দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঠোঁট আমাদের মুখের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা আমাদের শরীরের ও মুখের সৌন্দর্য বর্ধক এর ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ঠোঁট আমাদের মুখের সবথেকে বেশি স্পর্শকাতর একটি অংশ যা আমাদের শরীরের অন্যান্য ত্বকের তুলনায় অনেক বেশি নাজুক। ঠোঁটের ত্বকের কোমলতা শরীরের বিভিন্ন অংশের কোমলতা থেকে সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। স্বাভাবিক ভাবে আমাদের ঠোঁট শুষ্কতায় আক্রান্ত হয়ে থাকে এর কারণ হচ্ছে ঠোঁটের ত্বকে কোন প্রকার তেলগ্রন্থি’ থাকে না যার ফলে আমাদের ঠোঁট স্বাভাবিকভাবে শুষ্ক দেখায়। আমাদের ঠোঁটে নানাবিধ সমস্যা দেখা যেতে পারে যার মধ্যে ঠোঁট ফাটা, ঠোঁট কালচে ভাব ও ঠোঁটের রুক্ষতা ভাব অন্যতম।
আমরা সকলেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শীতকালে ঠোঁট ফাটার পাশাপাশি ঠোঁটের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকি। শীত কালে বাতাসের আদ্রতা একেবারেই কমে যায় জার ফলে আমাদের ঠোঁটের শুষ্কতা কমে যাওয়ার পাশাপাশি ঠোঁটের আরো নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে পারে যা স্বাভাবিক ভাবেই একটি পরিচিত ঘটনা। রোদের কারণে আমাদের ঠোঁটের চারপাশে কালচে হয়ে যেতে পারে যার ফলে আমাদের ঠোট দেখাতে পারে কাল। এটি শুধু শুষ্ক ত্বকেই নয় তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রেও এধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঠোঁট ফাটা খুবই কষ্টদায়ক ও অস্বস্তিকর হয়ে থাকে কারণ অতিরিক্ত ফাটার ফলে ঠোঁট দিয়ে রক্ত বেরোনোর সম্ভাবনা থাকে এবং খাবার গ্রহণ করার ক্ষেত্রে জ্বালাপোড়ার সম্মুখীন হতে হয় যা খুবই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে যথেষ্ট। এছাড়া নারীদেরকে প্রতিদিন লিপস্টিক ব্যবহারের ফলে তাদের ঠোঁট ধীরে ধীরে কালো হতে থাকে। অতিরিক্ত লিপস্টিক ব্যবহার করা ঠোঁটের ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকর। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি আমাদের ঠোঁটকে কালো করে ফেলে। এছাড়া অতিরিক্ত পরিমাণে ধূমপানের ফলে ও বাজে প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে আমাদের ঠোঁট তার নিজস্ব উজ্জ্বলতা হারাতে পারে।
এমতাবস্থায় আমাদের ঠোঁটের যত্ন করতে হবে। আসুন জেনেনেই ঠোঁটের যত্নঃ
পদ্ধতি ১- ঠোঁটকে নরম ও কোমল করতে আমাদের এই পদ্ধতি খুবই কার্যকর হবে। একটি পাত্রের নারকেল তেল ও মধু একসাথে খুব ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। মিশ্রণ তৈরি হয়ে যাওয়ার পর তা কিছু সময় ধরে খুব হালকাভাবে ম্যাসাজ করতে হবে। মেসেজ করার সময় আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে আমরা আমাদের ঠোঁটে সহনীয় মাত্রায় ও সহনীয় চাপে ম্যাসাজ করা হয়। ঠোঁটে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করে ম্যাসাজ করা হলে ঠোঁটের ত্বকের উপরে ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
পদ্ধতি ২- আমাদের এই পদ্ধতিটি আমাদের ঠোটের গোলাপী ভাব কে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে চমৎকার ভুমিকা পালন করে থাকে। এই পদ্ধতিতে ধনেপাতার রস এর সাথে ২ চা চামচ লেবুর রসের সাথে মিশিয়ে নিতে হবে। মিশ্রণটিকে ঠোঁটে আলতো ভাবে লাগাতে হবে কিছুক্ষণ পর লাগানো লেবুর রস ও ধনেপাতার রসকে পানি দারা হালকা ঝাপটা দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়ম করে এই মিশ্রণ ব্যবহার করলে আমাদের ঠোঁটের গলাপি ভাব পুনরায় ফিরে আসার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
পদ্ধতি ৩- এক্ষেত্রে প্রথমে লেবুর রস পরিমাণ মত নিতে হবে । তার সাথে চার ফোঁটা মধু ও দুই ফোঁটা গ্লিসারিন যুক্ত করে খুব ভালভাবে একটি মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এই মিশ্রণ নিয়ম করে আমাদের ঠোঁটে ও তার চারপাশে ভালভাবে ব্যবহার করতে হবে। ঠোঁটের চারপাশের নিয়মিত এই মিশ্রণ ব্যবহারের ফলে আমাদের ঠোঁটের কালচে দাগ খুব দ্রুত চলে যাবে। ঠোঁটের কালচে দাগ দূরীকরণ এর ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি অভিনব ভূমিকা রাখবে।
পদ্ধতি ৪- আমাদের মাঝে অনেকেরই ঠোঁটের মরা চামড়া উঠে থাকে যার ফলে আমাদের ঠোঁটকে দেখায় খুবই রুক্ষ। এই পদ্ধতি আমাদের ঠোঁটের মরা চামড়া দূরীকরণের ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর। এই পদ্ধতির শুরুতে বাদামের তেলের সাথে নারকেল তেলের একটি সমপরিমাণ মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে বাদামের তেল ও নারকেল তেলের পরিমাণ যাতে সমান থাকে। পরবর্তীতে মিশ্রণটিকে আমরা একটি পাত্রে সংরক্ষণ করতে পারি এবং প্রতিদিন নিয়ম করে এই মিশ্রণ ব্যবহারের ফলে আমাদের ঠোঁটের মরা চামড়া ওঠা ভালো হয়ে যাবে। যার ফলে আমাদের ঠোট ফিরে পাবে পুনরায় সতেজতা এবং সুন্দরতা।
এছাড়া নিয়মিত অলিভ অয়েলে ব্যবহারের ফলে আমাদের ঠোঁটের আদ্রতা বজায় থাকে এবং ঠোঁট হয় অধিক কোমল ও সতেজ। নিয়মিত নারিকেলের তেল ও টমেটোর রস ব্যবহারের ফলে আমাদের ঠোঁট দেখাবে আরো লাল ও সুন্দর। পাশাপাশি ঠোঁটের যত্নে আমরা নিয়মিত পেট্রোলিয়াম জেলি ও ঠোঁটের আদ্রতা বজায়কারি ক্রিম ব্যবহার করতে পারি।