দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনে করোনা ভাইরাস সংক্রমণে প্রাণহানি বাড়তে থাকার কারণে সেখানে অবস্থানরত ৩০ হাজার ব্রিটিশ নাগরিককে ‘এখনই’ দেশছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য।
এই চীন ছাড়ার উদ্যোগের ক্ষেত্রে কোনও সরকারি উদ্যোগ থাকবে না, সবাইকে নিজ উদ্যোগেই চীন ছাড়তে বলা হয়েছে। যে কারণে বিষয়টি নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা।
নিজেদের নাগরিকদের চীন ভ্রমণে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার। তবে এবার করোনা ভাইরাস সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে থাকায় যতো দ্রুত সম্ভব সবাইকে চীন ছাড়তে বলেছে তারা। তবে করোনা ভাইরাসের উৎসস্থল উহান ছাড়া অন্য শহরের বাসিন্দাদের নিজস্ব উদ্যোগেই দেশে ফিরতে হবে বলে জানানো হয়।
এই বিষয়ে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেছেন, নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষায় আমরা সবসময় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। সে কারণে সম্ভব হলে এই মুহূর্তেই তাদের চীন ত্যাগ করার পরামর্শও দিচ্ছি।
তিনি আরও জানান, উহানে আটকে পড়া ৩০০ ব্রিটিশ নাগরিকের মধ্যে দেশে ফিরেছেন মাত্র ১০০ জন। বাকিদের ফিরিয়ে নিতে আর মাত্র একটি বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করবে যুক্তরাজ্য।
করোনা ভাইরাস সংকটের কারণে বিশ্বের বেশিরভাগ এয়ারলাইন্স চীনগামী ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে ইতিমধ্যেই। যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা চলছে বেশ কয়েকটি শহরেও। এমন পরিস্থিতিতে ৩০ হাজার ব্রিটিশ কীভাবে চীন ছাড়বেন, তা নিয়ে বেশ সংশয় দেখা দিয়েছে।
চীনে যুক্তরাজ্যের দু’টি কোম্পানি বিমান পরিচালনা করে থাকে- ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ এবং ভার্জিন আটলান্টিক। করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর তারাও সব ফ্লাইট বাতিল করে দিয়েছে। যে কারণে অন্যান্য কোম্পানির বাণিজ্যিক ফ্লাইটেই চীন ছাড়তে হবে ব্রিটিশ নাগরিকদের।
তবে এভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশকারীদের পৃথকভাবে শারীরিক পরীক্ষা করা সম্ভব হবে না, যে কারণে সারাদেশে করোনা ভাইরাস সহজেই ছড়িয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। দেশটিতে এ পর্যন্ত দু’জনের শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে। তাদের নিউ ক্যাসলের একটি হাসপাতালে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, তাইওয়ান চীন ফেরত বিদেশীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করলেও এই পথ এখনও খোলা রেখেছে যুক্তরাজ্য। দেশটির সরকার জানিয়েছে যে, তারা লন্ডন বিমানবন্দরে সেবা দিতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একটি টিমও নিয়োগ করেছে। এছাড়াও, ভাইরাস-উপদ্রুত এলাকা থেকে ফেরা নাগরিকদের অন্তত দুই সপ্তাহ বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে একদিনে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে গত মঙ্গলবার। এদিন প্রাণ হারিয়েছেন ৬৫ জন নাগরিক। যে কারণে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯২ জন এ। চীনে নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে আরও অন্তত ৩ হাজার ৮৮৭ জন। অর্থাৎ দেশটিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে অন্তত ২৪ হাজার ৩২৪ জন।