দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কম্পিউটার ভাইরাস আক্রমণ নতুন কোনো বিষয় নয়। এটি গোটা বিশ্বের সব মানুষের প্রধান মাথা ব্যাথার কারণ। যদি জিজ্ঞেস করা হয় এই ভাইরাসের জন্ম কোথায় তা কী জানেন? উত্তর দিতে পারবেন না। আজ জানুন এই বিষয়টি।
তাহলে কিভাবে আসে এই ভাইরাস? এর উত্তর দিতে গেলে আপনাকে ইন্টারনেট খুলে বসতে হবে। তবে এতো ঝামেলায় না গিয়ে আসুন দেখে নেওয়া যাক এর ইতিহাসটি।
১৯৪৯ সালে সর্বপ্রথম মার্কিন বিজ্ঞানী জনভন নিউম্যান কম্পিউটার ভাইরাসের কথা জানিয়েছিলেন। কোনো একটি প্রোগ্রামের হুবহু নকল প্রোগ্রাম হিসেবে তার এই অনুমানের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিলো। তারপর সেটিই কম্পিউটার ভাইরাস হিসেবে পরিচিতি পায়। প্রথম দিকে বিভিন্ন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে ভাইরাস তৈরি ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ চালানো হতো। গবেষণাগারের বাইরে তৈরি হওয়া প্রথম যে ভাইরাসটি বিভিন্ন কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়েছিলো সেটার নির্মাতা ছিলেন এলক ক্লোনার। যার প্রোগ্রামিং করেন সে সময়কার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্কুল শিক্ষার্থী রিচার্ড স্কেন্টা।
ওই সময়কার ভাইরাসগুলো ফ্লপি ডিস্কের মাধ্যমে ছড়াতো। যে কারণে এগুলোর নিরাপত্তায় খুব একটা বেশি প্রভাব ফেলতে পারতো না। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ১৯৯০-এর দশকের শুরুতে ভাইরাস ছড়াতে শুরু করলেও সবচেয়ে বড় আক্রমণটি হয়েছিলো ১৯৯৯ সালে। আমেরিকান নাগরিক ডেভিড এল স্মিথ এই ভাইরাসটি তৈরি করেন। ‘মেলিসা’ ভাইরাস নামে এই ভাইরাসটি ই-মেলের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। এই প্রক্রিয়ায় ই-মেলের সঙ্গে একটি ওয়ার্ড ফাইলজুড়ে দেওয়া হতো, যা ওপেন করার সঙ্গে সঙ্গেই ইউজার ভাইরাস আক্রান্ত হতেন। তাছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে তার ই-মেইলে থাকা আরও ৫০ জনের কাছে অটোম্যাটিকভাবেই মেলিসা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তো। যে কারণে মেলিসা ভাইরাসের কারণে অসংখ্য ই-মেইল অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিলেন ইউজাররা।
তার পরবর্তী সময় আসে ওয়ার্মের আক্রমণ। ওয়ার্ম নিজে থেকেই সকল কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়তে পারে যেটা অন্য কোনো ভাইরাসের পক্ষে কখনও সম্ভব নয়।
২০০০ সালের মে মাসের কথা। লাভ-বাগ নামে একটি ওয়ার্ম সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এই ভাইরাসের সঙ্গে আই লাভ ইউ নামে একটি চিঠি সংযুক্ত থাকতো, যা ওপেন করলেই ওয়ার্ম আক্রমণের শিকার হয়ে পড়তো কম্পিউটার। এরপর ২০০৭ সালের শুরু হয় ট্রোজান হর্সের আক্রমণের মাধ্যমে। এটি মূলত এক ধরনের ম্যালওয়্যার। মূলত ক্ষতিকারক সব ধরনের সফটওয়্যারকে ম্যালওয়্যার বলা হয়ে থাকে। এর মধ্যেও রয়েছে ভাইরাস, ওয়ার্ম, ট্রোজান হর্স, স্পাইওয়্যার ইত্যাদি ভাইরাস। সর্বশেষ এবং সাম্প্রতিক সময় আমরা যে কম্পিউটার ভাইরাসটির নাম শুনছি, আর তা হলো ‘র্যানস্যামওয়্যার’। তবে এসব ভাইরাসের এন্টিভাইরাসের মাধ্যমে আমরা কম্পিউটারকে সুরক্ষিত করতে পারি।