দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পুরো বিশ্ব যখন সাংবাদিক জামাল খাশোগির নিখোঁজের বিষয়ে উদ্বিগ্ন ঠিক তখন সৌদির ক্রাউন প্রিন্স বলছেন তিনি এই বিষয়ে কিছুই নাকি জানেন না! সৌদি প্রিন্সের সমর্থনে সাফাই গেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও।
সৌদি প্রিন্সের প্রতি সমর্থন জানিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যে, প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান তাকে জানিয়েছেন, সাংবাদিক জামাল খাশোগি নিখোঁজের বিষয়ে পূর্ণ তদন্ত চলছে ও তার নিখোঁজের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
বার্তা সংস্থাএপিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে ট্রাম্প বলেন, ‘কোন কিছু প্রমাণ না হওয়ার আগেই সৌদি আরবকে দোষারোপ করা হচ্ছে’।
তুরস্কের কর্মকর্তারা বলছেন, ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে অভিযান চালালেই প্রমাণ পাওয়া যাবে খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে কিনা। দু’সপ্তাহ পূর্বে তুরস্কে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর হতে নিখোঁজ রয়েছেন সৌদি আরবের ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাশোগি।
এই ঘটনার শুরু থেকেই তুরস্ক দাবি করে আসছে যে, জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে। তবে সৌদি আরব এই অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করে আসছে। খাশোগি নিখোঁজের পর ট্রাম্প প্রথমদিকে েই ঘটনাকে ভয়ঙ্কর ও বর্বর বলে উল্লেখ করেন। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বর্তমানে বলছেন- সৌদি সাংবাদিক নিখোঁজের বিষয়ে পুরোপুরি না জানা পর্যন্ত দেশটির নেতাদের এই নিয়ে দোষারোপ করা উচিত হচ্ছে না বিশ্ববাসীর।
তবে যেভাবে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে বলা হয়েছে, তা যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলোকে বেশ বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে ফেলেছে। অনেক দেশে নতুন করে দাবি উঠছে সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে বিবেচনায় আনার, কেও কেও আবার সৌদি আরবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কথাও ভাবছে।
উল্লেখ্য, সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি গত ২ অক্টোবর দুপুরের দিকে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর যান। স্থানীয় সময় দেড়টার সময় তার অ্যাপয়নমেন্ট ছিল। ওই দূতাবাসের বাইরে ছিলেন তার তুর্কী বান্ধবী হাতিস চেঙ্গিস। খাশোগির অপেক্ষায় দূতাবাসের বাইরে ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করেন হাতিস চেঙ্গিস। কিন্তু তিনি ওই দুতাবাস থেকে ফিরে আসেননি। পরে তিনি পুলিশকে বিষয়টি জানান।
এদিকে খাশোগি নিখোঁজের পর হতেই তাকে হত্যার যে দাবি জানিয়েছেন তুরস্কের কর্তৃপক্ষ তা পুরো বিশ্বকে ব্যাপকভাবে নাড়া দেয়। তথ্যপ্রমাণ হাজির না করতে পারলেও তুরস্কের এমন দাবির কারণে সৌদি আরবের ওপর চাপ বাড়তে থাকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে। মঙ্গলবার রাতে ট্রাম্প তার টুইট বার্তায় জানিয়েছেন প্রিন্স মোহাম্মদের সঙ্গে তার ফোনে কথা হয়েছে। তুরস্কে সৌদি কনস্যুলেটে আসলে কী ঘটেছে সে বিষয়ে কোন কিছুই জানার কথা তিনি জোরালোভাবে অস্বীকার করেছেন। তার কথা শুনে মনে হয়েছে কোনো দুর্বৃত্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও বলেছেন, তিনি আমাকে বলেছেন- এই বিষয়ে পূর্ণ তদন্ত শুরু হয়েছে। আশা করি খুব শীঘ্রই জানা যাবে আসলে কী ঘটেছে। প্রিন্স মোহাম্মদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই ফোনালাপের বিষয়টি এমন একটি সময় জানা গেলো যখন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সৌদি আরবেই সফরে রয়েছেন। মঙ্গলবার তিনি সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেন।
উল্লেখ্য, গত বছর আমেরিকায় স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান সাংবাদিক জামাল খাশোগি। ওয়াশিংটন পোস্টে প্রতিমাসে তিনি কলাম লিখতেন যেখানে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান সম্পর্কে সমালোচনামূলক প্রতিবেদন লিখে আসছেন।