দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেখা যায় প্লেগ বা নানা ধরনের রোগ জীবাণুর কারণে মুরগি মেরে ফেলা হয়। কিন্তু জার্মানিতে বছরে সাড়ে ৪ কোটি মোরগ ছানা মেরে ফেলা হচ্ছে খুব তুচ্ছ বা অপ্রয়োজনীয় কারণে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, জার্মানিতে মোরগ ছানা মেরে ফেলা হচ্ছে দেশটির হ্যাচারিগুলোতে। এ সংখ্যা একেবারেই কম নয়। জার্মানির সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, জার্মানিতে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার মোরগ ছানা মেরে ফেলা হয়। সেই হিসেবে বছরে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি বাচ্চা মোরগ ছানা মেরে ফেলছে হ্যাচারিগুলো।
কী কারণে মুরগি ছানা মেরে ফেলা হচ্ছে? এর কারণ হিসেবে জানা যায়, যেহেতু এসব মোরগ হতে ডিম উৎপাদন হবেনা। তাই এদেরকে বড় করে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় হ্যাচারিগুলো।
আবার এসব মোরগের মাংস ব্রয়লারের মোরগের মতো ভালো নয় বলেও এদের বাজার চাহিদা খুবই কম। সে কারণেই দেশটির পোলট্রি ব্যবসায়ীরা মোরগ ছানাগুলোকে মেরে ফেলছে।
এদিকে গণহারে বাচ্চা মোরগ হত্যা বিষয়টিতে উদ্বিগ্ন দেশটির সরকারসহ পশু সংরক্ষণ কর্মীরাও। এভাবে মোরগ বাচ্চা মেরে ফেলা কমানোর বেশ কিছু গবেষণা চালিয়েছে জার্মানি। ইতিমধ্যে একটি উপায়ও বের করেছেন দেশটির গবেষকগণ।
গণহারে বাচ্চা মোরগ হত্যা না করে উৎপাদিত ডিম আগেই পরীক্ষা করে জার্মানির বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।তাই গবেষকরা প্রথমেই জানতে চেয়েছেন ডিমটি হতে যে ছানা ফুটবে সেটি মোরগ না মুরগীর ছানা।
এই লক্ষ্যে জার্মানির কৃষি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে লাইপসিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক নতুন একটি উপায়ও আবিষ্কার করেছেন যা ব্যবহার করে একটি ডিম পরীক্ষা করেই জানা যাবে যে এটি ফুটার পর মোরগ নাকি মুরগী বেরুবে।
নতুন এই পদ্ধতিতে ডিমের খোলসে সুক্ষ্ম ফুটো করে কিছু তরল বের করে তা পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষার পর তা থেকে বোঝা যায়, এই ডিম ফুটে মোরগ নাকি মুরগি ছানা বের হবে। আর তখন ওই মোরগ ডিমগুলো পৃথক করে নেওয়া হবে।
এই বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার জার্মানির রাজধানী বার্লিনে কৃষিমন্ত্রী ইউলিয়া ক্ল্যোকনার বলেছেন, এখন থেকে আর মোরগ ছানা হত্যা করতে দেওয়া হবে না।
কেনোনা এই পন্থায় যে ডিমটি মোরগ বলে জানা যাবে তা উচ্চমানের প্রাণীখাদ্য তৈরি করা সম্ভব। তাকে আর বাচ্চা ফুটতে দেওয়া হবেনা।
ইউলিয়া ক্ল্যোকনার সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যেই দেশটির বেশ কিছু হ্যাচারিতে এই পন্থা ব্যবহার শুরু হয়েছে।