দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০১৯ খৃস্টাব্দ, ১ চৈত্র ১৪২৫ বঙ্গাব্দ, ৭ রজব ১৪৪০ হিজরি। দি ঢাকা টাইমস্ -এর পক্ষ থেকে সকলকে শুভ সকাল। আজ যাদের জন্মদিন তাদের সকলকে জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা- শুভ জন্মদিন।
যে ছবিটি আপনারা দেখছেন সেটি ঠাকুরগাঁও এর ঐতিহাসিক জ্বীনের মসজিদ। বহু পুরাতন হলেও এই মসজিদটি বেশ কারুকার্য সম্পন্ন একটি মসজিদ।
কথিত রয়েছে যে প্রায় দু’শ বছর পূর্বে জ্বীনেরা নিজেরাই শ্রমিক সেজে গভীর রাতে এক যোগে হাজার হাজার জ্বীন কাজ করে নির্মাণ শৈলীসহ এই মসজিদটি এক রাতেই নাকি নির্মাণ করে ফেলেন।
পুরানো এই মসজিদের ইতিহাস ঐতিহ্য বলতে গিয়ে এলাকার বয়োজৈষ্ঠ্যরা এমনটাই দাবি করেছেন। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, এলাকাটি একটি উঁচু এবং পিরামিড আকৃতির ছিলো। বন জঙ্গলের মধ্যেই ছোট্ট একটি মসজিদ ঘর নির্মাণ করে এলাকার মানুষ সেই সময় নামাজ আদায় করতেন। তবে হঠাৎ একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে সকলেই দেখতে পান এক রাতের মধ্যে এই নির্মাণ শৈলীসহ মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ করেন জ্বীনেরা। পরের দিন হঠাৎ মাটির উপরে এই মসজিদটি দেখতে পান এলাকাবাসী।
জনশ্রুতি রয়েছে যে, সে সময় মসজিদ দেখতে এবং সেখানে নামাজ আদায় করতে দুর-দুরান্ত হতে বহু মুসল্লিরা আসতো। কালের বিবর্তনে দিনের পর দিন মসজিদটি সংস্কার কাজে হাত দেয়নি কেওই। কারণ হিসেবে এলাকাবাসীরা জানান যে, যেহেতু মসজিদটি নির্মাণ করেছে জ্বীন, তাই তারাই এই মসজিদটির দেখভাল করেন। প্রয়োজনে জ্বীনেরাই মসজিদের সংস্কার কাজ করে দিবেন। এই ভ্রান্ত ধারনা হতেই নিরব থাকেন এলাকাবাসী। যে কারণে এভাবেই কেটে গেছে প্রায় দুই’শ বছর! ধীরে ধীরে মসজিদের নির্মাণ শৈলীগুলিও বিলীণ হতে থাকে। ভেঙে যেতে থাকে কথিত জ্বীনদের হাতে গড়া কারুকার্যপূন্য এই মসজিদটির নির্মাণ শৈলী। দিনের পর দিন বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও মসজিদের সংস্কার কাজ করা হয়নি। এভাবেই কেটে যায় শত বছর বয়সী এই পুরনো মসজিদটির দিনকাল। এরপর মসজিদে নামাজ আদায়কারী মুসল্লীদের সংখ্যাও কমতে থাকে ধীরে ধীরে। এই মসজিদটির সামনেই মাত্র ১’শ গজ আগে সেই সময় নির্মাণ করা হয়েছিল একটি মসজিদ। যা এখনও বিদ্যমান। এত বড় একটি মসজিদ এখানে কথিত জ্বীনেরা নির্মাণ করে দিলেও আজও স্মৃতি স্বরুপ মানুষের হাতে গড়া ছোট্ট সেই মসজিদ এখনও ভেঙ্গে ফেলেননি এলাকাবাসী।
এই জ্বীনের মসজিদটি দেখতে হলে যেতে হবে ঠাকুরগাঁও জেলা শহর। পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও মহাসড়কে ঠাকুরগাঁও হতে ১২ কিলোমিটার অতিক্রম করে ভুল্লী বাজার নামক স্থানে নেমে পাঁচপীর অভিমুখে রওয়ানা দিয়ে মাত্র ৭ কিলোমিটার রাস্তা গেলেই ছোট বালিয়া ঐতিহাসিক জামে মসজিদটি আপনার চোখে পড়বে।
এলাকাবাসী মনে করেন, সরাসরি সরকার এর দায়িত্ব নিয়ে এবং সরকার পৃষ্টপোষকের ভূমিকায় মসজিদটি সংস্কার করা হলে ইতিহাস খ্যাত কথিত জ্বীনের এই মসজিদটির আরও নির্মাণ শৈলী করে গড়ে তুলে হাজার হাজার বছর বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে। স্থানীয় বাসিন্দারা একই সুরে বলেন, শত বছর বয়সী অপরুপ এই জামে মসজিদটি এখন রক্ষা করা এ প্রজন্মের প্রাণের দাবি। তথ্যসূত্র: http://www.pointprotidin.com