দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রতিদিন নতুন নতুন ভার্সনে নতুন নতুন আঙ্গিকে স্মার্টফোন আমাদের সামনে হাজির হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে কি পুরানা ফোনগুলো অচল হয়ে যাচ্ছে? পুরাতন স্মার্টফোন দিয়ে কী কী করা যাবে তা কী আপনি জানেন? আজ জেনে নিন বিষয়টি।
দিন যতো গড়াচ্ছে স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেম হতে শুরু করে সব অ্যাপ হালনাগাদ হচ্ছে ও বাড়ছে আকারে। যে কারণে কিছুদিন আগেও যে স্মার্টফোনটি আপনার সব কাজ বেশ গুছিয়ে করে দিয়েছে, তা এখন হয়তো নাও করতে পারে। তাই কাজের খাতিরে আপনি না হয় নতুন আরেকটি ফোন কিনে নিলেন। তবে পুরাতন ফোনটির কী হবে? ফেলে তো দেওয়া যায় না। তাহলে চলুন পুরানা স্মার্টফোনের ভিন্ন কিছু ব্যবহার সম্পর্কে আজ জেনে নেওয়া যাক।
আপনার ঘরে যদি কোনো বাচ্চা থাকে এবং তার আগ্রহ যদি থাকে ছবি তোলার ক্ষেত্রে, তাহলে আপনার পুরোনো স্মার্টফোনটিই হতে পারে তার জন্য একটি লোভনীয় উপহার। বাড়তি হিসেবে পিক্সেল-প্লের মতো একটি প্রটেকটিভ কেস এ যদি এটি বসিয়ে দিতে পারেন তাহলে আপনার পুরোনো স্মার্টফোনটি পড়ে গিয়ে ফোনটি ভেঙে যাওয়ার ভয় থেকেও মুক্ত থাকতে পারবেন আপনি।
আপনার বাড়িটি যদি ওয়াই-ফাইয়ের আওতায় থেকে থাকে, তাহলে পুরোনো ফোনটিকে ডেডিকেটেড ভিডিও কলিং ডিভাইসও বানিয়ে ফেলতে পারেন। তখন ফোনে কল করার কাজটি না হয় হয়ে যাবে বাড়তি সুবিধা।
আপনার পুরাতন স্মার্টফোনটির আকার আপনার টেবিলঘড়িটির চেয়ে খুব একটা ছোট তো নয়, বরং বড়ও হতে পারে। তাহলে প্লে-স্টোর হতে নামিয়ে নিন যেকোনো ঘড়ির অ্যাপ এবং একটি স্ট্যান্ডে বসিয়ে দিয়ে এটি বানিয়ে ফেলুন স্মার্ট টেবিল ঘড়ি!
আপনি কী মুভি দেখতে ভালোবাসেন? আপনার কী কোনো পুরোনো স্মার্টফোন রয়েছে? তাহলে গুগল কার্ডবোর্ড কিংবা স্যামসাং গিয়ার ভিআর বক্সের মতো কোনো একটি গেজেট কিনে নিন এবং প্লে-স্টোর হতে নামিয়ে নিন ভার্চুয়াল রিয়েলিটির কোনো একটি অ্যাপ। এখন বসে যান ভার্চুয়াল মুভি থিয়েটারে।
বর্তমান সময় সবার ঘর ভরা থাকে বিভিন্ন স্মার্ট ডিভাইসে। বেশিরভাগেরই নিয়ন্ত্রণ থাকে রিমোটে। যে কারণে রিমোটের সংখ্যা হয় অনেক। এর থেকে দু-একটি হারিয়ে যাওয়া কিংবা নষ্ট হওয়া অস্বাভাবিক কিছুই না। যদি নষ্ট হয়েই যায়, তাহলে সেই রিমোট আলাদা কিনতে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। সে ক্ষেত্রে আপনার পুরোনো মোবাইলটি হতে পারে বড় একটি সমাধান। বর্তমানে প্রতিটি স্মার্ট ডিভাইসেরই নিজস্ব অ্যাপ রয়েছে। যদি আপনার ফোনে আইআর পোর্ট থেকে থাকে, তাহলে ইউনিভার্সাল রিমোট অ্যাপ ইন্সটল করে সব ডিভাইস এক রিমোট দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। বেঁচে যাবেন অনেক রিমোটের হিসাব রাখার ঝামেলা হতে।
ধরলাম আপনার বই পড়ার অভ্যাস রয়েছে। আবার এমন কোথাও ঘুরতে যাচ্ছেন যে বেশি বই নিয়ে যেতেও পারছেন না। তাতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্ডেল অ্যাপটি ফোনে নামিয়ে নিন এবং অ্যামাজন স্টোর হতে ই-বুক পড়ুন যতো খুশি। আবার কোনো শ্রুতি ভার্সনের বই পড়ার অ্যাকাউন্টে যদি আপনি কখনও সাবস্ক্রাইব করে থাকেন, তাহলে হাতের কাজ করতে করতে পড়া শুনতে পারেন আপনার পছন্দের অডিও বইটিরও।
এখনকার সময় অনেক মাল্টিমিডিয়া স্পিকার পাওয়া যায় যেগুলোতে ব্লু-টুথ বা ওয়াই-ফাই যুক্ত করা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে যদি আপনার ফোনে কোনো মিউজিক স্ট্রিমিং সার্ভিসে লগইন করা থাকে, তাহলে ফোনটি চার্জে লাগিয়ে কানেক্ট করে দিন স্পিকারের সঙ্গে এবং অ্যাপে চালিয়ে দিন গান। বলতে পারেন মিউজিক প্লেয়ার একদম রেডি।
যদি আপনার পুরোনো ফোনটি সচল থাকে এবং আপনার কোনো কাজে না লাগে, তাহলে আপনি অবদান রাখতে পারেন বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণাতেও। অ্যাপ স্টোরে খুঁজে পাবেন বিওআইএনসি কিংবা এমন অন্য অনেক অ্যাপ, যেগুলো আপনার ফোনে চালু করলে ফোনটিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করবেন ওই প্রকল্পের গবেষকরা। আপনি খালি বেছে নিন আপনার পছন্দের প্রজেক্টটি, ফোনটি কানেক্ট করুন ওয়াই-ফাইতে এবং ভবিষ্যতের পথে এগোনোর যাত্রায় শামিল হয়ে যান।
পুরোনো ফোনটি হয়তো বন্ধ করে ফেলে রেখেছেন। সিমটি চালু করেছেন নতুন একটি ফোনে। তাই বলে কখনও পুরাতন ফোনটি অকার্যকর ভাববেন না। এটি কি জানেন যে ৯৯৯-এর মতো ইমার্জেন্সি নম্বরে ফোন করতে সিম লাগে না, লাগে না ডাটা কোনো কানেকশনও? তাহলে আজ থেকে পুরোনো ফোনটি মাঝেমধ্যে চার্জ দিয়ে অন করে রেখে দিন আপনার ঘরের মধ্যে বা গাড়িতে। বিপদ তো আর কখনও বলে কয়ে আসে না। হয়তো এই পুরাতন ফোনটিই বিপদে আপনার কাজে লাগবে।