দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিষয়টি সবাই একভাবে দেখে না। তবে সমাজে এমন কিছু ব্যক্তি আছেন যারা সব ধর্মকেই সমানভাবে দেখে থাকেন। যেমন এক বৃদ্ধা তাঁর জীবনের সঞ্চিত অর্থ ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে ও ১২ কাঠা জমি দান করলেন মুসলিমদের কবরস্থানের জন্য!
এলাকাতে অনেকেই তাঁকে ‘মাদার টেরেসা’ বলেই ডাকেন। তিনি ভারতের নদিয়ার পলাশিপাড়া হাসপাতালপাড়া এলাকার ঠাণ্ডা গ্রামের পূর্ণিমা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমানে তার বয়স ৭৯ বছর। জন্মস্থান ভারতের হুগলি জেলার শ্রীরামপুরের বল্লভপুরের ঠাকুরবাড়িতে। বাবা ছিলেন অবিনাশ বন্দ্যোপাধ্যায়, আর মা বিমলা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবারটি ছিল খুবই শৃঙ্খলাপরায়ণ।
পূর্ণিমাদেবী রাজ্য সরকারের সমাজকল্যাণ দপ্তরে চাকরি পাওয়ার পর পারিবারিক বিবাদের কারণে ঘর ছাড়তে হয় তাকে। সেই থেকে বিভিন্ন জেলা ঘুরে অবশেষে পলাশিপাড়া ব্লক অফিস হতে ২০০০ সালে অবসর নেন তিনি। বিভিন্ন সময় ভাড়াবাড়িতে থাকার পর অবসরের পূর্বে পলাশিপাড়া সেতুর পশ্চিম পাশে জলঙ্গি নদীর দক্ষিণ তীরে ৫ শতক জমির ওপর শিবমন্দিরসহ দ্বিতল বাড়ি নির্মাণ করেন তিনি। পূর্ণিমাদেবী ওই ঘরে পাকাপাকিভাবে একাই থাকতে শুরু করে দেন। বয়সের ভারে জীর্ণ শরীর হলেও কথাবার্তা এখনও টনটনে রয়েছে তার।’
পূর্ণিমাদেবী বলেন, ‘আমার করে কী লাভ। নিজে সংসার করিনি, ঠাকুরের নাম করে ৭৯টা বছর পার করে দিয়েছি। নিজের ১২ কাঠা জমি মুসলিম ভাইদের অসুবিধের কথা জেনে বিমলা–অবিনাশ সমাধিক্ষেত্র নামে ডিড করে তাদের হাতে কাগজ তুলে দিয়েছি, দাসপাড়া বাসন্তী মন্দির করতেও সহযোগিতা করেছি, খাঁ পাড়ায় আমি দুর্গামন্দির করে দিয়েছি, তারপর নিজের মন্দির–সহ দোতালা বসতবাড়ি ও অবশিষ্ট ৫ লক্ষ টাকা ভারত সেবাশ্রমকে দানও করে দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমার সম্বল বলতে রইলো সামান্য কয়েক হাজার টাকার পেনশন। যে কদিন বাঁচবো, এই অর্থেই চলে যাবে। হাসিমুখে অন্যের সেবা করার মতো আনন্দ থেকে অন্য কিছুতে আছে কিনা তা আমার জানা নেই।’