দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা কিছু জিনিস দেখি যেগুলো একই রকম হয়ে থাকে। যেমন কোনো হোটেলে গেলেই আমরা দেখতে পাই বিরিয়ানির হাঁড়ি লাল কাপড়ে মোড়ানো। কিন্তু কেনো লাল কাপড়ে মোড়ানো হয়? কখনও কী আপনি বিষয়টি ভেবে দেখেছেন?
বিরিয়ানি পছন্দ করেন না এমন লোক বোধহয় খুঁজে পাওয়া যাবে না। খুব সহজে হাতের কাছে পাওয়া যায় এবং খেতেও খুব একটা সময় নিতে হয় না। তা ছাড়া যারা মুখরোচক খাবার খেতে পছন্দ করেন তাদের কাছে বিরিয়ানি একটি প্রিয় খাবার।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হোটেলে বিরিয়ানি রান্না করে তা বিক্রি করা হয়ে তাকে। তবে আপনি একটু খেয়াল করে দেখবেন যে সব বিরিয়ানির হাঁড়িই লাল রঙের কাপড় দিয়ে মোড়ানো থাকে। কিন্তু কেনো এটি করা হয় সেই বিষয়টি হয়তো কখনও আমাদের মাথায় আসেনি।
রাস্তাঘাটের আনাচে-কানাচে, অলিগলিতে রয়েছে বিরিয়ানির দোকান। দোকানের একশ মিটারের মধ্যে এসে পড়লেই নাকে বিরিয়ানির গন্ধ ও লাল কাপড়ে মোড়া বিরিয়ানির বিশাল হাঁড়ি আপনার চোখে পড়বেই।
মটন, চিকেন, আন্ডা, আলু কিংবা ভেজ বিরিয়ানি যেমনই হোক না কেনো, পাত্রটি প্রায় সব দোকানেই একটা লাল কাপড়ে মোড়া থাকতে দেখা যায়।
তবে এই বিষয়টি কী আপনি জানেন? কেনো বিরিয়ানির হাঁড়ি লাল রঙের কাপড় দিয়ে মোড়ানো থাকে? আজ বিষয়টি জেনে নিন।
এ সম্পর্কে ইতিহাসের ব্যাখ্যা থেকে জানা যায় যে, সম্রাট হুমায়ুনের খাদ্য পরিবেশনে ‘দরবারি রীতি’ ছিলো। আর সেই রীতি অনুযায়ী, রূপালি পাত্রের খাবারগুলোর জন্য লাল কাপড় ও অন্য ধাতব বা চিনামাটির পাত্রগুলোকে সাদা কাপড়ে ঢেকে তারপর সেটি নিয়ে আসা হতো।
তারপর মোগল দরবারেও এই একই রীতি অনুসরণ করা হতো। খাদ্য পরিবেশনের এই রীতি এবং রঙের ব্যবহার লখনউয়ের নবাবরাও অনুসরণ করতেন বলে ইতিহাস সূত্রে জানা যায়। আর সেই থেকেই বিরিয়ানির পাত্র লাল কাপড়ে ঢাকার রীতি সচল হয়েছে এবং যা এখনও বিদ্যমান রয়েছে।
তবে এটির ক্ষেত্রেও কিছুটা মতান্তর রয়েছে। অনেকেই আবার মনে করেন যে, ইতিহাস কিংবা ঐতিহ্যের রীতি মেনে নয়, ব্যবসার খাতিরেই ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই নাকি বিরিয়ানির পাত্র লাল কাপড়ে মুড়ে রাখা হয়ে থাকে। যে কারণে খুব দূর থেকেই তা ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয় বলেই নাকি লাল কাপড়ে মোড়ানো হয়ে থাকে বিরিয়ানির হাঁড়িটি।