দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ করোনার প্রকোপ থেকে সতর্ক থাকতে অনেক অফিসই কর্মীদের ওয়ার্ক ফ্রম হোম-এর নির্দেশনা দিয়েছে। অর্থাৎ কর্মক্ষেত্রে না গিয়ে বাড়ি বসেই কাজ করতে হচ্ছে কর্মীদের।
ইতিমধ্যেই পুরো দেশের অনেক অফিসের কর্মচারীরাই বাড়ি বসে কাজ করতে শুরু করেছেন। বাড়িতে কাজের ক্ষেত্রে সহকর্মীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে সবচেয়ে জরুরি অ্যাপই হলো এই হোয়াটসঅ্যাপ। এই মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমেই কাজ নিয়ে আলোচনা করা খুব সহজ ও সুবিধাজনক। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে ৫টি বিষয়। আর তা হলো:
১। আলাদা গ্রুপ তৈরি করুন
কোম্পানিতে যাদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি যোগাযোগ করার প্রয়োজন হয়, তাদের নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করতে হবে। আপনি যদি একাধিক বিভাগের দায়িত্বে থেকে থাকেন, সেক্ষেত্রে পৃথক পৃথক গ্রুপ বানাতে হবে। এতে করে সকলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে এবং কাজ ভাগ করে দিতে সুবিধাই হবে। সেইসঙ্গে কারা কারা কী কী কাজ করছেন, সেই আপডেটও অনায়াসে পেয়ে যাবেন। একই কাজ যাতে করে দু’জন একসঙ্গে না করে ফেলেন, সেই বিষয়টিও লক্ষ্য রাখা খুব সহজ হবে।
কীভাবে এই গ্রুপ বানাবেন? হোয়াটসঅ্যাপ ওপেন করে ডানদিকে উপরে নিউ গ্রুপ অপশন দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করে গ্রুপে যাদের রাখতে চান সিলেক্ট করে নিন। তাহলেই আপনার গ্রুপ তৈরি। বিভাগ এবং কাজ অনুযায়ী গ্রুপের নামকরণ করতে হবে। এতে করে কাজে সুবিধা হবে।
২। দুটি হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট রাখুন
ব্যক্তিগত ও পেশাদারী জীবন পৃথক রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ। তাই ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ সরিয়ে রেখে কাজের জন্য পৃথক একটি নম্বর ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলুন। অফিস টাইম শেষে ইচ্ছে হলেই সেই অ্যাকাউন্টটি মিউট করেও রাখতে পারেন। শাওমি, ভিভো, অনার, ওপ্পোর মতো ফোনে ডুয়াল অ্যাপ অপশন থাকে। সেখান থেকেও আরও সহজে জোড়া হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খুলে নেওয়া সম্ভব।
৩। গ্রুপ ভয়েস কল
হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপ ভয়েস কল আপনার কাজ আরও সহজতর করে দেবে। এতে করে একসঙ্গে সকলের সঙ্গে যেমন কথা বলা সম্ভব, ঠিক তেমনই কর্মীরাও অন্যদের কাজ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে পারবেন। তবে শুধু ভয়েসই নয়, ভিডিও কল করেও আপনি কর্মীদের কাজ বুঝিয়ে দিতে পারবেন অনায়াসে।
৪। এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন অন রাখুন
কাজের আলোচনা যে গ্রুপে হবে, তাতে এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন অন করে রাখতে হবে। এটি কীভাবে করবেন? প্রথমে মেনুর সেটিংসে যান। সেখান থেকেই সিকিউরিটিতে ক্লিক করে শো সিকিউরিটি নোটিফিকেশন অপশনটি অন করে নিতে হবে। এতে করে সমস্ত মেসেজ সুরক্ষিত থাকবে। কোনও থার্ড পার্টি অ্যাপ মেসেজ কিংবা কল আপনার কাজে প্রভাব ফেলতে পারবে না।
৫। হোয়াটসঅ্যাপ ওয়েব ব্যবহার করুন
ডেস্কটপ বা ল্যাপটপে হোয়াটসঅ্যাপ অন করে নিলে মেসেজ করতে কিংবা পড়তে আরও সুবিধা হবে। এতে করে আপনাদের কাজের মধ্যে বারবার স্মার্টফোনে ঢুকে মেসেজও দেখতে হবে না। কীভাবে আপনি হোয়াটসঅ্যাপ ওয়েবের মাধ্যমে ল্যাপটপে হোয়াটসঅ্যাপ খুলবেন? ল্যাপটপ কিংবা ডেস্কটপে https://web.whatsapp.com লিখুন। সেখানেই পাবেন whatsapp ওয়েব অপশনটি। এবার ফোন হতে হোয়াটসঅ্যাপ খুলে উপরে ডানদিকের মেনুতে ক্লিক করুন। সেখানেই WhatsApp Web পাবেন। সেটিতে ক্লিক করে ডেস্কটপে ভেসে ওঠা QR কোডটি স্ক্যান করলেই তখন সেখানে খুলে যাবে হোয়াটসঅ্যাপ।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক উপরের নিয়মে ধুয়ে ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।