন করে বাইরের পরিবেশে ছেড়ে দিচ্ছে!
মশার কথা শুনলেই ডেঙ্গুর কথা মনে পড়ে। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার মতো রোগের কারণ হলো এই মশা। কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠান মশা উৎপাদন করছে এ কথা শুনলে বিস্মিত হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। ঠিক এমন একটি ঘটনাই ঘটেছে চীনে। চীনের গোয়ানডং রাজ্যের এক কারখানার আধুনিক প্রযুক্তি সুবিধার পরীক্ষাগারে প্রতি সপ্তাহে লাখ লাখ মশা উৎপাদন করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই মশা আবার পরে তা ছেড়েও দেওয়া হচ্ছে বাইরের পরিবেশে। তবে ঘাবড়াবার কিছু নেই, এই মশা আপনার কোনো ক্ষতি করবে না। বরং উপকার করবে। কারখানায় উৎপন্ন পুরুষজাতীয় মশারা কাওকে কামড়ায় না, শুধু ফল-ফুল হতে মধু খায় আর ডেঙ্গু মশা নির্বংশের কাজ করে!
গবেষকেরা বলছেন, গত বছরে চীনে ডেঙ্গুর ব্যাপক প্রকোপ দেখা দেওয়ায় বহু লোক মারা গিয়েছিল। ডেঙ্গুর আক্রমণ ঠেকাতে বিশেষভাবে জীবাণুমুক্ত এবং অনুৎপাদনশীল এই মশা উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির নীতি নির্ধারকরা। গুয়াংজু সায়েন্স সিটিতে তৈরি করা হয় মশা উৎপাদনের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় একটি পরীক্ষাগার।
চীনের পিপলস ডেইলি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে, বিশেষভাবে জন্মানো এই মশা দিয়ে ডেঙ্গু মশাকে নির্বংশ করা সম্ভব হবে। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গুয়াংজু পরীক্ষাগারে যে লাখ লাখ মশা জন্মানো হচ্ছে তা সপ্তাহান্তে সাজি আইল্যান্ডে উন্মুক্ত করা হচ্ছে। প্রকল্প পরিচালক জি ঝিংওং এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
সংবাদ মাধ্যমকে গবেষকেরা বলছেন, এ মশা উন্মুক্ত করার কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমবে। কারণ ল্যাবে উৎপন্ন মশাগুলো ডেঙ্গুর জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। উৎপাদিত এসব মশার কারণে ডেঙ্গুর ডিম আর ফুটবে না।
গবেষকেরা দাবি করেছেন, তাঁদের পরীক্ষাগার হতে যে পুরুষ মশা ছাড়া হয় তাতে কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই। এমনকি এই মশাগুলো কামড়ায়ও না। পরীক্ষা করে এর সফলতাও পাওয়া গেছে। এ পরীক্ষার কারণে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত মশার জন্মনিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর সারাবিশ্বে অন্তত ২২ হাজার মানুষ ডেঙ্গুর আক্রমণে মারা যায়। যাদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে।