দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাম্প্রতিক সময় বাংলাদেশসহ প্রায় সারা বিশ্বেই বেড়ে চলেছে ধর্ষণের সংখ্যা। একের পর এক ধর্ষণের শিকার হয়েছেন নারী। সেইসঙ্গে বাদ পড়ছে না শিশুরাও। আজ জেনে নিন ধর্ষণের ঘটনায় কঠোর শাস্তি দেওয়া হয় বেশ কিছু দেশে সে বিষয়গুলো।
নৃশংস ও অভিনব কায়দায় ধর্ষণ ও গণধর্ষণ করে চলেছে দুর্বৃত্তরা। জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়েচ ভেলে (ডিডব্লিউ) তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে যে, এক সমীক্ষায় দেখা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে মূলত ১৫ বছর বয়স হওয়ার পূর্বেই শতকরা ৩৩ জন মেয়ে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকেন।
ধর্ষণ শারীরিক নিপীড়নের পাশাপাশি ভিকটিমকে মানসিকভাবেও ব্যাপক আঘাত করে। একইসঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও বিনা-দোষে সমাজে হেয় হতে হয় ধর্ষণের শিকার নারীদের।
বিশ্বজুড়েই ধর্ষণ অত্যন্ত গর্হিত একটি কাজ হিসেবে চিহ্নিত। যারা এই কাজ করে তাদেরকে সমাজের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ন রুখে দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা রক্ষার উদ্দেশে বিভিন্ন দেশের সরকার নানারকম কঠোর আইনের ব্যবস্থা রেখেছে। আসুন আজ জেনে নেই এমনই কিছু দেশে ধর্ষণের শাস্তির আইন সম্পর্কে বিস্তারিত।
সৌদি আরব
সৌদি আরবে আইনে রয়েছে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে রায় ঘোষণার কিছুদিনের মধ্যেই জনসম্মুখে শিরশ্ছেদ করে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়ে থাকে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত
সংযুক্ত আরব আমিরাতে যৌন নির্যাতন কিংবা ধর্ষণের সাজা হলো সরাসরি ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড। এক্ষেত্রে কোনো রকম ক্ষমা নেই, ধর্ষণ করলেই অপরাধ প্রমাণের ৭ দিনের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড পেতে হয় আসামীকে।
ইরান
ইরানের আইনে রয়েছে সাধারণত ধর্ষককে জনসম্মুখে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অথবা গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। কোনো ক্ষেত্রে ধর্ষণের শিকার ব্যক্তি যদি অনুমতি দেন তবে অপরাধী মৃত্যুদণ্ড হতে বাঁচতে পারে। তবে তখনও ধর্ষককে জনসম্মুখে একশ’ দোররা মারা হবে বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
চীন
চীনে ধর্ষণের শাস্তি হলো সরাসরি মৃত্যুদণ্ড। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতির গুরুত্ব বোঝাতে ধর্ষককে যৌনাঙ্গ কেটে দেওয়া হয়।
ফ্রান্স
ফ্রান্সে ধর্ষণের শাস্তি হলো অন্তত ১৫ বছরের কারাদণ্ড, সঙ্গে শারীরিক নির্যাতনও। ভিকটিমের ক্ষতি কতোটা গুরুতর, তার ওপর নির্ভর করে ধর্ষকের সাজা বাড়িয়ে ৩০ বছর হতে আমৃত্যু কারাদণ্ড পর্যন্তও করা হয়ে থাকে দেশটির আইনে।
রাশিয়া
রাশিয়ায় ধর্ষণের শাস্তি হলো কমপক্ষে ৩ বছরের কারাদণ্ড। ভিকটিমের ক্ষতি কতোটা গুরুতর, তার ওপর নির্ভর করে ধর্ষকের সাজা বাড়িয়ে ৩০ বছর পর্যন্ত করা হয়ে তাকে দেশটির আইনে।
গ্রিস
গ্রিসে আইন হলো কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার একমাত্র শাস্তি হলো আগুনে পুড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড।
ইসরায়েল
ইসরায়েলে আইনে রয়েছে ধর্ষক ব্যক্তি ন্যূনতম ৪ হতে সর্বোচ্চ ১৬ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে থাকে।
ভারত
২০১৩ সালে ধর্ষণবিরোধী আইন পাশের পর হতে ভারত ধর্ষণের শাস্তি আগের চেয়েও আরও কঠোর করেছে। দেশটিতে ধর্ষককে সাজা হিসেবে ৭ বছর হতে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে বিরল হলেও কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে ধর্ষককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার নজিরও রয়েছে দেশটির আইনে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দুই ধরনের আইন প্রচলিত রয়েছে – অঙ্গরাজ্য আইন ও ফেডারেল আইন। ধর্ষণ মামলাটি ফেডারেল আইনের অধীনে পড়লে ধর্ষককে অর্থদণ্ড কিংবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়ে থাকে। তবে অঙ্গরাজ্য আইনের অধীনে পড়লে সাজার প্রকৃতি পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত নয়। কেনোনা দেশটির একেক অঙ্গরাজ্যে ধর্ষণের শাস্তি একেক রকম হয়ে থাকে।