দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমের আলোচিত খবর হলো থাইল্যান্ডের কিশোর ফুটবল দলের গুহায় আটকে পড়া। তবে কেনো গুহার ভেতরে গিয়েছিল থাইল্যান্ডের কিশোর ফুটবলাররা? সেই প্রশ্ন সবার মনে।
থাইল্যান্ডে গুহায় আটকে পড়া ১৩ জনের মধ্যে ৮ জনকে (আজ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত) উদ্ধার করা হয়েছে। রাতের জন্য অভিযান স্থগিত রয়েছে, আগামীকাল (মঙ্গলবার) দিনে বাকি ৪ কিশোরসহ ৫ জনকে উদ্ধার করা হবে। উদ্ধারের পর পরই শিশুদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
গতকাল রবিবার (৮ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল ১০টা হতে ১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে দেশটির অত্যন্ত সুদক্ষ ডুবুরি দল। উদ্ধারকারী দলে ১৩ জন বিদেশি ডুবুরি এবং থাই নৌবাহিনীর ৫ জন ডুবুরি রয়েছেন বলে জানা গেছে। গতকাল ৪ জন ও আজ দিনে আরও ৪ জন মোট ৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
থাইল্যান্ডের গুহায় আটকে পড়া কিশোর ফুটবলারদের নিয়ে সকলেরই একই কৌতূহল- তারা কেনো গুহার অতটা ভেতরে গেলো?
কানাডার সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউজ বলেছে, অতোটা ভেতরে তারা যেতে চায়নি। বৃষ্টির পানিতে গুহার বের হওয়ার পথ ডুবে যাওয়ায় তারা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ভেতরের দিকে যেতে হয়তো বাধ্য হয়েছিল। গুহার ভেতরে যতোটা পানি বেড়েছে ততোটা তাদের সরে যেতে হয়েছে।
জানা গেছে, ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ থাম লুয়াং নাং নন নামক গুহার ৪ কিলোমিটার ভেতরে বর্তমানে তাদের অবস্থান। গুহা হতে বের হওয়ার অনেক স্থানেই পানি জমে রয়েছে। তাদেরকে সাঁতরে বের হতে হবে সেখান থেকে। প্রথমে তাদেরকে স্কুবা ডাইভিং শেখানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। বর্তমানে পরিকল্পনা করা হয়েছে যে, ডুবুরিরা তাদের সঙ্গে করে নিয়ে বের হবেন।
থাই নিউজ এজেন্সির প্রকাশিত ইলাস্ট্রেশনে দেখানো হয়েছে যে, ডুবুরিদের অক্সিজেন সিলিন্ডার হতে শিশুদের পানির নিচে অক্সিজেন সরবরাহ করা হবে। বন্যার পানিতে আটকে যাওয়া গুহার যে শুকনো উঁচু জায়গাটিতে গত দু’সপ্তাহ ধরে এই দলটি আশ্রয় নিয়েছে। তাদের উদ্ধারে ১৮ জন অভিজ্ঞ ডুবুরি কাজ করছেন।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, একেকজন কিশোরকে দুই জন করে ডুবুরি তাদের তত্বাবধানে বের করে আনছেন। পুরো পথ পার হতে তাদের প্রায় ৬ ঘন্টা করে সময় লাগছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আটকে পড়া ১৩ জনকে দুই হতে তিন দিনের মধ্যে বের করে আনা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
শিশুদের পরিবারের পক্ষ হতে জানানো হয়, তাদের ফুটবল কোচ অনুশীলনের পর কখনও তাদের সাঁতারের জন্য নিয়ে যেতেন, আবার কখনও ভ্রমণেও। এমনই একদিন ছিল গত ২৩ জুন, সেদিন তারা গুহার ভেতরে ঢুকেছিল।
কিশোর ছেলেরা ফুটবল প্র্যাকটিস করতে স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে ন্যাশনাল পার্কে গিয়েছিল। তারপর কী হয়েছিল তারা এখনও কেও জানে না। গুহার প্রবেশ-মুখের সামনে ১১টি সাইকেল রাখা দেখতে পান সেখানকার নাঙ্গনন ন্যাশনাল পার্কের একজন কর্মী।
তারপর ওই কর্মী কিশোরদের একজনের পিতামাতাও ন্যাশনাল পার্কের কর্মকর্তাদের জানান যে, তারাও তাদের ছেলের সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগ করতে পারছেন না।
ধারণা করা হচ্ছে প্র্যাকটিস শেষ হয়ে যাওয়ার পর ফুটবলার দলের একজন সদস্যের জন্যে সারপ্রাইজ পার্টির আয়োজন করতেই তারা গুহার ভেতরে ঢুকেছিল।
তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেও কেও বলেছেন, কোচের কোনো মতেই উচিত হয়নি ১১ হতে ১৬ বছর বয়সী ওই শিশুদের নিয়ে থাম লুয়াং নাং নন গুহায় ঢোকা। কারণ হলো, বর্ষাকালে যে গুহা পানিপূর্ণ হয়ে যায় সে বিষয়ে সতর্কতা জানিয়ে গুহার মুখে সাইনবোর্ডও টানানো রয়েছে। তবে শিশুদের পরিবারগুলোর পক্ষ হতে কোচকে অপরাধবোধে ভুগতে বারণ করা হয়েছে। তারা মনে করেন না এতে কোচের কোনো দোষ রয়েছে।
শিশুগুলো সুস্থভাবে উদ্ধার হোক এবং তাদের বাবা-মায়ের কাছে ফিরে যাক- আমরাও সেই কামনা করছি।