দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রায় সব নারীই স্বাস্থ্যকর এবং ড্যামেজ-মুক্ত চুলের স্বপ্ন দেখে থাকেন। সুন্দর চুল যেকোনও নারীর সেরা সৌন্দর্য বৈশিষ্ট্য তাতে সন্দেহ নেই। তবে অতিরিক্ত চুল পড়া, খুশকি, তাড়াতাড়ি চুলে পাক ধরা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। আজ জেনে নিন চুলের সমস্যায় কারি পাতার ঘরোয়া ব্যবহার।
দেখা যায় বিভিন্ন সময় চুলের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এগুলি পরিবেশ দূষণ, রোজকার ধুলো-বালি, সঠিক খাবার গ্রহণের অভাব কিংবা ডায়েট, অতিরিক্ত হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার, ভিটামিনের অভাব, ইত্যাদির কারণেও হতে পারে। সেজন্য অবশ্যই চুলে বাজারের ক্যামিকেল জাতীয় পণ্য ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক উপায়ে চুলের যত্ন নেওয়া দরকার। সে কারণে আমরা আপনাকে চুলের যত্নের জন্য প্রাকৃতিক ঘরোয়া উপাদান ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকি। চুলের যেকোনও সমস্যার ক্ষেত্রে সমাধানের একটি প্রাকৃতিক উপাদানই হলো ‘কারি পাতা’। অনেকেই মাথার ত্বকের সমস্যা, চুল পড়া, খুশকি বা চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়ার সমস্যায় ভাগে থাকেন। কারি পাতা হলো এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা, চুলের মূল থেকে এই জাতীয় সমস্যাগুলির চিকিৎসা করা যেতে পারে। কারি পাতা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস, অ্যামিনো অ্যাসিড, বিটা ক্যারোটিন, প্রোটিন ইত্যাদি সমৃদ্ধ থাকে। সে কারণে চুলের ক্ষেত্রে কারি পাতা ব্যবহারের উপাকারিতা সম্পর্কে এখানে কয়েকটি ট্রিপস তুলে ধরা হলো:
অল্প বয়সে চুলে পাক ধরা
কারি পাতা এমন একটি অন্যতম সেরা উপাদান যা, অকালে চুল পেকে যাওয়া রোধ করে থাকে। অল্প বয়সে চুল পেকে যাওয়া, সঠিক খাবার গ্রহণের অভাব, অতিরিক্ত মানসিক চাপ নেওয়া, অ্যালকোহল গ্রহণ কিংবা বংশগত কারণে হয়ে থাকে। কারি পাতায় থাকা ভিটামিন বি-এর কারণে এটি অকালে চুল পেকে যাওয়া প্রতিরোধও করে এবং চুলে পুষ্টি ও আসল রঙ পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে থাকে। চুলে কারি পাতা ব্যবহার, চুলের গোড়া শক্তিশালী করে এবং চুল উজ্জ্বলও রাখে।
চুলের বৃদ্ধি হয় যেভাবে
নিয়মিত কারি পাতা ব্যবহার, চুলের বৃদ্ধি হতে সহায়তা করে থাকে। কিছু কারি পাতা সূর্যের আলোতে শুকিয়ে গুঁড়ো করুন ও এক টেবিল চামচ দইয়ের সঙ্গে তা মেশান। চুলের গোড়ায় ও চুলের শেষ প্রান্তে পেস্টটি ভালো করে লাগিয়ে নিন।
চুল পড়া কমাতে
বর্তমানে চুল পড়া একটি সাধারণ সমস্যায় পরিণত হয়েছে। সে কারণে চুল পড়া বন্ধ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কারি পাতা চুল পড়া বন্ধ করে ও চুল পাতলা হওয়াও রোধ করে। কিছু কারি পাতা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করতে হবে। এটি চুলে ভালভাবে লাগিয়ে নিতে হবে এবং এক-দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি নিয়মিত অনুসরণ করতে হবে।
খুশকি রোধ করে যেভাবে
কারি পাতায় থাকে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য। এগুলো মাথার ত্বক স্বাস্থ্যকর রাখে। এগুলো মাথার ত্বককে খুশকি ও সংক্রমণ হতে রক্ষা করে। মাথার ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণ রুখতে, কারি পাতার ব্যবহার শুরু করুন। দইয়ের সঙ্গে কারি পাতা মিশিয়ে পেস্ট প্রস্তুত করুন ও এটি ভালোকরে চুলে লাগিয়ে আধা ঘণ্টা রেখে দিন। সপ্তাহে একবার এটি করুন। এতে অবশ্য কিছুটা মেথির বীজও যুক্ত করতে পারেন।
হেয়ার টনিক হিসাবে সেরা
কারি পাতা চুলের টনিকের জন্যও খুবই ভালো কাজ করে। কারণ এটি মাথার ত্বককে ময়শ্চারাইজ ও পুষ্ট রাখতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। এক মুঠো সতেজ কারি পাতা নিন ও এতে ২-৩ টেবিল চামচ নারকেল তেল দিয়ে তা প্যানে ফোটান। কিছুক্ষণের জন্য ফুটতে দিন ও পরে মিশ্রণটি শীতল হয়ে গেলে তা মাথায় লাগান। কারি পাতায় ভিটামিন বি-৬ থাকার কারণে, এই পাতাগুলি চুলের শিকড়কে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে থাকে।
চুলের ক্ষতিগ্রস্থ গোড়া মেরামত
দূষণ ও চুলে বিভিন্ন রাসায়নিক চিকিৎসার কারণে চুলের গোড়া ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং অনেক সময় শুকিয়ে যায়। তবে কারি পাতায় থাকা প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানগুলির কারণে এটি ক্ষতিগ্রস্থ গোড়া মেরামত করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সহায়তা করে। কিছু কারি পাতা কুচি করে নিন ও এটি আপনার পছন্দসই ক্যারিয়ার তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ভালোভাবে মাথায় ম্যাসাজ করুন। এটি মাথার ত্বকের ক্ষতিগ্রস্থ গোড়া মেরামত করতে সহায়তা করে থাকে।
আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করুন
আপনার ডায়েটে গুঁড়ো কিংবা কাঁচা কারি পাতা অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। কারি পাতা দিয়ে সিদ্ধ পানি খাওয়া অন্যান্য স্বাস্থ্য সুবিধার পাশাপাশি আপনার চুলকেও সুরক্ষিত করবে। এটি পুদিনা পাতার সঙ্গে কাঁচাও খেতে পারেন।