দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আধুনিক যুগের আধুনিকায়নের ফলে পূর্ব থেকে এ পর্যন্ত আবিষ্কার হয়েছে মানবকল্যাণের ক্ষেত্রে অসংখ্য সকল আবিষ্কার সমূহ। এই সকল আবিষ্কার মানব কল্যাণের ক্ষেত্রে রেখেছে বিশেষ ভূমিকা।
এসকল আবিষ্কার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মানব জাতিকে দিয়েছে আধুনিকায়নের সুখ যার ফলে মানব জাতির জীবন ব্যবস্থা হয়েছে কর্মমুখী ও দ্রুত গতিসম্পন্ন। বিজ্ঞানের আবিষ্কারের সফলতার মধ্যে এমন একটি সফলতা রয়েছে যা কৃতিত্ব ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সকল হাজার আবিষ্কারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ। স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশের বিজ্ঞানীদের জন্য একটি বিশাল সাফল্য এর ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে সার্থকতা এসেছে ও আমূল পরিবর্তন। স্যাটেলাইট অথবা কৃত্রিম উপগ্রহ দ্বারা আমরা টেলিভিশন, ভৌগোলিক নিরাপত্তা, ইন্টারনেট ব্যবস্থা, যোগাযোগ, টেলিযোগাযোগ, ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবকিছুতেই এসেছে অভিনব এক পরিবর্তন অবশ্য সেই সাথে বেড়েছে অভ্যন্তরীণ কলহ।
সোভিয়েতে রাশিয়া সর্বপ্রথম হাজার ১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবর একটি স্যাটেলাইট পৃথিবী থেকে ৫৭৭ কিলোমিটার দূরে মহাকাশে সফলভাবে স্থাপন করতে সক্ষম হয়। আকাশে অবতরণকৃত স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহের নাম রাখা হয়েছিল স্পুটনিক’। ৩২ ইঞ্চি ব্যাসার্ধ বিশিষ্ট উপগ্রহটি আমাদের মহাকাশের পৃথিবীর ইতিহাসে মধ্যে বিশাল প্রভাব ফেলে এবং এটি ছিল চরম সফলতা । যার কারণে আমেরিকার সাথে রাশিয়ার একটি অভ্যন্তরীণ কলহের সৃষ্টি দেখা দেয়। আমেরিকার মতে রাশিয়া স্যাটেলাইট দ্বারা সর্ব পৃথিবী কে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা অর্জন করতে চায়। রাশিয়ার এমন আবিষ্কারের পরবর্তী ১৮ মাস পরে অ্যামেরিকা মহাকাশে তাদের নিজস্ব তৈরি উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীকালে চায়না, ফ্রান্স, ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইজরায়েল, সহ আরো ৫৭ টি দেশ তাদের নিজস্ব স্যাটেলাইট তৈরিতে সক্ষম হয়। এই ৫৭ টি দেশের মধ্যে আমাদের বাংলাদেশের নামও রয়েছে।
মহাকাশে স্যাটেলাইট সংখ্যা এখন পর্যন্ত প্রায় ৪২০০ টি। অতীব মাত্রার এই সকল স্যাটেলাইট সমূহ সবগুলোই সঠিকভাবে কাজ করছে এমনটি নয়। এই সকল স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ গুলোর মধ্যে মাত্র ১৫০০ স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ বর্তমানে কর্মক্ষম অবস্থায় আকাশে ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। বাকি ২৭০০ টি স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ অকেজো অবস্থায় আকাশে বিচরণ করছে। বর্তমানে কার্যক্ষম সেটালাইট এর মধ্যে কাজ করছে এমন স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ আমেরিকার প্রায় ৬০০ টি রয়েছে। এছাড়া রাশিয়ার রয়েছে ১৫০ এবং পাশাপাশি চীনের ১৮০ টি। যে সকল অকেজো স্যাটেলাইট মহাকাশে ভাসমান অবস্থায় রয়েছে সেগুলোকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। যদিও এই সকল স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ গুলোকে ভুমিতে ফিরিয়ে আনাও খুবি জটিল কাজের মধ্যে একটি।এসকল স্যাটেলাইট গুলোকে পৃথিবীতে ফিরে আনা হবে নাকি মহাকাশেই কোন ভাবে ধ্বংস করে দেয়া হবে এসকল ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখনো হয়নি। নিশ্চিত করা হয়নি এসব অকেজো স্যাটেলাইটগুলো মহাকাশে কি অবস্থায় থাকবে। বিপুলসংখ্যক অকেজো স্যাটেলাইটের ওজন প্রায় ২০ লাখ কেজি যা মহাকাশের আবর্জনা আকারে ভ্রমণ করছে।
আকাশে ভাসমান এই ২০ লাখ কেজি ধাতব ও আবর্জনা যা আমাদের পৃথিবীর জন্য একটি অন্যতম হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। আকাশে ভাসমান এই বিপুল সংখ্যক স্যাটেলাইট বা উপগ্রহ মহাকাশে ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে দিনে দিনে। স্যাটেলাইটের বিস্ফোরণ হয়ে ছোট ছোট টুকরো ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন দিকে। মহাকাশের এই বিশাল আবর্জনা যা মানব জাতি দ্বারা সৃষ্ট তা আমাদেরকেই নিধন করতে হবে।