দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৮ খৃস্টাব্দ, ২ অগ্রহায়ণ ১৪২৫ বঙ্গাব্দ, ৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪০ হিজরি। দি ঢাকা টাইমস্ -এর পক্ষ থেকে সকলকে শুভ সকাল। আজ যাদের জন্মদিন তাদের সকলকে জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা- শুভ জন্মদিন।
যে দৃশ্যটি আপনারা দেখছেন সেটি ৫৫৩ বছরের পুরোনো পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জের মজিদবাড়িয়া শাহী জামে মসজিদ। এটি একটি ঐতিহাসিক মসজিদ।
বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে প্রকৃতির অপার মহিমা। সেইসঙ্গে রয়েছে চোখ ধাধানো স্থাপত্য ও পুরাকীর্তি। এসব পুরাকীর্তির একটি হলো পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জের মজিদবাড়িয়া শাহী জামে মসজিদ।
প্রাচীন এই মুসলিম স্থাপত্য-শিল্পটি ৫৫৩ বছর পূর্বের তৈরি। এই মসজিদটি নির্মিত হয় সুলতানি আমলে। মসজিদের নামানুসারেই এলাকার নাম ছিল মসজিদবাড়িয়া।
শোনা যায়, পরবর্তীকালে মজিদ নামে এক ইউপি চেয়ারম্যান মসজিদবাড়িয়াকে মজিদবাড়িয়ায় পরিবর্তন করে ফেলেন, তারপর থেকেই এটি মজিদবাড়িয়া হিসেবে পরিচিত।
কিন্তু কালের পরিক্রমায় এই ঐতিহাসিক মসজিদটির সৌন্দর্য এবং ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। শিল্প এবং স্থাপত্যের নিদর্শনগুলো যত্নের অভাবে ক্রমেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তার পরও এই ঐতিহাসিক মসজিদটি দেখার জন্য এখনও ভিড় জমান শত শত দর্শনার্থী। পটুয়াখালী জেলা শহর হতে ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ও বরগুনা জেলা শহর হতে ১২ কিলোমিটার পূর্বে এই মসজিদটির অবস্থান।
ঐতিহাসিক বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় যে, ইলিয়াছ শাহী বংশের স্বাধীন সুলতান রুকনুদ্দিন শাহ্ তৎকালীন বাকলা দখল করে ১৪৬৫ সালে এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। চন্দ্রদ্বীপের (বর্তমান বরিশাল বিভাগের মধ্যে) এই মসজিদই ইটের নির্মিত সর্বপ্রথম স্থাপত্যকীর্তি।
এই মসজিদটিতে রয়েছে একটি বারান্দা। রয়েছে কারুকার্যমণ্ডিত ৩টি দৃষ্টিনন্দন মেহরাব। রয়েছে মসজিদের পূর্ব পার্শ্বে ৩টি খিলান পথ এবং ৮ কোণার মিনারের মতো ৬টি থাম। পূর্ব-উত্তর এবং দক্ষিণ দিকে দু’টি করে জানালা রয়েছে। তবে সংস্কারের অভাবে দরজা-জানালার কপাট এবং চৌকাঠগুলো ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
বিশাল আকারের এক গম্বুজ এই মসজিদটিকে অনিন্দ্য সৌন্দর্য দিয়েছে। মসজিদটির দেওয়াল প্রায় ৭৫ ইঞ্চি পুরু। এই মসজিদের ভেতরের দেওয়ালে রয়েছে বিভিন্ন কারুকাজকৃত মুসলিম স্থাপত্যের প্রাচীন কিছু নিদর্শনও। তবে অযত্নে ও অবহেলায় দেওয়ালের পলেস্তার খসে খসে পড়ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করেন, দ্রুত সংস্কার করলে মসজিদটি আরও দৃষ্টিনন্দন এবং আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। বাংলাদেশে মুসলিম শাসনের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং ইসলামি স্থাপত্যশিল্প হিসেবে এটি টিকে থাকবে বহুবছর ধরে। তাই জরুরি ভিত্তিতে এটির সংস্কার করা দরকার।
ছবি ও তথ্য: https://www.ekushey-tv.com এর সৌজন্যে।