দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এরইমধ্যে খোলা চিঠিতে শিশুদের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি গুলোর মধ্যে অন্যতম বলে এই ডিপ ফেইককে তুলে ধরেছে।
সম্প্রতি সঠিক কোনো সঠিক তথ্য জানার ক্ষেত্রে বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও ইন্টারনেট অথবা প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে থাকেন। তথাকথিত ডিপ ফেইক প্রযুক্তি তুলনামূলকভাবে অডিও ও ভিডিও কনটেন্টের সঠিক বিশ্বাসযোগ্য নকল তৈরি করতে সক্ষম হয়ে থাকে যার ফলে আপনার আমাদের শিশুরা সে ভুল তথ্যের উপর ভিত্তি করে সেই জ্ঞান আরোহিত করতে পারে। যা আমাদের কোমলমতি শিশুদের জ্ঞান বিকাশের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ একটি ঘটনা। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির দ্বার যেখানে অবারিত খোলা সেখানে শিশুদের কিভাবে ভুল তথ্য থেকে রক্ষা করা যেতে পারে তাই নিয়ে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা নানাভাবে চিন্তা করে চলেছে। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এরইমধ্যে খোলা চিঠিতে শিশুদের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি গুলোর মধ্যে অন্যতম বলে এই ডিপ ফেইককে তুলে ধরেছে।
জাতিসংঘের রিপোর্ট মোতাবেক উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয় শিশুদের বেশিরভাগই বেড়ে উঠবে ভুল তথ্য ভেজালে ভরা ডিজিটাল পরিবেশের বাসিন্দা হিসেবে যার প্রভাব তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে পড়বে। সম্প্রতি শিশুদের সকল প্রকার ভুল তথ্য থেকে বাঁচানোর জন্য অভিভাবকরা নানা উপায়ে বেছে নিচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে ইউটিউবে অভিভাবক যেসকল ভিডিও দেখে থাকেন ঐ সকল ভিডিও বা অডিও তার সন্তানদের দেখার উপযোগী নাও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে অনেক অভিভাবকবৃন্দ তার শিশুর জন্য বা তার সন্তানের জন্য আলাদা একটি জি মেইল একাউন্ট খুলে রাখেন। এছাড়া পাশাপাশি তার সন্তানের দেখার উপযোগী সকল ভিডিও তারা আগে থেকে সার্চ দিয়ে রাখেন যাতে করে অটোমেটিক রিকমেন্ডেশন আসতেই থাকে সেই উপযোগী ভিডিও বা অডিওর ক্ষেত্রে। সে ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষায় ভিডিও অথবা কার্টুন দেখার অভ্যাস গড়তে দেওয়া বাচ্চাদের জন্য শ্রেয়। কারণ এতে করে তাদের ইংরেজির উপর দক্ষতা আরো বৃদ্ধি পাবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে ১৮ বছর বয়সের কম বয়সিদেরকে শিশু হিসেবে ধরা হয়। অনেক পিতা-মাতার মতে তার সন্তানেরা স্কুল-কলেজ কোচিং সহ বন্ধু-বান্ধবদের সাথে মিলে আলাদা একটি জগতে বসবাস করে থাকেন আর এখন ফেসবুকের মাধ্যমে একটি সন্তানের প্রতি অভিভাকদের সবসময়ে সকল ক্ষেত্রে খেয়াল রাখা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। সম্প্রতি স্কুল কলেজ যাওয়ার শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটে ভুল তথ্যের বেড়াজালে নিজেদেরকে আটকে ফেলতে পারেন। সে ক্ষেত্রে কয়েকটি সচেতনামুলক উপায় বেছে নিয়ে তাদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে তার সমাধান করাই প্রত্যেকটি অভিভাবকের জন্য ভালো। যেহেতু তথ্য প্রযুক্তির যুগ তাই শিশুদেরকে আটকে রাখা অসম্ভব বরং তাদের সমস্যাগুলো কে চিহ্নিত করে তার ইতিবাচক সমাধান করে দেওয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে অভিভাবকদের অনেক সচেতন ভাবে কাজ করতে হবে। প্রতিটি পদক্ষেপ খুবই ভেবেচিন্তে গ্রহণ করতে হবে যাতে করে শিশুরা তাদেরকে তার শত্রু হিসেবে গণ্য করতে না পারে। সন্তানরা ইন্টারনেটে কি দেখছে তা পর্যবেক্ষণ করা সকলের পক্ষে সম্ভব হয় ওঠেনা সে ক্ষেত্রে কোন জিনিসটা ভালো কোনটি দেখা খারাপ অথবা কোন দিক ভালো কোন দিক খারাপ তা নিয়ে খোলাসা ভাবে তাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে তাদেরকে সচেতন করা সম্ভব।
শিশুদের সচেতন করার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের গুরুত্ব অপরিসীম। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে অভিভাবকদের মন-মানসিকতার সঠিক পরিবর্তন করা উচিত। শিশুদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক যে সবকিছু আমাদের সাথে বলতে পারেনা সেসব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করে সন্তানদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে হবে। সম্প্রতি অনলাইনে যৌন হয়রানি মূলক কর্মকান্ড বেড়ে চলেছে এসকল ক্ষেত্রে শিশুদেরকে সোচ্চার করে তুলতে হবে। এরূপ কোন কর্মকান্ড ঘটার সাথে সাথেই তারা যেন অভিভাবকের শরণাপন্ন হয় সেক্ষেত্রে তাদেরকে বোঝাতে হবে। সন্তানদেরকে সঠিক ভাবে লালন পালন করার আর একটি বড় অংশ হলো স্কুল কলেজের ভূমিকা। এই বয়সে শিশুরা স্কুল-কলেজের গন্ডির মধ্যে বসবাস করে থাকে এবং জীবনের বন্ধু-বান্ধবও খেলার সাথী এই স্কুল-কলেজ থেকেই পাওয়া যায় সবচেয়ে বেশি। তাই সঠিক বন্ধু বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তাদেরকে সঠিক জ্ঞান দান করতে হবে। সম্প্রতি ইন্টারনেট অনলাইনের যুগে শিশুদের শিক্ষার ক্ষেত্রে স্কুল-কলেজে এই বিষয়টি সঠিক ভাবে পর্যবেক্ষণ করে সকল শিক্ষার্থীদের কে সচেতন করে তুলতে হবে।