দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা সবাই জানি বিমানে চড়ে আকাশপথে দ্রুতই একস্থান অন্য স্থানে যাওয়া সম্ভব। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যেতেও খুব বেশি সময় লাগে না, মাত্র ৫৫ মিনিট সময় লাগে। তবে এবার ট্রেনেই স্থলপতে এই সময়ের মধ্যে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়া যাবে।
তাই বলে স্থলপথেও একই সময়ের ব্যবধানে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছানো সম্ভব কিভাবে? এবার এই অসম্ভবকেই সম্ভব করতে চলেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
জানা গেছে, শীঘ্রই বুলেট ট্রেন কিংবা উচ্চ গতির রেল সেবা চালু করতে চলেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। সেটি চালু হলে এবং বিরতিহীনভাবে চালালে মাত্র ৫৫ মিনিটেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছানো সম্ভব হবে। আর যদি বিরতি দেওয়া যায় সেক্ষেত্রে সময় লাগবে ৭৩ মিনিট।
অথচ বর্তমানে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে স্বাভাবিকভাবে ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। বিষয়টি শুনতে অবাক মনে হলেও সেটিই বাস্তব বলে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ এবার সেই যুগেই প্রবেশ করতে চলেছে।
বুলেট ট্রেন নামে উচ্চ গতির এই ট্রেনটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩০০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম এবং প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার যাত্রী পরিবহন করতে পারবে এই ট্রেনটি।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে গেছে, ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ রেলওয়ে উচ্চগতির এই রেল সেবার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ করেছে। সে জন্য সম্ভাব্য রুটও নির্বাচন করা হয়েছে এবং প্রায় ৯৭ হাজার কোটি টাকার এই রেল প্রকল্পের নকশা প্রণয়নের কাজও এগিয়ে চলেছে।
তবে দু’জন পরিবহন বিশেষজ্ঞ এই প্রকল্পটিকে ‘উচ্চাভিলাষী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। যেখানে বাংলাদেশ রেলওয়ে এখন পর্যন্ত বৈদ্যুতিক রেল সেবা শুরু করতে পারেনি, সেখানে উচ্চ গতির রেল পরিচালনার সক্ষমতা রয়েছে কী না তা নিয়ে তারা প্রশ্নও তুলেছেন ইতিমধ্যেই।
প্রকল্পটির পরিচালক মো. কামরুল আহসান একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন যে, ‘এই বছরের এপ্রিলের মধ্যে প্রকল্পের বিস্তারিত নকশা প্রণয়নের কাজ শেষ করা হবে।’
সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘আমরা তখন এই প্রকল্পের জন্য একটি ডিপিপি (প্রকল্প উন্নয়ন প্রস্তাব) প্রস্তুত করবো। সেইসঙ্গে তহবিল সংগ্রহের কাজও আমরা করবো।’
তিনি আশা করেন যে, ২০২০ সালের মধ্যেই জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই প্রকল্পটি উপস্থাপন করা সম্ভব হবে।
কামরুল আহসান আরও জানিয়েছেন, এই রেলের জন্য যাত্রীদের কিলোমিটার প্রতি ১০ টাকা করে ভাড়া ধার্যের কথা বলেছেন পরামর্শকরা। সেই অনুযায়ী ঢাকা হতে চট্টগ্রাম যেতে একজন যাত্রীর প্রায় ২ হাজার টাকা ভাড়া গুণতে হবে। তবে এ নিয়ে আরও বিশ্লেষণ করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেন তিনি উল্লেখ করেছেন।
কামরুল ইসলাম আরও জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত রেলপথে মোট ৬টি স্টেশন রয়েছে। সেগুলো হলো- ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ফেনী, পাহাড়তলি ও চট্টগ্রাম।
উল্লেখ্য যে, বর্তমানে ঢাকা হতে চট্টগ্রামে শোভন চেয়ারের ভাড়া ৩৪৫ টাকা ও এসি চেয়ারের ভাড়া ৬৫৬ টাকা। এ ছাড়াও বিমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম ফ্লাইটের ভাড়া ২৫০০-৩০০০ টাকার মধ্যে।