দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যে কোন ধরনের ওষুধ অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণের ফলে আমাদের শরীরে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। যার ফলে রোগ নিবারণের পাশাপাশি আমাদের দেহের ভেতরে জন্মায় অন্যান্য জটিল সব জটিলতা বা রোগবালাই।
আমাদের দেশে নানাবিধ খাবারের জটিলতা ও ভেজালের ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ও গ্যাসের সমস্যায় ভুগে থাকি। গ্যাসের সমস্যা যেন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গীতে পরিণত হয়েছে। গ্যাসের সমস্যা যেন আমাদের কাছে স্বাভাবিক একটি কথায় পরিণত হয়েছে। সকালের খাবার থেকে শুরু করে রাতের খাবারের আগ পর্যন্ত আমাদের পোহাতে হয় ছোট-বড় নানাবিধ গ্যাসের যন্ত্রণা আর যার ফলে আমরা কথায় কথায় গ্যাসের ওষুধ গ্রহণ করে থাকি। অতিরিক্ত পিপি আই বা প্রোটন পাম্প গ্রহণের ফলে আমাদের দেখা দেয় নানাবিধ শারীরিক সমস্যা ও জটিলতা।
এই পিপিআই ঔষধ বর্তমানে বাজারে একচেটিয়া ব্যবসা করে চলেছে কারণ অ্যাসিড দমিয়ে রাখতে এটি খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। বর্তমানে রিফ্লেক্স ও আলসারের চিকিৎসায় পিপিআই ঔষধ ব্যবহার করা হয় কারণ এই ঔষধ অ্যাসিড বেরোনোর পথ আটকে দিয়ে থাকে যার ফলে অনেক ডাক্তাররা এই পিপি আই ঔষধ সেবনের পরামর্শ রোগীদের দিয়ে থাকেন।
নানাবিধ জরিপে দেখা যায় এই অম্বল ও গ্যাসের সমস্যা গ্রামের মানুষের তুলনায় শহরের মানুষের বেশি হয়ে থাকে। যদিও স্বাভাবিকভাবেই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে ও জীবন ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন আনতে পারলে এই সমস্যা থেকে স্থায়ীভাবে সমাধান পাওয়া যায় কিন্তু তা ঠিক করা হয়ে ওঠে না যার ফলে এই সমস্যা আমাদের শরীরে বাসা বেধে ফেলতে পারে। গ্যাস অম্বল সমস্যার জন্য আমাদের দরকার দ্রুত সমাধান যার ফলে আমরা এ জাতীয় ওষুধের অপব্যবহার করে থাকি দিনে দিনে। চটজলদি সমাধান এর জন্য আমাদের এই ওষুধ ব্যবহারের ফলে শারীরিক মাশুল গুনতে হতে পারে। অতিরিক্ত পিপিআই ওষুধ গ্রহণের ফলে শরীরে নানাবিধ ক্ষতি হয়ে থাকে বলে চিকিৎসকরা তাদের মতবাদ প্রকাশ করেছেন। আর চিকিৎসকদের এই বার্তা আমাদের সাস্থের জন্য হুমকি স্বরূপ।
সম্প্রতি আমরা যেকোন ভারী ওষুধের সাথে গ্যাসের ওষুধ অথবা পিটিআই খাওয়া শুরু করে দেই যা আমাদের শরীরের জন্য মোটেই মানানসই নয়। ব্যথার ওষুধ গ্রহণের ফলে অম্বল হলেও ভরা পেটে দু’চারদিন খাওয়া যেতেই পারে কিন্তু ব্যথার ওষুধের সঙ্গে পিপিআই খাওয়া যেন আমাদের সকলের দৈনন্দিন রুটিনে পরিণত হয়েছে। আমাদের যাদের হঠাৎ অম্বল সমস্যা দেখা দেয় এই অসুখের জন্য ভালো ওষুধ হচ্ছে লিকুইড অ্যান্টাসিড কিন্তু আমরা পিপিআই খাওয়া শুরু করে দেই। তবে লক্ষণীয় বিষয় হলো এই পিপিআই যতক্ষণে তার নিজস্ব কাজ শুরু করে দেয় ঠিক ততক্ষণে যদি আমরা নিয়ম করে পানি পান করি এসিডিটি এমনিতেই সেরে যেতে পারত কিন্তু আমরা আস্থা রাখি পিপিআই গ্রহণে যা অজান্তে আমাদের শরীরকে ফেলছে নানাবিধ জটিলতায়। সম্প্রতি আমরা যেকোনো ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের সাথে সাথে পিপিআই ওষুধ গ্রহণ করে থাকি তবে বলাবাহুল্য যে অধিকাংশ অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে এই ওষুধ খাওয়ার কোন প্রয়োজন পড়ে না। তবুও ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে আমরা বাড়তি সতর্কতার জন্য এই সকল ওষুধ গ্রহণ করে থাকি যা কখনো কখনো আমাদের শরীরকে আরো বিপাকে ফেলতে পারে। অতিরিক্ত পিপিআই ওষুধ সেবনের ফলে আমাদের শরীরে নানাবিধ জটিলতার মধ্যে অপুষ্টিজনিত সমস্যা দেখা দেয়।
এই ওষুধ গ্রহণের ফলে আমাদের মধ্যে রক্তস্বল্পতার পাশাপাশি ভিটামিন বি এর ঘাটতি দেখা দিতে পারে যা অনেকেরই দৃশ্যমান হয়ে থাকে অল্প সময়ের মধ্যেই। কম বয়সে ডিমেনশিয়া, চিন্তাভাবনার অসঙ্গতির খবরও পাওয়া যাচ্ছে সম্প্রতি। যা এই পিপিআই ওষুধেরই একটি সাইড ইফেক্ট বলে ধারণা করা হয়। নিয়মিত ইপিপি ওষুধ গ্রহণের ফলে আমাদের পাকস্থলীতে এসিডের পরিমাণ কমে ক্ষতিকর জীবাণু বেড়ে যেতে পারে যার ফলে ডায়রিয়া ও নানাবিধ পেটের পীড়া হয়ে থাকে। অম্বল এর সমস্যার বৃদ্ধি তার কারণে অনেকে সারা বছর ধরে এই ওষুধ গ্রহণ করে থাকেন কিন্তু তারা তাদের জীবন যাপনের অনিয়মে কোন নজরদারী রাখেন না। আমরা যদি আমাদের জীবন ব্যবস্থা সামান্য পরিবর্তনের দ্বারা নিজেদেরকে মদ্যপান, ধূমপান, স্ট্রেস ও অনিয়ম থেকে নিজেদের বিরত রাখি তাহলে এই সমস্যা থেকে আমার খুব দ্রুত ও স্থায়ি সমাধান পেতে পারি ।