দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্রিটিশ দম্পতি বব বিয়াসলি-নরমা হল তাদের যৌবনের প্রেমপত্রটি পুনরায় হাতে পেয়েছেন তবে ৭০ বছর পর! তাদের এই প্রেমপত্রগুলো ১৯৪৮ ও ১৯৪৯ সালের মাঝামাঝিকে লেখা।
সংবাদ মাধ্যম বিবিসিকে তারা জানিয়েছেন সেই সময় বব বিয়াসলি ছিলেন একজন সৈনিক, কাজের জন্য ছিলেন দেশের বাহিরে এবং তখন নরমা থাকতেন মা-বাবার সঙ্গে কেন্টে।
এই প্রেমপত্রগুলো এতো বছর পর যার হাতে পড়ে সেই কিম বলেছেন, আমার মা ২০ বছর পূর্বে যখন আলদেরশটে বসবাস করতেন তখন তার এক প্রতিবেশী চিলেকোঠার ঘরে এই চিঠিগুলো পেয়েছিলেন এবং তা ফেলে দিতে চান। তখন আমার মা সেগুলো দেখতে পেয়ে আবিষ্কার করেন যে সেগুলো আসলে প্রেমপত্র। তাই তিনি সেগুলো যত্ন করেই রেখে দেন।
কিমের মা চেরি যখন বাসা বদল করে সমারসেটে যান তখন সেই চিঠিগুলো সঙ্গে করে নিয়ে যান। তবে তিনি ২০১৬ সালে মারা যান। ওই বছর আবার যখন চিঠিগুলো কিমের দৃষ্টিগোচর হয় তখন তিনি ভাবলেন যে এই চিঠির মালিকের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা দরকার। তাই সেটা করতে দেরি করলেন না তিনি।
প্রথমে কিম একটি চিটির খাম ফেসবুকে পোষ্ট করলেন। বন্ধুদের উদ্দেশ্যে করে লেখেন ‘আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন বব সেনাবাহিনীতে কাজ করতো ও নরমা কেন্টে থাকতো। পোস্টমার্কে ১৯৪৮ ও ১৯৪৯ সালের কথা উল্লেখ রয়েছে। দয়া করে আপনাদের যার এটি করার রয়েছে সেটি করুন’।
তবে তার এই আহবানটি খুব দ্রুত সাড়া ফেলে দেয়। যেটি ১১ হাজার বার শেয়ার হয়েছে ও ১৫০০ জন কমেন্টও করেছেন। এর সঙ্গে একদল ‘পত্রবন্ধু’ও জুটে গেলো। একজন বন্ধু ফেসবুকে লিখে জানালেন, তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন যে এই দম্পতি ১৯৫১ সালে আক্সব্রিজে বিয়েও করেছেন। ওই ঠিকানায় একটা চিঠিও পাঠালেন তিনি।
নরমা যখন কিমের কাছ থেকে চিঠি পেলেন তখন অত্যন্ত বিমর্ষ হয়ে তা পড়লেন। কারণ তার কয়েক মাস আগেই অর্থাৎ ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বব মারা গেছেন। তিনি দ্রুত কিমকে উত্তর দিলেন চিঠিগুলো পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য এবং অবাক হলেন যে সেগুলো এখনও সেই আগের জুতার বক্সের মধ্যেই রয়েছে।
১৯৪০ এর দশকে নরমা বিয়েসলি যখন ববের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তখন তিনি ছিলেন ১৮ বছরের একজন তরুণী। তারা বন্ধু ছিলেন পরে তাদের সেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এক দীর্ঘস্থায়ী রোমান্টিক সম্পর্কে গড়িয়ে যায়। বর্তমানে নরমার বয়স ৮৮ বছর।
এই বিষয়ে নরমা বলেছেন, বব মধ্যপ্রাচ্য ও মিশর থেকে ফিরে আসার পরেই আমরা বিয়ে করে ফেলি এবং আমরা ১৯৫১ সালে বাকিংহ্যামশায়ারে এক গ্রামে চলে যায়। বব তখন কাঠ মিস্ত্রির কাজ করতেন এবং আমি তখন একটা অফিসে কাজ শুরু করি। বর্তমানে আমাদের ৫ সন্তান ও ৬ জন নাতি-নাতনীও রয়েছে।
তিনি তাদের পুরনো দিনের কথা স্মরণ করে আরও বলেন, ‘আমরা প্রথমে একে অপরকে লেখা শুরু করলাম শুধুমাত্র বন্ধু হিসেবে। তারপর এটি বন্ধুর চেয়ে বেশি কিছু হয়ে গেলো। সে তার জীবন সম্পর্কে বলতো ও আমি বলতাম বাড়িতে কি কি হয়েছে সেগুলো। আমি তখন চিঠি লিখতে পছন্দ করতাম না, তারপরও প্রতি সপ্তাহে আমি তাকে একটা করে চিঠি লিখতাম ও একটা ম্যাগাজিন পাঠাতাম তাকে।’
চিঠিগুলো পেয়ে তিনি খুব খুশি হয়েছেন তবে যেহেতু বব বেঁচে নেই তাই তিনি চিঠির খামগুলো খুলতেও আজ তার সাহস হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, ‘চিঠিগুলো আগের মতোই রঙ্গিন কাগজে মোড়ানো রয়েছে আমি যেমনটা করে পাঠাতাম সেই সময়। তবে এখন আমি আর এগুলো পড়তে পারবো না।’