The Dhaka Times Desk সন্তান জন্মের ক্ষেত্রে পুরুষের ভূমিকা আমরা সবাই জানি। কিন্তু এখন থেতে আর সন্তান জন্মের ক্ষেত্রে পুরুষের কোনো প্রয়োজন পড়বে না!
এমন একটি দাবি করেছেন চীনের বিজ্ঞানিরা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্টেম সেল নামে প্রভাবশালী একটি মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণা প্রতিবেদনটি।
ওই জার্নালে নানজিং মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী ড. জিয়াহাও শা এক সাক্ষাৎকারে দাবি করে বলেছেন, তার নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষকদল কৃত্রিম শুক্রাণু তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। এই উদ্ভাবিত শুক্রাণুর সাহায্যে ইতিমধ্যেই জন্ম নিয়েছে ইঁদুর।
ড. জিয়াহাও শা আরও বলেন, গবেষণা ঠিকপথে এগোলে সেদিন আর খুব বেশি দূরে নেই, যখন সন্তান জন্মের জন্য আর পুরুষের শরীরে সৃষ্ট শুক্রাণুর কোনো প্রয়োজন হবে না। পরীক্ষাগারে উৎপন্ন শুক্রাণুর সঙ্গে নারীর ডিম্বাণুর মিলন ঘটালেই সৃষ্টি করা যাবে সন্তান!
ডেইলি মেইল জানিয়েছে, যে পদ্ধতিতে ড. জিয়াহাও গবেষণাটি চালিয়েছেন, সেটির নাম ‘স্টেম সেল টেকনিক’। যদিও পদ্ধতিটি অনেক পুরোনো ধাচের। তবে এই পদ্ধতিতে কিছু নতুন সংযোজন করায় বিজ্ঞানীদের এই গবেষণাকে সফল রূপ দিয়েছে।
ড. জিয়াহাও বলেছেন, এই পদ্ধতিতে চিকিৎসকরা প্রথমে ইঁদুরের ভ্রুণ হতে স্টেম সেল সংগ্রহ করেন। তারপর সেটিকে বিশেষ কিছু রাসায়নিক মিশ্রণের মধ্যে রাখা হয়। মিশ্রণে রাখার পর স্টেম সেলটি ভেঙে গিয়ে পরে ‘জার্ম সেলে’ রূপান্তরিত হয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটিই হলো প্রকৃতপক্ষে শুক্রাণু তৈরির প্রথম ধাপ।
তারপর কৃত্রিমভাবে তৈরি ওই ‘টেস্টিকিউলার সেলের’ মধ্যে রাখা হয় ওই জার্ম সেলটি। ল্যাবরেটরিতেই শুক্রথলির মতো পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ওই টেস্টিকিউলার সেলের মধ্যে মেশানো হয় টেস্টোস্টেরন হরমোন। আর ঠিক এভাবেই তৈরি হয়েছে বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম শুক্রাণুটি!
এই সাফল্যের পরও বিজ্ঞানীরা অবশ্য একে পুরোপুরি শুক্রাণু বলেন নি। এর নাম দিয়েছেন ‘স্পার্মাটিডস’। কারণ হলো, কৃত্রিমভাবে তৈরি শুক্রাণুতে মাথার অংশ ঠিক থাকলেও এটিতে লেজের অংশটি থাকে না। তাছাড়া এই ‘স্পার্মাটিডস’ শুক্রাণুর মতো সাঁতার কেটে এগিয়ে যেতেও অক্ষম।
ড. জিয়াহাও শা বলেছেন, এই আবিষ্কার যদি মানুষের ক্ষেত্রে নিরাপদ হয় কিংবা সফলভাবে প্রয়োগ করানো সম্ভব হয়, তাহলে বিশ্বজুড়ে বন্ধ্যাত্ব সমস্যাটি পুরোপুরিভাবে নিরসন হবে বলে আমরা মনে করি।