দিনটি নিজের করে নিয়েছেন কুমার সাঙ্গাকারা। এদিন তাঁর ব্যাটের ওপর ভর করে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে বড় ব্যবধানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে সিরিজে শুভ সূচনা করেছে শ্রীলঙ্কা। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং সব দিক দিয়েই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নাস্তানাবুদ হয়েছে প্রোটিয়ারা। গতকাল প্রেমদাসা মাঠে সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী দুটি চিত্র দেখলো দর্শকেরা। যে মাঠে প্রোটিয়া বোলারদের পিটিয়ে ৩২০ রানের বিশাল সংগ্রহ তুললো লঙ্কানরা সে মাঠেই মাত্র ১৪০ রানে সবকটি উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মাটিতে এককভাবে সর্বোচ্চ ১৬৯ রান তুলে রেকর্ড বইয়ে নিজের নাম লিখে ফেললেন কুমার সাঙ্গাকারা।
টসে জিতে বোলিংয়ে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩.৫ ওভারে দিলশানকে ব্যক্তিগত ১০ রানে ফিরিয়ে দিয়ে বোলিংয়ে শুভ সূচনাও করেন ক্রিস মরিস। কিন্তু এরপরই যে তাদের নাকের ঘাম, চোখের পানি এক করে ছাড়বেন লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা সে কথা বোধহয় কেউই ভাবেননি। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে থারাঙ্গা-সাঙ্গাকারার ৭০ রান, তৃতীয় উইকেট জুটিতে জয়াবর্ধনে-সাঙ্গাকারার ৭৪ রান এবং চতুর্থ উইকেট জুটিতে থিরিমান্নে-সাঙ্গাকারার ১২৩ রানের জুটি লঙ্কাকে এনে দেয় ৩২০ রানের বিশাল সংগ্রহ। ম্যাচের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ রান এসেছে থারাঙ্গা-জয়াবর্ধনের ব্যাট থেকে। উভয়ে করেছেন যথাক্রমে ৪৩ ও ৪২ রান।
অন্যদিকে ১৩৭ বলে ১৮টি ৪ এবং ৬টি ৬ এর সাহায্যে কুমার সাঙ্গাকারা করেন ১৬৯ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার সবকটি বোলারের ওপরেই ছড়ি ঘুরিয়েছেন সাঙ্গাকারা। স্পিন কিংবা শর্টবল কোনোটি দিয়েই তাকে আটকে রাখতে পারেনি তারা। প্রথম ৬৬ রান করতে ৯১ রান লাগালেও, এরপরেই সাঙ্গাকারা খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। এটি সাঙ্গাকারার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস, আগেরটি ছিলো অপরাজিত ১৩৮ রান। বোলারদের অত্যাচার শেষে ফ্যাঙ্গিসো’র বলে ডুমিনি’র হাতে ক্যাচ তুলে আউট হন সাঙ্গাকারা।
রান তাড়া করতে নেমে যেটি সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন ছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা’র একটি ঝড়ো সূচনা, আর এটি এনে দিতে পারতেন হাশিম আমলা। প্রথম বলেই মালিঙ্গা ০ রানে ইনগ্রামকে আউট করে লঙ্কাকে ব্রেকথ্রু এনে দেন। ২৯ রানের মাথায় এরেঙ্গার বলে ডুমিনিকে স্টামপড করেন সাঙ্গাকারা। এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে ডি ভিলিয়ার্স-পিটারসেন ৪৪ রান যোগ করে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেয়ার চেষ্টা চালান। দলীয় ৭৩ এবং ৭৫ রানের মাথায় পরপর দু ওভারে এই দুজনই আউট হয়ে গেলে হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়ে প্রোটিয়ারা। পিটারসেন-ভিলিয়ার্স করেন ২৯ ও ২৩ রান।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট বিসর্জন দিয়ে ১৪০ রানে থেমে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সর্বোচ্চ ২৯ রান করেছেন রবিন পিটারসেন এবং আলভিরো পিটারসেন। লঙ্কান বোলারদের ভেতর হেরাথ এবং পেরেরা ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন। দিলশান ২টি এবং মালঙ্গা-এরেঙ্গা ১টি করে উইকেট লাভ করেন। দক্ষিণ আফ্রিকান বোলারদের ভেতর ত্রাস সৃষ্টিকারী সাঙ্গাকারা পান ম্যান অব দ্য ম্যাচের স্বীকৃতি, এটি ছিলো শ্রীলঙ্কার ৩৫০ তম ওয়ানডে ম্যাচ। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে জুলাই ২৩, বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টায়।