The Dhaka Times Desk দুনিয়াতে যে আরও কতো কিছু আমাদের দেখতে হবে তার শেষ নেই। কারণ বয় বেয়ারার পর রোবটের কথা শোনা যায়। এবার শোনা গেলো ভয়ংকর এক প্রাণী ডাইনোসরের কথা! ডাইনোসর নাকি পরিবেশন করছে রেস্টুরেন্টের খাবার!
পরিবার কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে আপনি খেতে গিয়েছেন হোটেল বা রেস্টুরেন্টে। আপনার অর্ডার নিতে যে হাজির হয়েছে তাকে দেখে আপনি সত্যিই হতবাক হয়ে গেছেন! কারণ আপনার অর্ডার নিচ্ছে এবং খাবার পরিবেশন করছে ডাইনোসর!
এক ডাইনোসর আপনার কথা মতো খাবারের অর্ডার নিচ্ছে এবং খাবার শেষে বিলও বানিয়ে দিচ্ছে, আবার বিদায়ের সময় থ্যাঙ্ক ইউও বলছে ওই ডাইনোসর!
আপনার মনে হতে পারে সেই জুরাসিক পার্কের কোনও দৃশ্যের কথা। তবে এটি কিন্তু তা নয়। জাপানের টোকিওতে ‘হেন না’ রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে আপনার এমনই অভিজ্ঞতা হবে।
সত্যিই বিচিত্র এক অভিজ্ঞতা বটে। ‘হেন না’ হলো এমনই একটি রেস্টুরেন্ট যেখানে আপনাকে সার্ভ করবে ডাইনোসরবেশী রোবোটেরাই! ‘হেন না’ কথাটির মানেই হল অদ্ভুতরকম কোনো কিছু।
বিশ্বের প্রথম রোবট কর্মচারীওয়ালা রেস্টুরেন্ট হলো এই ‘হেন না’ রেস্টুরেন্ট। রিসেপশন ডেস্কেও থাকে রোবট। দেখে মনেই হতে পারে এক্ষুণি বুঝি জুরাসিক পার্কের শ্যুটিং শুরু হতে চলেছে, তবে না, মাথায় টুপি পরা এই রোবো-ডাইনোসরা আপনাকে নিয়ে যাবে আপনার পছন্দ মতো টেবিলে।
তারপর এগিয়ে দেবে মেনু কার্ড। প্রথমেই আপনাকে এরা ভাষা বেছে নেওয়ার অপশন তুলে দেবে। জাপানি, ইংরেজি, চীনা বা কোরিয়ান ভাষাতে আপনি কথা বলতে পারবেন এই রোবোটবেশি ডাইনোসরদের সঙ্গে।
আসলে বিষয়টি এমনই অদ্ভুত যে অনেকেই ঘাবড়ে যেতে পারেন। বিশালদেহী সব ডাইনোসর ছোট্ট ছোট্ট থালায় আপনাকে খাবার পরিবেশন করছে দেখে অনেকের কাছেই অদ্ভুত মনে হয়। টোকিওর ‘হেন না’-এর ম্যানেজার ইউকিও নাগাই স্বীকার করেছেন অনেক গ্রাহকই প্রথমে এখানে এসে ঘাবড়ে যান।
ম্যানেজার ইউকিও নাগাই বলেন, “আমরা সত্যিই মাঝে মাঝে বুঝতে পারি না অতিথিরা কখন মানুষের সার্ভিস চান বা কখন আবার ডাইনোসর-রোবোটের। তবে অতিথিদের জন্য প্রতিটি রুমেই রয়েছে মিনি- রোবট। অনেকটা স্টার ওয়ার্স ড্রয়েড বিবি-8এর মতো দেখতে এরা।
এরা আপনার সব কাজ করে দিতে পারে। চ্যানেল বদলে দেওয়া থেকে শুরু করে, গান পালটিয়ে দেওয়া। এখানে সব কিছুই হয় যান্ত্রিক। এমনকি বড় ট্যাঙ্কের মধ্যেকার মাছগুলোও ব্যাটারিচালিত হয়ে থাকে।
এইসব “ডাইনোসরগুলো আবার দেখতে বেশ চিত্তাকর্ষকও। আমার মনে হয় আমার ছেলেরও খুব মজা লাগবে বিষয়টি” এমন কথা বলেছেন চিগুসা হোসই নামে একজন কাস্টমার। তিন বছর বয়সী ছেলের সঙ্গে তিনি হোটেলে আসেন।
অপর আরেকজনে ভাষায়, “আমার বাচ্চা তো সত্যিই খুব খুশি। রুমে একটা ডিম-আকৃতির রোবোট রয়েছে। ও তো তার সঙ্গে খেলছে।”
২০১৫ সালে নাগাসাকিতে প্রথম ‘হেন না’ রেস্টুরেন্ট খোলা হয়। পরের বছরই বিশ্বের প্রথম রোবোট স্টাফওালা হোটেল হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম ওঠে।
এই ফুড চেন পরিচালনাকারী ট্রাভেল এজেন্সিটি দেশের মধ্যে মোট ৮টি হোটেল পরিচালনা করে। এখানকার সব কর্মচারীই রোবট। কিছু দেখতে ডাইনোসরের মতো আবার কিছু মানুষের মতো।
ম্যানেজার ইউকিও নাগাই বলেছেন যে, ফ্রন্ট ডেস্ক বা রিসেপশন হতে শুরু করে টেবিল পরিষ্কার করা সবকিছুতেই পারদর্শী এইসব রোবোটগুলো। যে কারণে মানুষের কর্মসংস্থান কমে আসছে। তার ভাষায়, “হোটেলগুলিতে পর্যাপ্ত শ্রমিকের জোগান দেওয়া খুব কঠিন হয়ে উঠছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্যই আমাদের রোবোটরা অতিথিদের সেবা দিচ্ছে”।
সূত্র: এনডিটিভি
Watch the video
https://www.youtube.com/watch?v=wLwPFvxC-SY