দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিভিন্ন দেশে যখন অপরাধীদের চাপে জেলখানার সঙ্কট হয়ে পড়েছে ঠিক তখনি এমন দেশও রয়েছে যেখানে অপরাধীদের অভাবে জেলখানাগুলো বন্ধ হয়ে গেছে অর্থাৎ জেলখানা আছে কিন্তু কয়েদি নেই। তথ্যটি জেনে খুব অবাক হলেও এটাই সত্য।
নেদারল্যান্ডের অনেক জেলখানা কয়েদির অভাবে ইতিমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম অপরাধমূলক আচরণ করে থাকে নেদারল্যান্ডবাসী। কেবল ২০১৩ সালেই ১৩টি জেলখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারপর ২০১৭ সাল পর্যন্ত আরো ৫টি জেলখানা বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির আইনশৃংখলা কর্তৃপক্ষ। ২০১৭ সালের পরিসংখ্যান মতে নেদারল্যান্ডের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৭০ লক্ষ। এই দেশের গড়ে প্রতি ১,০০,০০০ জনসংখ্যায় ৬৯ জন কয়েদি রয়েছে যেখানে আমেরিকায় গড়ে প্রতি ১,০০,০০০ জনসংখ্যায় ৭১৬ জন কয়েদি রয়েছে।
অর্থাৎ সবচেয়ে কম কয়েদির তালিকায় রয়েছে নেদারল্যান্ড আর সবচেয়ে বেশির তালিকায় রয়েছে আমেরিকা। তবে এই জেলখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আরেকটি সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। ওই জেলখানাগুলোতে কর্মরত প্রায় ২০০০ কর্মী বেকার হয়ে পড়ে। যার ৩০ শতাংশকে পরবর্তীতে আইনশৃংখলা বাহিনীতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
২০০৪ সাল থেকে নেদারল্যান্ডে অপরাধীর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে। সবচেয়ে মজার তথ্য হল কিছু জেলখানা সচল রাখতে নরওয়ে থেকে ২৪০ জন কয়েদিকে আনা হয়েছে। রসিকতা করেই বলতে হচ্ছে আমাদের দেশের বর্তমান যে অবস্থা তাতে নেদারল্যান্ডের এই জেলখানাগুলো ভাড়া নেওয়া দরকার হতে পারে।
নেদারল্যান্ডের এই অপরাধী কমে যাওয়ার পেছনে বেশকিছু কারণ রয়েছে। তারমধ্যে অন্যতম হল-
১। দেশটিতে মাদক আইন শিথিল করা হয়েছে। মাদকসেবীদের শাস্তি দেওয়ার পরিবর্তে তাদের পূনর্বাসনে জোর দেওয়া হয়েছে।
২। এঙ্কেল মনিটরিং ব্যবস্থার মাধ্যমে কয়েদিদের জেলে বসিয়ে রাষ্ট্রীয় অন্ন ধবংস না করে, তাদের পায়ে ট্রাকার লাগিয়ে সমাজে বিভিন্ন ইতিবাচক খাতে কাজে লাগানো হচ্ছে। এর ফলে সে নিজের উপার্জন নিজে করতে পারছে এবং সেই সাথে নিজের ভুলগুলো সংশোধন করার সুযোগ পাচ্ছে।
৩। কোনো অপরাধী সাজা খেটে বের হওয়ার পর সে যেন সুস্থধারায় নিজেকে পরিচালনা করতে পারে, সেই জন্য উপযুক্ত কাজের ব্যবস্থ্য করা হয়।
এমন সব উদার ব্যবস্থার কারণেই নেদারল্যান্ডে অপরাধীর সংখ্যা দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে। আর এই কারণেই সেখানকার জেলখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।