দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার পরও মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন এবং রবির কাছ থেকে পাওনা টাকা উদ্ধার করতে পারেনি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। তাই পাওনা টাকা উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে গ্রামীণফোন ও রবির লাইসেন্স বাতিলে শোকজ দেওয়া হচ্ছে!
বার বার তাগিদ দেওয়ার পরও যখন পাওনা টাকা পাওয়া যাচ্ছে তখন প্রথমে ব্যান্ডউইথের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পরে সেটা তুলে নিয়ে এনওসি বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। এখনও সেই সিদ্ধান্তই বহাল রয়েছে। তবে তার পরও তারা টাকা দিচ্ছে না কোম্পানিগুলো।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবার বাধ্য হয়ে তাদের লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে। সেজন্য তাদের শোকজ করতে চায়। সেজন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রয়োজন। ইতিমধ্যেই অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠিও পাঠানো হয়েছে।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘বিটিআরসি আইন অনুযায়ী যেটি করার সেটিই করেছে। এখন আমরা যে সিদ্ধান্তই দেই না কেনো, সেটি অবশ্যই ভেবেচিন্তে, আগ-পিছ বিচার-বিবেচনা করেই দেবো। আমাদের এই সিদ্ধান্ত দিতে একটু সময় তো লাগবেই। আমরা চিন্তাভাবনা করছি, কীভাবে কী করা যায় না যায়।’
গত ২৪ জুলাই বিটিআরসির সর্বশেষ কমিশন বৈঠকে এই বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়। কমিশন বৈঠকের ২৮ নম্বর সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে যে, ‘অডিটের মাধ্যমে শনাক্ত করা গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা ও রবির কাছে পাওনা ৮৬৭ কোটি টাকা তারা পরিশোধ না করে তারা টেলিযোগাযোগ আইন ২০০১ এর লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করেছেন। যে কারণে একই আইনের ৪৬ ধারা অনুযায়ী কেনো তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে না- তা ৩০ দিনের মধ্যে জানানোর জন্য শোকজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আইনের বিধান অনুসারেই এই বিষয়ে সরকারের পূর্বানুমতির সিদ্ধান্তের জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করা হলো।’
জানা যায় যে, বিটিআরসি হতে সরকারের অনুমোদনের জন্য ইতিমধ্যেই টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয় হতে অনুমোদন হলেই তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবে বিটিআরসি। তবে মন্ত্রণালয় হতে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। ঈদের আগে সিদ্ধান্ত আসার সম্ভাবনাও নাই।
ইতিপূর্বে গ্রামীণফোন এবং রবির ব্যান্ডউইথের ওপর যেসব নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল, তা তুলে নিয়ে অপারেটর দুটির এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিলো সংস্থাটি। তখন বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেছিলেন, ‘সিদ্ধান্ত হয়েছে অপারেটর দুটির ব্যান্ডউইথ প্রত্যাহার হবে (তারা আবার ফিরে পাবে)। তাহলে টাকা কীভাবে আদায় করা হবে? আমাদের আইনে যা রয়েছে, তা আমরা প্রয়োগ করবো। আমাদের আইনে যে ব্যবস্থা দেওয়া রয়েছে, তা প্রয়োগ করেই টাকা আদায়ের ব্যবস্থা করা হবে। এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই টাকাটা পাবলিক ডিমান্ড। এটি রাষ্ট্রীয় টাকা। এই টাকা মাফ করার কোনো সুযোগই নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই টাকা অপারেটরগুলোর না দেওয়ার কোনো সুযোগই নেই, তেমনি বিটিআরসিরও এই টাকা না নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
বিটিআরসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আইসিটি উপদেষ্টার নির্দেশে গ্রাহক-ভোগান্তির কথা চিন্তা করে আমরা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। তাদের কোনো রকমের এনওসি দেওয়া হবে না। এমনকি নতুন কোনো প্যাকেজের অনুমোদনও দেওয়া হবে না। তারপরও যদি টাকা আদায় না হয়, তাহলে আমরা প্রশাসক নিয়োগের কথা চিন্তা করতে পারি।’