দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সারা বিশ্বে করোনা পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ হয়েছে যে, মুখোশ ছাড়া বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না। তবে মুখোশ পরার কারণে প্রযুক্তিগুলো মানুষের চেহারা ধরতে পারছে না। তবে এবার মুখোশ পরা ব্যক্তিকেও চেনাবে প্রযুক্তি!
ওয়াচক্যাম ম্যাস সার্ভিলেন্স সিস্টেম এই সংযোজন করেছে মুখোশ উন্মোচন করার এক নতুন প্রযুক্তি। কোয়ারেন্টাইন বা আইসলেশনে থাকা ব্যক্তিরা মুখোশ পরে ঘোরাফেরা করলে সার্ভিলেন্স ক্যামেরায় তাদেরকে সনাক্ত করা রীতিমতো অসম্ভব হয়ে পড়েছিলো। অথচ পরিসংখানে দেখা গেছে যে, যেসব দেশে শুরু থেকেই মাস্ক ব্যবহারের প্রচলন ছিল, সেইসব দেশে সংক্রমণের হার তুলনামুলক অনেকটা কম। এই সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সিগমাইন্ড তাদের ওয়াচক্যাম ম্যাস সার্ভিলেন্স সিস্টেম এ সংযোজন করেছে মুখোশ উন্মোচন করার এক নতুন প্রযুক্তি।
এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সিসিটিভি ক্যামেরা হতে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যেগুলো কাজ করতে পারে, সেগুলো হলো: কারো মুখে মুখোশ রয়েছে কিনা শনাক্ত করে সে অনুযায়ী সতর্ক করতে পারবে। মুখোশ থাকলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তার চেহারা উন্মোচন করার চেষ্টাও করবে। ডাটাবেজ হতে দ্রুত পরিচয় খুঁজে বের করবে। কোরেন্টাইন কিংবা আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তিরা মুখোশ পরে ঘোরাফেরা করলেও ট্রেস করতে পারবে এই প্রযুক্তি। ভিডিও ফুটেজ হতে কন্টাক্ট ট্রেসিং করে তালিকা দিতে পারবে। জনসমাগম হয় এমন স্থানে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করণে সয়ংক্রীয় নজরদারিও করতে পারবে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে এই মুহূর্তে দরকার সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতভাবে বজায় রাখা ও সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা। দেশের এতো বিপুল সংখ্যক মানুষকে নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার ব্যক্তিদের পক্ষে দীর্ঘ সময় রাস্তায় নেমে নজরদারি করাও সম্ভব নয়। সবাই মুখোশ পরছে কিনা সেটা নিশ্চিত করার জন্যই জনবল নিয়োগ করাও অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এক্ষেত্রে অটোমেশনই একমাত্র ভরসা। এই বিষয়ে সিগমাইন্ড এর চেয়ারম্যান আবু আনাস শুভম বলেছেন, মুখোশ পরিহিত ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তি নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছিলাম গত বছর হতে। সেটা যে এতো তাড়াতাড়ি এবং এভাবে প্রয়োজন হয়ে পড়বে তা আগে ভাবিনি। বর্তমানে আমাদের প্রযুক্তিটি কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ৮৭.৩ শতাংশ একুরেসিতে মুখোশ পরিহিত ও ৯৯.৪ শতাংশ একুরেসিতে মুখোশ ছাড়া ব্যক্তিকে সনাক্ত করতে সক্ষম। এছাড়াও সফটওয়ারটি ব্যক্তির বয়স, লিঙ্গ, পরিধেয় পোশাকের রং ইত্যাদি তথ্য বের করে খুব সহজেই তাকে খুঁজে পেতে সহায়তা করবে। টিক একই ভাবে গাড়ির রং, নম্বর প্লেট ইত্যাদি সয়ংক্রিয়ভাবে সনাক্ত পারে যা ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণে অনেক সময় বাচায়।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।