দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমানে হাতে থাকা স্মার্টফোনটি যেন আমাদের জীবনের একান্তই ব্যক্তিগত একটি ডকুমেন্টে পরিণত হয়েছে। তবে এই ফোন নিয়ে মাঝে মধ্যেই ঘটে অঘটন। তাই ফোন হারানোর আগে সতর্ক হন।
আমাদের হাতে থাকা স্মার্টফোনের আলতো স্পর্শে যেন আমাদের জীবনের বড় বড় সকল কাজ খুব সহজেই সম্পন্ন করে ফেলতে পারি যার ফলে আমাদের জীবন ব্যবস্থা হয়ে উঠেছে দ্রুত গতিসম্পন্ন ও আরামদায়ক। আমাদের হাতের স্মার্টফোনটিতে গচ্ছিত থাকে আমাদের সকল প্রয়োজনীয় তথ্য, সকল স্মৃতি, এছাড়াও এই ডিভাইসটিতে থাকে আমাদের খুবি গোপনীয় উপাত্ত ও জরুরি সকল তথ্যাবলী যা হারিয়ে যাওয়া আমাদের জীবনের উপর প্রভাব ফেলতে পারে অচিরেই। ঠিক এমনই একটি জরুরী বস্তু যখন হারিয়ে যায় তার প্রভাব যেন পড়ে আমাদের জীবন ব্যবস্থার উপর এবং পাশাপাশি আমাদের জীবনের নিরাপত্তার উপর ফেলতে পারে বিশাল প্রভাব।
হারানোর আগে সতর্কতাঃ
আমাদের সকল স্মার্টফোনগুলোতে এমন কিছু ফিচার দেয়া থাকে যার মাধ্যমে আমরা দূর থেকে আমাদের মোবাইলকে খুব সহজে শনাক্ত করতে পারি বা খুজে বের করতে পারি। এই ফিচারটি সকল এন্ড্রয়েড ফোনে এবং আইফোনের মধ্যে বিদ্যমান থাকে যার ফলে আমরা আমাদের ফোনের কাছে না থাকা সত্ত্বেও তার সঠিক দিক নির্দেশনা পেয়ে যেতে পারি বা এর অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারি। এন্ড্রয়েড ফোনের মধ্যে এই ফিচারটির নাম ফাইন্ড মাই ডিভাইস আইফোনে এর নামকরণ করা হয় ফাইন্ড মাই আইফোন। অ্যান্ড্রয়েডে সিকিউরিটি এন্ড লোকেশন অপশনে গেলে খুব সহজে আমার ফাইন্ড মাই ডিভাইস অপশন পেয়ে যেতে পারি যার ফলে খুব সহজে আমরা আমাদের এই ফিচারটি একটিভ করে রাখতে পারি । তার ফলে আমরা আমাদের ফোনকে যেকোন অবস্থাতেই দূর থেকে এর অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হব। এই ফিচারটি চালু করার পর আমাদের স্মার্টফোনটি তার সর্বশেষ লোকেশন সংক্রান্ত সকল তথ্য সংগ্রহ করে রাখবে। আমাদের ফোনটি যদি চুরি হয়ে যায় তাহলে অন্য একটি ফোন দ্বারা আমাদের মেইল লগ ইন করে একাউন্টে ঢুকতে হবে এবং সেখান থেকে আমরা খুব সহজে আমাদের চুরি হয়ে যাওয়া ফোনটির সর্বশেষ অবস্থা জানতে পারব যার ফলে আমরা চোরকে খুবই দ্রুত শনাক্ত করতে সক্ষম হব। এই অপশন দ্বারা ফোনকে খুঁজে পাওয়ার পাশাপাশি আমরা খুব সহজেই আমাদের ফোনকে স্থায়ীভাবে লক করে দিতে পারি যা আমাদের ফোনে থাকা তথ্যাবলী কে নিরাপদ রাখবে। ফাইন্ড মাই ডিভাইস অপশন দ্বারা হারিয়ে যাওয়া ফোনের সকল তথ্যাদি স্থায়ীভাবে মুছে দেওয়াও সম্ভব।
ব্যাকআপ রাখাঃ
আমাদের স্মার্টফোনের সকল তথ্য গুলোকে ব্যাকআপ রাখা একটি সচেতনতা মূলক কাজের মধ্যে অন্যতম। কারণ আমাদের ফোনটি একটি ইলেকট্রিক যন্ত্র যা যেকোনো সময়ে নষ্ট হয়ে জেতে পারে। তাই আমাদের সকল তথ্য ও ডকুমেন্ট গুলোর ব্যাকআপ রাখা আমাদের সকলের জন্য খুবি উত্তম একটি কাজ। অনেক সময় আমাদের ফোনকে ফ্যাক্টরি রিসেট করার জন্যে ফোনকে বা ফোনের সকল কিছুকে ফরমেট করতে হয় তাই এই সমস্যার সমাধান সরূপ আমরা ক্লাউড ব্যবহার করে আমাদের তথ্যকে সংরক্ষণ করতে পারি। বর্তমানে অনেক মোবাইল কম্পানি এখন বিনা মুল্যে এই সুবিধা দিয়ে থাকেন।
অ্যাপ লকঃ
আমাদের ফোনের নানান সকল ফিচার গুলোর মধ্যে সবথেকে বেশি ব্যবহার করা এবং তথ্য থাকে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও জিমেইলের মতো অ্যাপগুলোতে। এই অ্যাপ গুলো আমাদের একান্ত ব্যক্তিগত তথ্যাবলি বহন করে থাকে। তাই আমাদের সকলের উচিত এই সকল অ্যাপ গুলোর মধ্যে অতিরিক্ত লক ব্যবহার করা। বর্তমানে গুগোল প্লে ষ্টোরে এইরকম অনেক অ্যাপ লকার রয়েছে যা ব্যবহার করে আমরা আমাদের মূল্যবান তথ্য ও ব্যাক্তিগত গোপনীয়তা বজায় রাখতে পারি।
ফোন হারিয়ে গেলেঃ
আমাদের মোবাইল হারিয়ে গেলে, চুরি হয়ে গেলে, অথবা ছিনতাই হয়ে গেলে প্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হলো আমাদের সিমটি যত দ্রুত সম্ভব বন্ধ করে দেয়া। সিম বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে আমাদের সিম ব্যবহার করে কোন প্রকার অপ্রীতিকর কাজকর্ম ঘটার আশঙ্কা থাকে না এবং পরবর্তীতে সাথে সাথে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি অথবা জিডি করে রাখতে হবে। ফোন হারিয়ে যাওয়ার পর আমাদের ফোন কয়েক স্তরের নিরাপত্তা থাকে কিন্তু তারপরও আমাদের অনলাইনে অ্যাকাউন্টগুলোর উপর সক্রিয়ভাবে নজর রাখতে হবে। আমাদের একাউন্ট কোন ডিভাইস থেকে কোন সময় ঢোকা হচ্ছে অথবা ব্যবহার করা হচ্ছে সেদিকে নজরদারি করতে হবে এবং কেউ যদি ঢোকার চেষ্টা করে থাকে তাহলে দ্রুত আমাদের ওই অ্যাকাউন্ট এর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে দিতে হবে।